ETV Bharat / state

দিনে দুটো ট্রেন, কোভিড-দুঃস্বপ্নে দিশাহারা মালদা স্টেশন চত্বরের ব্যবসায়ীরা

5-6 দিনে একটি ভাড়া পাচ্ছেন ট্যাক্সিচালকরা । 12টি ভাতের হোটেলের একটি মাত্র খোলা ৷ অনেকেই অন্য কাজে ভাগ্য খুঁজছেন ৷

Malda
Malda
author img

By

Published : Sep 20, 2020, 7:48 PM IST

মালদা, 8 সেপ্টেম্বর : প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস । দীর্ঘ সময় ! সমস্যা সঙ্গে করেই প্রথমদিকে টেনেটুনে চলছিল সংসার । কিন্তু সময় দীর্ঘায়িত হয়েছে যত, তত তীব্র হয়েছে অভাব । যদিও মানুষগুলো কারো কাছে আর্থিক সাহায্য চাইছেন না । চাইছেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হোক । তাহলেই "বেঁচে" উঠবেন তাঁরা ! মালদা টাউন স্টেশনকে কেন্দ্র করে জীবীকা যাঁদের, এ হল তাঁদের কথা ৷

শুধু উত্তরবঙ্গই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সংযোগ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ মালদা টাউন স্টেশন । কোভিড পূর্ব যুগে দিনে 84 জোড়া ট্রেন এই স্টেশন ছুঁয়ে যাতায়াত করত । কেবল মালদা জেলাই নয়, এই স্টেশন দরকারি পাশের দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদের একাংশ, এমনকী বাংলাদেশের মানুষের কাছেও । এই স্টেশন আছে, নাকি "ছিল" বলেই সংসার চলত কত অসংখ্য মানুষের ! কারা তাঁরা ?

ট্যাক্সিচালক, নানা ধরনের শ্রমিক থেকে শুরু করে অসংখ্য অস্থায়ী দোকান মালিক । যেমন, ভাতের হোটেল, ফল, মুড়ি, চা, পান-সিগারেটের দোকান । কোভিডের আগে ভালো ছিলেন এই ব্যবসায়ীরা । কারণ, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের যাতায়াত জংশন স্টেশনে । কিন্তু গত মার্চ থেকে বদলে গিয়েছে সব ! বন্ধ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল । সম্প্রতি দু'টি স্পেশাল ট্রেন চলছে বটে, কিন্তু তা কি আর 84 জোড়া ট্রেনের বিকল্প হতে পারে ! অবস্থা এতটাই খারাপ যে, স্টেশন চত্বরের বহু হোটেল কর্মী অন্য কাজের খোঁজে এলাকা ছেড়েছেন । যাঁরা এখনও পুরোনো প্রতিষ্ঠানে পড়ে রয়েছেন, তাঁরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার দিকে তাকিয়ে !

ট্রেন চলছে না, সংকটে মালদা টাউন স্টেশন চত্বরের ব্যবসায়ীরা ৷

মালদা টাউন স্টেশন চত্বরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে প্রায় 60 টি গাড়ি ভাড়া খাটে । এর সঙ্গে বাইরের বেশ কিছু গাড়িও স্টেশনে যাতায়াত করে । সকলেরই ভরসা স্টেশন ৷ যাত্রীরাই তো গ্রাহকদেবতা ! লকডাউনে এদের বিপদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি । কারণ, শহরের অন্য কোথাও এদের গাড়ি চালাতে দেওয়া হয় না । তেমনই একজন মহানন্দা পল্লির বাসিন্দা সন্তোষ ভগৎ মালি ।

সন্তোষ বলেন, "সাড়ে পাঁচ মাস ধরে কাজ বন্ধ । ফোন মারফৎ যেটুকু ভাড়া পাই ! আগে যত ভাড়া পেতাম, এখন তার এক চতুর্থাংশও হচ্ছে না । মালিক অবশ্য এখনও বেতন দিচ্ছেন । সব মালিকই কম-বেশি বেতন দিচ্ছেন । তাঁদেরই তো উপার্জন নেই ! সরকারি সহায়তা পাইনি । "

ট্রেন চললেই হবে সমস্যার সমাধান ৷ বলছেন সন্তোষ ভগৎ মালি ৷ তাঁর কথায়, "ট্রেন চলাচলের উপরেই নির্ভরশীল আমরা । যত তাড়াতাড়ি ট্রেন চালু হবে, ততই মঙ্গল হবে আমাদের ।"

শহরের সুকান্ত পল্লির বাসিন্দা উদয়শংকর দাস । নিজের গাড়ি, নিজেই চালান । বলেন, "এখন 5-6 দিন পর পর একটা ভাড়া পাচ্ছি । এই স্ট্যান্ডে চেইন সিস্টেমে গাড়িওলাদের ভাড়া দেওয়া হয় । এখন একটা ভাড়া পেতে অনেক দিন কেটে যাচ্ছে ৷ এদিকে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছি । গত পাঁচ মাস ব্যাঙ্কের কিস্তি মেটাতে পারিনি । সরকারের কাছে একটাই আর্জি, আরও কিছু ট্রেন চালু করা হোক ।"

স্টেশন চত্বরে পানের দোকান গয়েশপুরের সন্তু কর্মকারের । তিনি বলেন, "দুটো ট্রেন চালু হয়েছে বটে, তাতে কিছুই হয় না ! টেনে হিঁচড়ে সংসার চলছে । ট্রেন না চললে আমাদের কিছু হবে না ! এখন দিনে দেড় থেকে দুশো টাকা উপার্জন হয় । এভাবে চলা যায় না ।"

তরকা-রুটির দোকান কুলিপাড়ার রাজা মাহাতোর । তিনি বলেন, "এখন স্থানীয় খদ্দেররাই ভরসা । স্টেশনে কর্মরত GRP, RPF আর সাধারণ রেলকর্মীরাই কাস্টোমার ! 20 বছর ধরে ব্যবসা করছি । এমন অবস্থা দেখিনি ! ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হলে সমস্যা মিটে যাবে ।"

কাস্টোমারের এতটাই অভাব যে এই মুহূর্তে মালদা টাউন স্টেশন চত্বরে একটি মাত্র ভাতের হোটেল খোলা । অথচ স্টেশন চত্বরের 50টি দোকানের মধ্যে ভাতের হোটেল 12টি । স্বাভাবিক সময়ে প্রত্যেক হোটেলে দিনে প্রায় তিন হাজার টাকার ব্যবসা হয় । এখন?

দিনে 400 টাকার বেশি ব্যবসা হচ্ছে না, বলছেন স্টেশন চত্বরের চালু থাকা একমাত্র হোটেল মালিক মহানন্দা পল্লির বাসিন্দা শ্রীনিবাস দাস ৷

শ্রীনিবাস বলেন, "ট্রেন না থাকায় মানুষ আসে না । যে দু'টো ট্রেন চলছে, এখানকার মানুষ তার টিকিটও পায় না । আমাদের ব্যবসা মূলত শ্রমিকদের উপর নির্ভর করে । এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর শ্রমিক বাইরে কাজ করতে যান ৷ এখন দিয়েই ফেরেন । তাঁরা এখন বাইরে যেতে পারছে না । ফলে বেশিরভাগ হোটেলই বন্ধ হয়ে গিয়েছে । হোটেল কর্মীরা কাজ খুঁজতে বাইরে চলে যাচ্ছে । একদিকে যখন জিনিসের দাম বাড়ছে, তখন আমাদের উপার্জন প্রায় বন্ধ ! "

শ্রীনিবাস দাসেরও দাবি, "অন্তত কয়েকটি ট্রেন চালু হোক । তাহলেই আমাদের সমস্যা কিছুটা মিটবে । "

কয়েকদিন আগেই পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের ম্যানেজার যতীন্দ্র কুমার জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সম্মতি পেলে আরও স্পেশাল ট্রেন চালাতে প্রস্তুত রেল । তবে, কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী 30 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা যাবে না ।

পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের পক্ষে আরও জানানো হয়েছে, মালদা থেকে কিছু স্পেশাল ট্রেন চালাতে তাঁদের দিক থেকে সমস্যা নেই । শুধু তাই নয়, মালদা-শিয়ালদা-মালদা গৌড় এক্সপ্রেস এবং মালদা-জামালপুর-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস চালু করার জন্য তাঁদের কাছে প্রচুর মানুষের আবেদনও এসেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ । কিন্তু, রাজ্যের অনুমোদন ছাড়া ট্রেন চালু করা সম্ভব নয় । এই বিষয়ে রাজ্য সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয় কি না এখন সেটাই দেখার ।

মালদা, 8 সেপ্টেম্বর : প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস । দীর্ঘ সময় ! সমস্যা সঙ্গে করেই প্রথমদিকে টেনেটুনে চলছিল সংসার । কিন্তু সময় দীর্ঘায়িত হয়েছে যত, তত তীব্র হয়েছে অভাব । যদিও মানুষগুলো কারো কাছে আর্থিক সাহায্য চাইছেন না । চাইছেন, ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হোক । তাহলেই "বেঁচে" উঠবেন তাঁরা ! মালদা টাউন স্টেশনকে কেন্দ্র করে জীবীকা যাঁদের, এ হল তাঁদের কথা ৷

শুধু উত্তরবঙ্গই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে সংযোগ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ মালদা টাউন স্টেশন । কোভিড পূর্ব যুগে দিনে 84 জোড়া ট্রেন এই স্টেশন ছুঁয়ে যাতায়াত করত । কেবল মালদা জেলাই নয়, এই স্টেশন দরকারি পাশের দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদের একাংশ, এমনকী বাংলাদেশের মানুষের কাছেও । এই স্টেশন আছে, নাকি "ছিল" বলেই সংসার চলত কত অসংখ্য মানুষের ! কারা তাঁরা ?

ট্যাক্সিচালক, নানা ধরনের শ্রমিক থেকে শুরু করে অসংখ্য অস্থায়ী দোকান মালিক । যেমন, ভাতের হোটেল, ফল, মুড়ি, চা, পান-সিগারেটের দোকান । কোভিডের আগে ভালো ছিলেন এই ব্যবসায়ীরা । কারণ, প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের যাতায়াত জংশন স্টেশনে । কিন্তু গত মার্চ থেকে বদলে গিয়েছে সব ! বন্ধ যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল । সম্প্রতি দু'টি স্পেশাল ট্রেন চলছে বটে, কিন্তু তা কি আর 84 জোড়া ট্রেনের বিকল্প হতে পারে ! অবস্থা এতটাই খারাপ যে, স্টেশন চত্বরের বহু হোটেল কর্মী অন্য কাজের খোঁজে এলাকা ছেড়েছেন । যাঁরা এখনও পুরোনো প্রতিষ্ঠানে পড়ে রয়েছেন, তাঁরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার দিকে তাকিয়ে !

ট্রেন চলছে না, সংকটে মালদা টাউন স্টেশন চত্বরের ব্যবসায়ীরা ৷

মালদা টাউন স্টেশন চত্বরের ট্যাক্সি স্ট্যান্ডে প্রায় 60 টি গাড়ি ভাড়া খাটে । এর সঙ্গে বাইরের বেশ কিছু গাড়িও স্টেশনে যাতায়াত করে । সকলেরই ভরসা স্টেশন ৷ যাত্রীরাই তো গ্রাহকদেবতা ! লকডাউনে এদের বিপদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি । কারণ, শহরের অন্য কোথাও এদের গাড়ি চালাতে দেওয়া হয় না । তেমনই একজন মহানন্দা পল্লির বাসিন্দা সন্তোষ ভগৎ মালি ।

সন্তোষ বলেন, "সাড়ে পাঁচ মাস ধরে কাজ বন্ধ । ফোন মারফৎ যেটুকু ভাড়া পাই ! আগে যত ভাড়া পেতাম, এখন তার এক চতুর্থাংশও হচ্ছে না । মালিক অবশ্য এখনও বেতন দিচ্ছেন । সব মালিকই কম-বেশি বেতন দিচ্ছেন । তাঁদেরই তো উপার্জন নেই ! সরকারি সহায়তা পাইনি । "

