ETV Bharat / state

"মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু দরদি হিসাবে পরিচিত, বাস্তবে কিন্তু তা নয়" - strike

মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে গতকাল মালদা শহরের মিরচকে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করে বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম, আওয়াজ ও বাংলা সাংস্কৃতিক মঞ্চ। মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে আন্দোলনে নামতে চলেছে এই সংগঠনগুলি।

press meet
author img

By

Published : Apr 2, 2019, 10:01 AM IST

Updated : Apr 2, 2019, 10:31 AM IST

মালদা, 2 এপ্রিল : "মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু দরদি হিসাবে পরিচিত। তিনি নাকি সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। এটাই মিডিয়াতে প্রচার করা হচ্ছে। বাস্তবে কিন্তু তা নয়।" ভোটের মুখে মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে এই মন্তব্য করলেন আওয়াজ সংগঠনের রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক মহম্মদ ইসমাইল। কয়েকদিন আগে অনশনরত SSC চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আশ্বাসে আপাতত অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু এই ঘটনা মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের মনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, একই দাবিতে শুরু হওয়া মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চ থেকে জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ, শুধু জোর করে মঞ্চ থেকে তুলে দেওয়াই নয়, অনশনকারী চাকরিপ্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মারধর করা হয়েছে। প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামতে চলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। গতকাল সাংবাদিক বৈঠক করে এসব কথা জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে গতকাল মালদা শহরের মিরচকে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করে বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম, আওয়াজ, বাংলা সাংস্কৃতিক মঞ্চ, রেইজ় ইয়োর ভয়েজসহ বেশ কয়েকটি গণসংগঠন। সেখানে আওয়াজের রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক মহম্মদ ইসমাইল বলেন, "এই রাজ্যে SSC সহ অন্য যে কয়েকটি নিয়োগ ক্ষেত্র রয়েছে, সেখানে দুর্নীতির বাইরেও কিছু নিয়োগ হচ্ছে। কিন্তু কোথাও নিয়মিত নিয়োগ হচ্ছে না। গত 7 বছরে মাত্র একটি ক্ষেত্রে এখানে নিয়োগ হয়েছে। অথচ এখানেই কিছু দুর্নীতি করে সরকার কিছু ছেলেমেয়েকে বঞ্চিত করেছে। বঞ্চিত ছেলেমেয়েরা ন্যায় বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে এবং তারা অবরোধ, অনশন প্রভৃতি কর্মসূচি নিয়েছে। SSC-র ছেলেমেয়েরা 29 দিন অনশনের পর সরকারি হস্তক্ষেপে অনশন তুলতে বাধ্য হয়েছে। একইভাবে মাদ্রাসার ছেলেমেয়েরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অবমাননার প্রতিবাদে যখন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে, 3 দিনের মাথায় সরকার পুলিশ ও দুষ্কৃতীদের সাহায্যে রাতের অন্ধকারে বেকার ও শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।" ইসমাইল আরও বলেন, "গোটা ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আইনি পথে নামতে চলছি। এনিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এছাড়াও আমরা গোটা রাজ্য জুড়ে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিলের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করব। আমাদের প্রশ্ন, 29 দিন অনশনের পর মুখ্যমন্ত্রী SSC চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনিই মাদ্রাসা দপ্তরের মন্ত্রী। অথচ মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের দাবিতে অনশন শুরু করার পর তিনি সেখানে যাননি। উলটে তাঁরই দপ্তর থেকে দুষ্কৃতীদের দিয়ে অনশন জোর করে তুলে দেওয়া হল। আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং আশাহত। একজন মুখ্যমন্ত্রীর থেকে আমরা এটা আশা করিনি। তবে ভোটের মুখে রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামছি না। আমরা অরাজনৈতিক সংগঠন। ভোটের মুখে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের এখনই আন্দোলনে নামতে হচ্ছে।"

নিয়োগের দাবিতে গত 27 মার্চ কলকাতার মেয়ো রোডে অনশন শুরু করেছিলেন মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীরা। অভিযোগ, 29 মার্চ ভোর 5 টা 20 নাগাদ তাঁদের লাঠিপেটা করে সেখান থেকে তুলে দেয় পুলিশ আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সেদিন নাকি মার খেয়েছিলেন মালদার মণিরুল ইসলাম, মনোজ চক্রবর্তী, শাকিলা খাতুনরাও। এ ব্যাপারে মনোজ চক্রবর্তী গতকাল বলেন, "২০১৩ সালের নোটিফিকেশনে 2014 সালে মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগের যে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, আমি তার একজন সফল চাকরিপ্রার্থী। 2014 সাল থেকে 2019 সাল পর্যন্ত সেই নিয়োগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে। 2018 সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, এই রাজ্যের 614 টি সরকার পোষিত মাদ্রাসার মধ্যে যে মাদ্রাসাগুলি সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিতে ইচ্ছুক, তারা তা নিতে পারে। মামলা চলাকালীন সরকারি কৌঁসুলি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিতে 2600-র বেশি শূন্যপদ রয়েছে। 2016 সালে যখন আমাদের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়, তখন ইন্টারভিউয়ে 3706 জনকে ডাকা হয়। প্রায় 300 জন ইন্টারভিউয়ে হাজির হননি। 2013 সালে যখন এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল তখন 3183 টি শূন্যপদের কথা বলা হয়েছিল। কমিশনের গেজেটেও বলা হয়েছিল, এই শূন্যপদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় পর্যন্ত ঘোষিত। আইন অনুযায়ী 2016 সালের 5 সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার রেজ়াল্ট প্রকাশ হওয়ায় দিন পর্যন্ত ফাইনাল ভ্যাকান্সি হিসাব করার কথা। কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যান তা না করে 2013 সালে ঘোষিত শূন্যপদই রেখে দিলেন। এটা কমিশনের চূড়ান্ত দুর্নীতি। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট যখন 2600-র বেশি নিয়োগ করার নির্দেশ দিচ্ছে, সেখানে কমিশন বলছে, 2600-র কম নিয়োগ করা হবে। কমিশনের এই দুর্নীতির জন্য রাজ্যের মাদ্রাসাগুলি প্রয়োজনীয় শিক্ষক পেল না। এসবের প্রতিবাদে এবং নিয়োগের দাবিতে আমরা গত বুধবার মেয়ো রোডে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করি। সেদিন রাতে প্রশাসনের কিছু আধিকারিক সেখান থেকে আমাদের উঠে যেতে বললেও আমরা উঠিনি। পরদিন বিকেলে মাদ্রাসা কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল রউফ সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু তিনি আমাদের কোনও প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। পরদিন ভোরে আমাদের অনশন মঞ্চে আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু যারা হামলা চালাল, তাদের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল না। তারা হুমকি দেয়, তাদের কথামতো বাসে না উঠলে বাড়ির লোক লাশ খুঁজে পাবে না। তাদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। আমাদের মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা মাদ্রাসা শিক্ষাকে বাঁচানোর জন্য আজ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছি।"

মালদা, 2 এপ্রিল : "মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু দরদি হিসাবে পরিচিত। তিনি নাকি সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক কিছু করেছেন। এটাই মিডিয়াতে প্রচার করা হচ্ছে। বাস্তবে কিন্তু তা নয়।" ভোটের মুখে মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে এই মন্তব্য করলেন আওয়াজ সংগঠনের রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক মহম্মদ ইসমাইল। কয়েকদিন আগে অনশনরত SSC চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আশ্বাসে আপাতত অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন SSC চাকরিপ্রার্থীরা। কিন্তু এই ঘটনা মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের মনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, একই দাবিতে শুরু হওয়া মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চ থেকে জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ, শুধু জোর করে মঞ্চ থেকে তুলে দেওয়াই নয়, অনশনকারী চাকরিপ্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে মারধর করা হয়েছে। প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামতে চলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা। গতকাল সাংবাদিক বৈঠক করে এসব কথা জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা।

ভিডিয়োয় শুনুন বক্তব্য

মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে গতকাল মালদা শহরের মিরচকে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করে বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম, আওয়াজ, বাংলা সাংস্কৃতিক মঞ্চ, রেইজ় ইয়োর ভয়েজসহ বেশ কয়েকটি গণসংগঠন। সেখানে আওয়াজের রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক মহম্মদ ইসমাইল বলেন, "এই রাজ্যে SSC সহ অন্য যে কয়েকটি নিয়োগ ক্ষেত্র রয়েছে, সেখানে দুর্নীতির বাইরেও কিছু নিয়োগ হচ্ছে। কিন্তু কোথাও নিয়মিত নিয়োগ হচ্ছে না। গত 7 বছরে মাত্র একটি ক্ষেত্রে এখানে নিয়োগ হয়েছে। অথচ এখানেই কিছু দুর্নীতি করে সরকার কিছু ছেলেমেয়েকে বঞ্চিত করেছে। বঞ্চিত ছেলেমেয়েরা ন্যায় বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে এবং তারা অবরোধ, অনশন প্রভৃতি কর্মসূচি নিয়েছে। SSC-র ছেলেমেয়েরা 29 দিন অনশনের পর সরকারি হস্তক্ষেপে অনশন তুলতে বাধ্য হয়েছে। একইভাবে মাদ্রাসার ছেলেমেয়েরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অবমাননার প্রতিবাদে যখন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে, 3 দিনের মাথায় সরকার পুলিশ ও দুষ্কৃতীদের সাহায্যে রাতের অন্ধকারে বেকার ও শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।" ইসমাইল আরও বলেন, "গোটা ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আইনি পথে নামতে চলছি। এনিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এছাড়াও আমরা গোটা রাজ্য জুড়ে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিলের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করব। আমাদের প্রশ্ন, 29 দিন অনশনের পর মুখ্যমন্ত্রী SSC চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনিই মাদ্রাসা দপ্তরের মন্ত্রী। অথচ মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের দাবিতে অনশন শুরু করার পর তিনি সেখানে যাননি। উলটে তাঁরই দপ্তর থেকে দুষ্কৃতীদের দিয়ে অনশন জোর করে তুলে দেওয়া হল। আমরা গভীরভাবে শোকাহত এবং আশাহত। একজন মুখ্যমন্ত্রীর থেকে আমরা এটা আশা করিনি। তবে ভোটের মুখে রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামছি না। আমরা অরাজনৈতিক সংগঠন। ভোটের মুখে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের এখনই আন্দোলনে নামতে হচ্ছে।"

নিয়োগের দাবিতে গত 27 মার্চ কলকাতার মেয়ো রোডে অনশন শুরু করেছিলেন মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীরা। অভিযোগ, 29 মার্চ ভোর 5 টা 20 নাগাদ তাঁদের লাঠিপেটা করে সেখান থেকে তুলে দেয় পুলিশ আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। সেদিন নাকি মার খেয়েছিলেন মালদার মণিরুল ইসলাম, মনোজ চক্রবর্তী, শাকিলা খাতুনরাও। এ ব্যাপারে মনোজ চক্রবর্তী গতকাল বলেন, "২০১৩ সালের নোটিফিকেশনে 2014 সালে মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগের যে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, আমি তার একজন সফল চাকরিপ্রার্থী। 2014 সাল থেকে 2019 সাল পর্যন্ত সেই নিয়োগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে। 2018 সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, এই রাজ্যের 614 টি সরকার পোষিত মাদ্রাসার মধ্যে যে মাদ্রাসাগুলি সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিতে ইচ্ছুক, তারা তা নিতে পারে। মামলা চলাকালীন সরকারি কৌঁসুলি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিতে 2600-র বেশি শূন্যপদ রয়েছে। 2016 সালে যখন আমাদের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়, তখন ইন্টারভিউয়ে 3706 জনকে ডাকা হয়। প্রায় 300 জন ইন্টারভিউয়ে হাজির হননি। 2013 সালে যখন এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল তখন 3183 টি শূন্যপদের কথা বলা হয়েছিল। কমিশনের গেজেটেও বলা হয়েছিল, এই শূন্যপদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় পর্যন্ত ঘোষিত। আইন অনুযায়ী 2016 সালের 5 সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার রেজ়াল্ট প্রকাশ হওয়ায় দিন পর্যন্ত ফাইনাল ভ্যাকান্সি হিসাব করার কথা। কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যান তা না করে 2013 সালে ঘোষিত শূন্যপদই রেখে দিলেন। এটা কমিশনের চূড়ান্ত দুর্নীতি। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট যখন 2600-র বেশি নিয়োগ করার নির্দেশ দিচ্ছে, সেখানে কমিশন বলছে, 2600-র কম নিয়োগ করা হবে। কমিশনের এই দুর্নীতির জন্য রাজ্যের মাদ্রাসাগুলি প্রয়োজনীয় শিক্ষক পেল না। এসবের প্রতিবাদে এবং নিয়োগের দাবিতে আমরা গত বুধবার মেয়ো রোডে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করি। সেদিন রাতে প্রশাসনের কিছু আধিকারিক সেখান থেকে আমাদের উঠে যেতে বললেও আমরা উঠিনি। পরদিন বিকেলে মাদ্রাসা কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল রউফ সেখানে উপস্থিত হন। কিন্তু তিনি আমাদের কোনও প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি। পরদিন ভোরে আমাদের অনশন মঞ্চে আক্রমণ নামিয়ে আনা হয়। কিন্তু যারা হামলা চালাল, তাদের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল না। তারা হুমকি দেয়, তাদের কথামতো বাসে না উঠলে বাড়ির লোক লাশ খুঁজে পাবে না। তাদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল। আমাদের মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা মাদ্রাসা শিক্ষাকে বাঁচানোর জন্য আজ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছি।"

Intro:মালদা, ১ এপ্রিল : "মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু দরদি হিসাবে পরিচিত৷ তিনি নাকি সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক কিছু করেছেন৷ এটাই মিডিয়াতে প্রচার করা হচ্ছে৷ বাস্তবে কিন্তু তা নয়৷" ভোটের মুখে মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের পক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে উঠে এল এই মন্তব্য৷Body:         লোকসভা ভোটে প্রভাব পড়তে পারে৷ সম্ভবত এই কারণেই ২৯ দিন অনশনের পর এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁর আশ্বাসে আপাতত নিজেদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা৷ কিন্তু এই ঘটনা মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের মনে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ কারণ, একই দাবিতে শুরু হওয়া মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের অনশন মঞ্চ থেকে জোর করে তুলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে৷ আরও অভিযোগ, শুধু জোর করে মঞ্চ থেকে তুলে দেওয়াই নয়, অনশনকারী চাকরিপ্রার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যথেচ্ছ পেটানো হয়েছে৷ প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনে নামতে চলেছেন চাকরিপ্রার্থীরা৷ আজ সন্ধেয় সাংবাদিক সম্মেলন করে সেকথা জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীদের প্রতিনিধি সহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা৷
         মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে আজ সন্ধেয় মালদা শহরের মীরচকে একটি সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে বেঙ্গল মাদ্রাসা এডুকেশন ফোরাম, আওয়াজ, বাংলা সাংস্কৃতিক মঞ্চ, রেইজ ইয়োর ভয়েজ সহ বেশ কয়েকটি গণসংগঠন৷ সেখানে আওয়াজের রাজ্য কমিটির সহ সম্পাদক মহম্মদ ইসমাইল বলেন, "এই রাজ্যে এসএসসি ও এমএসসি সহ অন্যান্য যে কয়েকটি নিয়োগ ক্ষেত্র রয়েছে, সেখানে দুর্নীতির বাইরেও কিছু নিয়োগ হচ্ছে৷ কিন্তু কোথাও নিয়মিত নিয়োগ হচ্ছে না৷ গত ৭ বছরে মাত্র একটি ক্ষেত্রে এখানে নিয়োগ হয়েছে৷ অথচ এখানেই কিছু দুর্নীতি করে সরকার কিছু ছেলেমেয়েকে বঞ্চিত করেছে৷ বঞ্চিত ছেলেমেয়েরা ন্যায়বিচারের দাবিতে পথে নেমেছে এবং তারা অবরোধ, অনশন প্রভৃতি কর্মসূচি নিয়েছে৷ এসএসসি'র ছেলেমেয়েরা ২৯ দিন অনশনের পর সরকারি হস্তক্ষেপে অনশন তুলতে বাধ্য হয়েছে৷ একইভাবে মাদ্রাসার ছেলেমেয়েরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অবমাননার প্রতিবাদে যখন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে, ৩ দিনের মাথায় সরকার পুলিশ ও দুষ্কৃতীদের সাহায্যে রাতের অন্ধকারে নমাজরত অবস্থায় বেকার ও শিক্ষিত ছেলেমেয়েদের উপর অত্যাচার চালিয়েছে৷ আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি৷ অত্যাচারিত এই ছেলেমেয়েদের বেশিরভাগই মালদার৷" ইসমাইল সাহেব আরও বলেন, "গোটা ঘটনার প্রতিবাদে আমরা আইনি পথে নামতে চলছি৷ এনিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা চলছে৷ এছাড়াও আমরা গোটা রাজ্য জুড়ে অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিলের মতো কর্মসূচি গ্রহণ করতে চলেছি৷ আমাদের প্রশ্ন, ২৯ দিন অনশনের পর মুখ্যমন্ত্রী এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন৷ তিনিই মাদ্রাসা দপ্তরের মন্ত্রী৷ অথচ মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীরা নিজেদের দাবিতে অনশন শুরু করার পর তিনি সেখানে যাননি৷ উলটে তাঁরই দপ্তর থেকে দুষ্কৃতীদের দিয়ে লাঠিপেটা করে চাকরিপ্রার্থীদের মঞ্চ থেকে জোর করে তুলে দিয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী সংখ্যালঘু দরদি হিসাবে পরিচিত৷ তিনি নাকি সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক কিছু করেছেন৷ এটাই মিডিয়াতে প্রচার করা হচ্ছে৷ বাস্তবে কিন্তু তা নয়৷ একজন সংখ্যালঘু দরদি ও সংখ্যালঘু মন্ত্রী হয়ে তিনি সংখ্যালঘু চাকরিপ্রার্থীদের কোনও আশ্বাস দেননি৷ এর জন্যই আমরা একই সঙ্গে শোকাহত ও আশাহত৷ তবে ভোটের মুখে রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে আমরা আন্দোলনে নামছি না৷ আমরা অরাজনৈতিক সংগঠন৷ ভোটের মুখে এই ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের এখনই আন্দোলনে নামতে হচ্ছে৷"
