মালদা, 8 নভেম্বর : বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের প্রতিবাদ করায় আগুন লাগিয়ে যুবতিকে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে ৷ মালদার বামনগোলা থানার হরিপুর গ্রামের ঘটনা ৷ মৃতের নাম মাম্পি দাস । অগ্নিদগ্ধ হয়ে স্বামীও বর্তমানে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।
মাম্পির বাবার বাড়ি হবিবপুর থানার বুলবুলচণ্ডী এলাকার পার্শ্ববর্তী সোনাডাঙা গ্রামে ৷ আড়াই বছর আগে হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা নবীন দাসের ছেলে বিভাস দাসের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দেন হীরেন সাহা । বিভাস প্যান্ডেলের কাজ করেন ৷ তাঁদের এক সন্তান রয়েছে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই বিভাসের সঙ্গে এলাকার এক গৃহবধূর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল ৷ সেই সম্পর্কের কথা গোপন করেই মাম্পির সঙ্গে বিভাসের বিয়ে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু বিয়ের কয়েকদিন পর স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পারেন মাম্পি ৷ তারপর থেকেই মাঝেমধ্যে এনিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা হত ৷ গতকাল সেই নিয়েই দুইজনের মধ্যে বচসা হয় ৷ এরপরই গভীর রাতে অগ্নিদগ্ধ হন মাম্পি ৷ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা তাঁকে তড়িঘড়ি স্থানীয় বামনগোলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় ৷ সেখান থেকে তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৷ আজ সকালে মাম্পির মৃত্যু হয় ৷
মাম্পির মাসি শেফালি সাহা বলেন, “আজ সকালে বিভাসের বাড়ির লোকজন ফোন করে জানায়,মাম্পি অগ্নিদগ্ধ হয়েছে ৷ এই খবর পেয়ে আমি সঙ্গে সঙ্গে বিভাসদের বাড়িতে যাই ৷ তারপরই জানতে পারি মাম্পিকে মালদা মেডিকেলে ভরতি করা হয়েছে ৷ কিছুক্ষণ পরই শুনি, সে মারা গিয়েছে ৷ আমার ধারণা, জামাই নিজেই মাম্পির গায়ে আগুন লাগিয়ে ওকে খুন করেছে ৷” তাঁর অভিযোগ, বিভাসের সঙ্গে এলাকার এক গৃহবধূর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে ৷ এই নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ধামেলা লেগেই থাকত ৷
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিভাস ৷ তাঁর বক্তব্য, "গতরাতে আমাদের মধ্যে তেমন কিছুই হয়নি ৷ রাতে আমায় খাওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করার পর মাম্পি ছেলেকে নিয়ে নিচে চলে যায় ৷ খানিক পর আমিও নিচে যাই ৷ তারপর ছেলেকে মশা কামড়াচ্ছে দেখে তাকে নিয়ে বাড়ির দোতলায় চলে আসি ৷ এর কিছুক্ষণ পরই মাম্পি গায়ে আগুন দেয় ৷ আমি প্রথমে চেষ্টা করেও আগুন নেভাতে পারিনি ৷ তারপর দাদা, বাবা-মা এসে ওর গায়ের আগুন নেভায় ৷”
যদিও এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বামনগোলা থানার OC অভিষেক তালুকদার ৷ তবে পুলিশের তরফে আপাতত একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷ পাশাপশি মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে ।