মালদা, 27 জুলাই : সর্বভারতীয় চিকিৎসা প্রবেশিকা পরীক্ষায় রাজ্যের নাম উজ্জ্বল করলেন মালদার মেয়ে । চলতি বছরের "দ্য ইনস্টিউট অফ ন্যাশনাল ইমপর্ট্যান্স কমবাইন্ড এনট্রান্স টেস্ট" বা "আইএনআই সিইটি" (The Institute of National Importance Combined Entrance Test, INI CET) মেডিক্যাল প্রবেশিকা পরীক্ষায় গোটা দেশের মধ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করেছেন মালদার ধৌলি ঝা ৷ গতকাল রাতে এই পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে । ধৌলির এই সাফল্যে গর্বিত জেলাবাসী ৷
এই সাফল্য নিয়ে ধৌলি ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে বলেন, "গতকাল "আইএনআই সিইটি" এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে । গোটা দেশের প্রায় 40 হাজার এমবিবিএস (MBBS) উত্তীর্ণ চিকিৎসক এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ।" তাঁদের মধ্যে প্রায় 500 জন উচ্চশিক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন । এই তালিকায় সপ্তম স্থানে রয়েছেন তিনি ।
দেশের প্রথম সারির চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্নাতকোত্তরস্তরে চিকিৎসাবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনার জন্য এই প্রবেশিকা পরীক্ষা হয় ৷ পরীক্ষাটি প্রধানত পরিচালনা করে দিল্লির এইমস (AIIMS, Delhi) ৷ এর মাধ্যমে চণ্ডীগড়ের পিজিআই (PGI), পণ্ডিচেরির জেআইপিএমইআর (JIPMER) এবং বেঙ্গালুরুর এনআইএমএইচএএনএস (NIMHANS)-এর মতো কোন্দ্রীয় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য নির্বাচন করা হয় ।
আরও পড়ুন : পরিকাঠামোর কাজ সম্পন্ন হলেও চালু হয়নি হিঙ্গলগঞ্জ আইটিআই কলেজ
উচ্চশিক্ষার জন্য পরীক্ষা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (NRSMC&H) থেকে এমবিবিএস (MBBS) পাশ করেছেন ধৌলি । সর্বভারতীয় প্রবেশিকা পরীক্ষার এই ফলে স্বভাবত উচ্ছ্বসিত তিনি । ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে তাঁর বার্তা, "আমি সবাইকে বলতে চাই, কেউ যেন নিজের উপর থেকে বিশ্বাস না হারিয়ে ফেলে । এই বিশ্বাস থাকলে যে কোনও কাজে সাফল্য পাওয়া সম্ভব ।" দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়াটা সহজ ছিল না ৷ তাঁর নিজের পরিবারে করোনা হয়েছে, প্রতিবেশী, আত্মীয়-পরিজনদের মধ্য়েও অনেকে করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন ৷ তাই মাঝে মাঝে তাঁর কাছ থেকে পরামর্শ নিতে ফোন করতেন অনেকে ৷ তার মধ্যেও ধৌলি তাঁর লক্ষ্যে স্থির থেকে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন ।
উচ্চশিক্ষা শেষে নিজের জেলা মালদাতে এসে চিকিৎসা করতে চান তিনি । একই সঙ্গে জেলার মানুষকে উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া তাঁর লক্ষ্য বলে জানালেন উজ্জ্বল ছাত্রী । ধৌলির বাবা চঞ্চলকুমার ঝা মালদার নামী স্কুল, অক্রুরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউশনের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক । মা পুষ্পিতা ঝা গৃহবধূ । তাঁদের দুই মেয়ে ধৌলি ও ছোট মেয়ে দ্যুতি, দু'জনেই চিকিৎসাবিজ্ঞানের ছাত্রী । কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে প্রথম বর্ষে পাঠরতা ।
2012-র মাধ্যমিক পরীক্ষায় 91 শতাংশ নম্বর পেয়ে ধৌলি জেলায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন । 2014-য় 90 শতাংশ নম্বর পেয়ে উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন তিনি । মেডিক্যালের জয়েন্টে 219তম স্থান অধিকার করেন । তাঁর এই সাফল্য জেলার মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করল ।