মালদা, 4 ডিসেম্বর : শেষ পর্যন্ত সদ্যোজাত মেয়েকে নিয়ে ঘরে ফিরলেন পূজা মারডি (Puja Mardi returns home)। সংবাদমাধ্যমে তাঁর খবর প্রচারিত হতেই শনিবার নার্সিংহোমে এসে লিখিত মুচলেকা দিয়ে তাঁকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যান তাঁর স্বামীর দিদিমা। মূলত পুলিশের উদ্যোগে, মেয়ে নিয়ে ঘরে ফিরে গিয়েছেন পূজা। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। মেয়ের জন্ম হওয়ায় পূজাকে নার্সিংহোমে ফেলে বাড়ি চলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ৷
শুক্রবার পূজা মার্ডির ঘটনা সংবাদমাধ্যমের সামনে উঠে আসে। দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটের মঙ্গলপুর এলাকার বাসিন্দা 21 বছরের ওই যুবতীর স্বামী সুরজ বেসরা পেশায় শ্রমিক। পূজা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর প্রেম করার পর তাঁরা বিয়ে করেন। গত 12 নভেম্বর তাঁর প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। বালুরঘাট হাসপাতাল থেকে তাঁর স্বামী তাঁকে মালদা শহরের এক নার্সিংহোমে নিয়ে এসে ভর্তি করেন। সেদিনই পূজা একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। এরপর 3-4 দিন তাঁর জ্ঞান ছিল না তাঁর। জ্ঞান ফেরার পর তিনি স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু, স্বামী তাঁকে জানিয়ে দেন, কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় তিনি মা ও মেয়েকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাবেন না।
আরও পড়ুন : Girl's murder in Deganga : যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকার, দেগঙ্গায় খুন যুবতী
এরপর থেকে পূজাকে আর ওই নার্সিংহোমে দেখতে আসেননি তাঁর স্বামী ৷ মোবাইল ফোনও সুইচ অফ করে দেন সুরজ। পরে পূজা জানতে পারেন,তাঁকে ফেলেই তাঁর স্বামী ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে চলে গিয়েছেন। এদিকে এই পরিস্থিতিতে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ 22 দিন ধরে পূজা ও তাঁর সদ্যোজাত কন্যাকে নিজেদের কাছে রাখার পর পুলিশের উদ্যোগে সরকারি হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রচারিত হতেই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। যোগাযোগ করা হয় পূজার শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে।
শেষ পর্যন্ত শুক্রবার সন্ধেয় পূজার স্বামীর দিদিমা ও ওই এলাকার এক পঞ্চায়েত সদস্য ওই নার্সিংহোমে এসে উপস্থিত হন। ছিলেন পূজার ননদ-সহ আরও কয়েকজন। নার্সিংহোমে আসে পুলিশও। পুলিশকর্তাদের কাছে সব কথা খুলে বলেন পূজা। শেষ পর্যন্ত চাপে পড়ে পূজাকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চান তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ৷ শনিবার লিখিত মুচলেকা দিয়ে তাঁরা পূজা ও তাঁর মেয়েকে নিজেদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান।