মালদা, 12 এপ্রিল: হাসপাতাল ভবন রয়েছে । কিন্তু নেই কোনও স্টাফ। নেই স্থায়ী চিকিৎসক । চিকিৎসা করাতে এসে বারবার ঘুরে যেতে হচ্ছে পোষ্যমালিকদের । চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হচ্ছে বহু প্রাণীর । স্থায়ী চিকিৎসকের দাবিতে প্রাণীসম্পদ আধিকারিককে ঘিরে বিক্ষোভ স্থানীয় বাসিন্দাদের (Local residents protesting in Malda demanding permanent veterinarian at the hospital) । স্টাফের অভাবে চিকিৎসা পরিষেবা ঠিক দেওয়া যাচ্ছে না, তা মেনে নিয়েছেন প্রাণীসম্পদ আধিকারিক ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হরিশ্চন্দ্রপুর-2 ব্লকের পশু হাসপাতালে প্রায় বছরখানেক ধরে চিকিৎসক নেই । প্রাণীসম্পদ কর্মী কোনওরকমে পরিষেবা দিচ্ছেন । বর্তমানে সেই কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন প্রাণীসম্পদ আধিকারিক সুজয় তামাং । স্থায়ী চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা পরিষেবা ঠিক মতো দেওয়া যাচ্ছে না তা মেনে নিয়েছেন তিনি । এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে । প্রায় প্রতিদিনই চিকিৎসা না করিয়ে পশুদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হচ্ছে ।
গত এক বছরে চিকিৎসার অভাবে অনেক গরু-ছাগল মারা গিয়েছে বলে দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা । আজ সকাল থেকে অনেকেই কুকুর-গোরু-ছাগল নিয়ে হাসপাতালে আসেন । কিন্তু একই সমস্যা থাকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন উপভোক্তারা । অবিলম্বে চিকিৎসক নিয়োগের দাবিতে প্রাণীসম্পদ আধিকারিকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা ।
আরও পড়ুন : Stray Dog Sterilisation : পথকুকুরদের নির্বীজকরণের উদ্যোগ কেএমসি’র, নাগরিকদের সচেতন করতে কাউন্সিলরদের সেমিনার
স্থানীয় এক বাসিন্দা শেখ রাজিমুদ্দিন বলেন, "আমি ছাগলের চিকিৎসা করাতে এসেছি । কিন্তু এখানে কোনও চিকিৎসক নেই । ওষুধ নেই । যিনি রয়েছেন তিনি বলছেন, কোনও রোগ হয়নি । হাসপাতালের সামনেই ছাগল কষ্টে কাতরাচ্ছে । প্রায় বছর খানেক ধরে এই সমস্যা হচ্ছে । গোরু-ছাগল মারা যাচ্ছে । সরকারিভাবে প্রাণী চিকিৎসার জন্য ঘর করা আছে । কিন্তু কোনও পরিষেবা নেই । আমরা চাই অবিলম্বে প্রাণী চিকিৎসার জন্য একজন ভাল ডাক্তার দেওয়া হোক ।"
একই বক্তব্য আর এক বাসিন্দা মহম্মদ সামিরুদ্দিনের । তিনি বলেন, "আমরা যখনই প্রাণী চিকিৎসার জন্য আসি, তখনই আমাদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয় । কিন্তু কোনও সময়ই ডাক্তার থাকে না । যিনি থাকেন তিনি বলেন, ডাক্তার নেই । কীভাবে চিকিৎসা হবে? সরকারিভাবে প্রাণী হাসপাতাল থাকলেও ডাক্তার নেই । ওষুধ মেলে না । কোনও পরিষেবা নেই । বাধ্য হয়ে আমরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছি । শুধু চকচকে হাসপাতাল থেকে কিছু লাভ নেই । পরিষেবা প্রয়োজন । তার জন্য ভাল চিকিৎসক প্রয়োজন ।"
হরিশ্চন্দ্রপুর 2 ব্লকের বিএলডিও সুজয় তামাং এ বিষয়ে বলেন, "সাধারণ মানুষ পরিষেবা না পেলে বিক্ষোভ দেখাবেই । তাঁদের কোনও দোষ নেই । হাসপাতালে স্টাফ, ডাক্তার না থাকলে পরিষেবা দিতে সমস্যা হবেই । বিএলডিও হিসেবে ইনচার্জে আমি আছি । নিজের অফিস সামলেও সপ্তাহে দু'-তিনদিন ওখানে বসি । সম্প্রতি ট্রান্সফার অর্ডারে বেশিরভাগ স্টাফের বদলি হয়ে যাওয়ায় এই সমস্যা হচ্ছে । এখানে স্টাফ দেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি । এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে হয়তো পশুদের প্রাথমিক চিকিৎসা হবে । কিন্তু হাসপাতালের পরিষেবা পুরোপুরি দেওয়া সম্ভব হয় ।"