মালদা, 6 অগস্ট: অস্বস্তির ভরা মরশুমেই রাজ্যে ঘোষণা হতে পারে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Malda New Bridge)। ইডি, সিবিআইয়ের কাঁটা সরিয়ে কীভাবে সেই নির্বাচনে মানুষের কাছে যাওয়া যায়, তার দিশা খুঁজতে ব্যস্ত তৃণমূলের নীচু থেকে উঁচুতলার নেতৃত্ব । তবে এই বাজারে ইংরেজবাজারে রাজ্যের শাসকদলের কাছে স্বস্তি হতে পারে কালিন্দ্রী নদীর উপর নির্মীয়মান ব্রিজ । বেশ কয়েকটি গ্রামের দীর্ঘদিনের দাবি সেই নির্বাচনের আগেই পূরণ হতে চলেছে । পুজোর পরেই ওই ব্রিজের উদ্বোধন হয়ে যেতে পারে । এই ব্রিজই এখন ভরসা নঘরিয়া এলাকার জেলা পরিষদ সদস্যের ।
ইংরেজবাজার ব্লকের ফুলবাড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নঘরিয়া গ্রাম একটি ব-দ্বীপের মতো । এর দু'দিক দিয়ে বইছে কালিন্দ্রী । গ্রামের জনসংখ্যা 20 হাজারেরও বেশি । ভোটার রয়েছেন 15 হাজারের বেশি । বর্ধিষ্ণু এই গ্রামে একসময় সভা করে গিয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মতো ব্যক্তিত্ব । তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে এই গ্রামের অনেক মানুষ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নিয়েছিলেন । কিছুদিন আগে পর্যন্ত এই গ্রামে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ছিল নৌকা । ভরা বর্ষায় নদী পেরোতে সমস্যায় পড়ত স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা । এসব কারণে দীর্ঘদিন ধরেই কালিন্দ্রীর উপর ব্রিজের দাবি জানিয়ে আসছিলেন এলাকার মানুষজন । পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রীর মালদা সফরের সময় মানুষের এই দাবি তাঁকে জানান তৎকালীন বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র । তখনই এনিয়ে কিছু না বললেও পরবর্তীতে মুখ্যমন্ত্রী এই ব্রিজ নির্মাণের জন্য প্রায় 10 কোটি টাকা বরাদ্দ করেন । সেই ব্রিজ এখন প্রায় তৈরি । এই মুহূর্তে চলছে অ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণের কাজ ।
আরও পড়ুন: বঙ্গে ঘাঁটি গাড়তে কোমর বাঁধছে আম আদমি পার্টি, লক্ষ্য পঞ্চায়েত নির্বাচন
ব্রিজ তৈরি হলে এলাকার মানুষের সুবিধা হলেও বাড়তে পারে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্য । বললেন ঘাটোয়াল আকবর সবজি । তিনি বলেন, "ব্রিজ চালু হলে মানুষের অনেক সুবিধে হবে । নৌকার জন্য কাউকে অপেক্ষা করতে হবে না । নদীর ওপারে দু'টো গ্রাম আছে । এপারে বেশ কয়েকটি গ্রাম । প্রতিদিন অন্তত চার হাজার মানুষ নদী পারাপার করেন । তবে ব্রিজ হলে রাতে আমরা থাকব না । পুলিশও থাকবে না । ফলে এখানে সমাজবিরোধীদের আনাগোনা বাড়তে পারে ।"
এলাকার জেলা পরিষদ সদস্য স্বপন মিশ্রের বক্তব্য, "2016 সালের নির্বাচনে সাবিত্রী মিত্র ও কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী হেরে গিয়েছিলেন । সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী এখানে এসেছিলেন । বৈঠকে সাবিত্রী মিত্র নঘরিয়া ব্রিজের প্রস্তাব রাখেন । সেইসময় মুখ্যমন্ত্রী রাগারাগি করলেও পরে তিনি এই ব্রিজের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে প্রায় 10 কোটি টাকা বরাদ্দ করেন । 2018 সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর ব্রিজের শিলান্যাস হয় । ধীর গতিতে চললেও ব্রিজের কাজ শেষ । এখন অ্যাপ্রোচ রোডের কাজ চলছে । মানুষ ব্রিজের উপর দিয়েই যাতায়াত করছে । আশা করছি, পুজোর পরেই এই ব্রিজের উদ্বোধন হয়ে যাবে । জেলা পরিষদ আসনের প্রার্থী হয়ে আমি ওই এলাকায় গিয়ে কথা দিয়েছিলাম, কালিন্দ্রীর উপর ব্রিজ না করতে পারলে আর ভোট চাইতে আসব না । শেষ পর্যন্ত মানুষকে দেওয়া কথা রাখতে পেরেছি ।"