মালদা, 13 এপ্রিল : একজনের পরিচিতি নরেন্দ্র মোদির পাকিস্তানের বোন হিসেবে, আরেকজন গোটা দেশে তিন তালাক বিরোধী মুখ হিসেবে পরিচিত। এই মুহূর্তে তাঁরা দুজনেই গেরুয়া শিবিরের অন্যতম প্রধান মুখ। একজন কোওমর মহসিন, যিনি গত ৩০ বছর ধরে নরেন্দ্র মোদির সান্নিধ্যে। দ্বিতীয় জন ইশরাত জাহান, যাঁকে দেশবাসী তিন তালাক বিরোধী মুখ হিসেবে চেনে। প্রচারে বেরোনোর আগে আজ দু'জনেই মুখোমুখি হলেন ETV ভারতের প্রতিনিধির।

পাকিস্তানে জন্ম নেওয়া, বর্তমানে বৈবাহিক সূত্রে ভারতীয় কোওমর মহসিন বলেন, "আমি মোদিজির সঙ্গে ৩০ বছর ধরে পরিচিত। গত ২৪-২৫ বছর ধরে তাঁকে রাখি বাঁধি। তখন তিনি RSS-র কার্যকর্তা ছিলেন। তখন থেকেই তাঁকে কিছু করার চিন্তাভাবনা নিয়ে লড়াই করতে দেখেছি। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হন। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তাঁর এই সমস্ত গুণ এখনও পর্যন্ত অন্য কারোর মধ্যে নেই। আমার ভাইয়ের জন্য আমি গর্বিত। আমি তাঁর মধ্যে হিন্দু-মুসলিমের ভেদাভেদ দেখিনি। হিন্দু কিংবা মুসলিম, যেই ভুল কাজ করেন উনি তার বিরুদ্ধে।" প্রচারে গিয়ে সাধারণ মানুষদের কী বার্তা দেবেন ? কোওমর বলেন, "নরেন্দ্র ভাইয়ের প্রচুর প্রকল্প এই রাজ্যে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। আমি সেসবই সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরব। পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জি সহ অন্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব সেই প্রকল্পগুলি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে দেননি। সাধারণ মানুষ জানেন না, এই প্রকল্পগুলির সুবিধা পেলে তাঁরা কতখানি উপকৃত হবেন। নরেন্দ্র ভাইয়ের কাজগুলোকে আমি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।"

এদিকে দেশে তিন তালাক বিরোধী আন্দোলনের প্রধান মুখ ইশরাত জাহান বলেন, "আমি এখানকার প্রতিটি মহিলার কাছে যেতে চাই। মহিলাদের জানাতে চাই কোনটা ভালো আর কোনটা মন্দ। বিশেষত মুসলিম মহিলাদের কাছে গিয়ে আমি বলতে চাই, আমাদের সমাজে এখনও ভুল পদ্ধতিতে বিবাহিতা মহিলাদের তালাক দেওয়া হচ্ছে। মুসলিম মহিলারা যেন কিছুতেই তা মেনে না নেন। তাঁরা যেন এর প্রতিবাদ করেন। মোদিজি সাধারণ মানুষের জন্য প্রচুর প্রকল্প চালু করেছেন। সেই সব প্রকল্পের কথা আমি মহিলাদের জানাতে চাই। এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা। কিন্তু মহিলাদের দুঃখ, কষ্ট তিনি দেখতে পান না। এই রাজ্যে বাচ্চা থেকে শুরু করে ৭০-৮০ বছর বয়সি মায়েরা ধর্ষিত হন। ধর্ষণের মতো ঘটনাকেও তিনি মামুলি বিষয় বলে মন্তব্য করেন। মহিলাদের পাশে থাকেন না এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নজর শুধু মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কের দিকে। কারণ তিনি জানেন, সংখ্যালঘুদের ভোট না পেলে তিনি ক্ষমতায় আসবেন না। আমি মানুষের কাছে গিয়ে বলব, সব দিক বিবেচনা করে যাকে ইচ্ছা তাকেই যেন তাঁরা ভোট দেন।"
ইশরাতকে প্রশ্ন করা হয়, যে শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরির পক্ষে তিনি আজ প্রচার করতে এসেছেন, তিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন। এনিয়ে তিনি কী বলবেন ? উত্তরে ইশরাত বলেন, "এটা আমার জানা নেই। তবে তৃণমূলে থাকাকালীন নিশ্চয়ই ওই দলের খারাপ কিছু দেখেছিলেন। নিশ্চয়ই সেই কারণে BJP-তে যোগ দিয়েছেন।"