Conclusion:নিয়োগের দাবিতে গত ২৭ মার্চ কলকাতার মেয়ো রোডে অনশন শুরু করেছিলেন মাদ্রাসা চাকরিপ্রার্থীরা৷ অভিযোগ, ২৯ মার্চ ভোর ৫টা ২০ নাগাদ তাঁদের লাঠিপেটা করে সেখান থেকে তুলে দেয় পুলিশ আশ্রিত দুষ্কৃতীরা৷ সেদিন নাকি মার খেয়েছিলেন মালদার মণিরুল ইসলাম, মনোজ চক্রবর্তী, শাকিলা খাতুনরাও৷ এব্যাপারে মনোজ চক্রবর্তী আজ বলেন, "২০১৩ সালের নোটিফিকেশনে ২০১৪ সালে মাদ্রাসা শিক্ষক নিয়োগের যে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল, আমি তার একজন সফল চাকরিপ্রার্থী৷ ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেই নিয়োগ ক্ষেত্রে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিয়েছে৷ ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, এই রাজ্যের ৬১৪টি সরকার প্রেষিত মাদ্রাসার মধ্যে যে মাদ্রাসাগুলি সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিতে ইচ্ছুক, তারা তা নিতে পারে৷ মামলা চলাকালীন সরকারি কৌসুলি সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিলেন, রাজ্যের মাদ্রাসাগুলিতে ২৬০০'র বেশি শূন্য পদ রয়েছে৷ ২০১৬ সালে যখন আমাদের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়, তখন ইন্টারভিউয়ে ৩৭০৬ জনকে ডাকা হয়৷ প্রায় ৩০০ জন ইন্টারভিউয়ে হাজির হননি৷ ২০১৩ সালে যখন এই নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল তখন ৩১৮৩টি শূন্য পদের কথা বলা হয়েছিল৷ কমিশনের গেজেটেও বলা হয়েছিল, এই শূন্যপদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সময় পর্যন্ত ঘোষিত৷ আইন অনুযায়ী ২০১৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর লিখিত পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হওয়ায় দিন পর্যন্ত ফাইনাল ভ্যাকান্সি হিসাব করার কথা৷ কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যান তা না করে ২০১৩ সালে ঘোষিত শূন্যপদই রেখে দিলেন৷ এটা কমিশনের চূড়ান্ত দুর্নীতি৷ এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট যখন ২৬০০'র বেশি নিয়োগ করার নির্দেশ দিচ্ছে, সেখানে কমিশন বলছে, ২৬০০'র কম নিয়োগ করা হবে৷ কমিশনের এই দুর্নীতির জন্য রাজ্যের মাদ্রাসাগুলি প্রয়োজনীয় শিক্ষক পেল না৷ এসবের প্রতিবাদে এবং নিয়োগের দাবিতে আমরা গত বুধবার মেয়ো রোডে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন শুরু করি৷ সেদিন রাতে প্রশাসনের কিছু আধিকারিক সেখান থেকে আমাদের উঠে যেতে বললেও আমরা উঠিনি৷ পরদিন বিকেলে মাদ্রাসা কমিশনের চেয়ারম্যান আবদুল রউফ সেখানে উপস্থিত হন৷ কিন্তু তিনি আমাদের কোনও প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি৷ পরদিন ভোরে আমাদের অনশন মঞ্চে এলোপাতাড়ি আক্রমণ করা হল৷ কিন্তু যারা হামলা চালাল, তাদের গায়ে পুলিশের পোশাক ছিল না৷ তারা হুমকি দেয়, তাদের কথামতো বাসে না উঠলে বাড়ির লোক লাশ খুঁজে পাবে না৷ তাদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্রও ছিল৷ আমাদের মারতে মারতে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়৷ আমরা মাদ্রাসা শিক্ষাকে বাঁচানোর জন্য আজ আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছি৷"
Last Updated : Apr 2, 2019, 10:31 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.