ট্রেন চললেই হবে সমস্যার সমাধান ৷ বলছেন সন্তোষ ভগৎ মালি ৷ তাঁর কথায়, "ট্রেন চলাচলের উপরেই নির্ভরশীল আমরা । যত তাড়াতাড়ি ট্রেন চালু হবে, ততই মঙ্গল হবে আমাদের ।"

শহরের সুকান্ত পল্লির বাসিন্দা উদয়শংকর দাস । নিজের গাড়ি, নিজেই চালান । বলেন, "এখন 5-6 দিন পর পর একটা ভাড়া পাচ্ছি । এই স্ট্যান্ডে চেইন সিস্টেমে গাড়িওলাদের ভাড়া দেওয়া হয় । এখন একটা ভাড়া পেতে অনেক দিন কেটে যাচ্ছে ৷ এদিকে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনেছি । গত পাঁচ মাস ব্যাঙ্কের কিস্তি মেটাতে পারিনি । সরকারের কাছে একটাই আর্জি, আরও কিছু ট্রেন চালু করা হোক ।"

স্টেশন চত্বরে পানের দোকান গয়েশপুরের সন্তু কর্মকারের । তিনি বলেন, "দুটো ট্রেন চালু হয়েছে বটে, তাতে কিছুই হয় না ! টেনে হিঁচড়ে সংসার চলছে । ট্রেন না চললে আমাদের কিছু হবে না ! এখন দিনে দেড় থেকে দুশো টাকা উপার্জন হয় । এভাবে চলা যায় না ।"

তরকা-রুটির দোকান কুলিপাড়ার রাজা মাহাতোর । তিনি বলেন, "এখন স্থানীয় খদ্দেররাই ভরসা । স্টেশনে কর্মরত GRP, RPF আর সাধারণ রেলকর্মীরাই কাস্টোমার ! 20 বছর ধরে ব্যবসা করছি । এমন অবস্থা দেখিনি ! ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক হলে সমস্যা মিটে যাবে ।"

কাস্টোমারের এতটাই অভাব যে এই মুহূর্তে মালদা টাউন স্টেশন চত্বরে একটি মাত্র ভাতের হোটেল খোলা । অথচ স্টেশন চত্বরের 50টি দোকানের মধ্যে ভাতের হোটেল 12টি । স্বাভাবিক সময়ে প্রত্যেক হোটেলে দিনে প্রায় তিন হাজার টাকার ব্যবসা হয় । এখন?

দিনে 400 টাকার বেশি ব্যবসা হচ্ছে না, বলছেন স্টেশন চত্বরের চালু থাকা একমাত্র হোটেল মালিক মহানন্দা পল্লির বাসিন্দা শ্রীনিবাস দাস ৷

শ্রীনিবাস বলেন, "ট্রেন না থাকায় মানুষ আসে না । যে দু'টো ট্রেন চলছে, এখানকার মানুষ তার টিকিটও পায় না । আমাদের ব্যবসা মূলত শ্রমিকদের উপর নির্ভর করে । এই স্টেশন দিয়ে প্রতিদিন প্রচুর শ্রমিক বাইরে কাজ করতে যান ৷ এখন দিয়েই ফেরেন । তাঁরা এখন বাইরে যেতে পারছে না । ফলে বেশিরভাগ হোটেলই বন্ধ হয়ে গিয়েছে । হোটেল কর্মীরা কাজ খুঁজতে বাইরে চলে যাচ্ছে । একদিকে যখন জিনিসের দাম বাড়ছে, তখন আমাদের উপার্জন প্রায় বন্ধ ! "

শ্রীনিবাস দাসেরও দাবি, "অন্তত কয়েকটি ট্রেন চালু হোক । তাহলেই আমাদের সমস্যা কিছুটা মিটবে । "

কয়েকদিন আগেই পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের ম্যানেজার যতীন্দ্র কুমার জানিয়েছিলেন, রাজ্যের সম্মতি পেলে আরও স্পেশাল ট্রেন চালাতে প্রস্তুত রেল । তবে, কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী 30 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা যাবে না ।

পূর্ব রেলের মালদা ডিভিশনের পক্ষে আরও জানানো হয়েছে, মালদা থেকে কিছু স্পেশাল ট্রেন চালাতে তাঁদের দিক থেকে সমস্যা নেই । শুধু তাই নয়, মালদা-শিয়ালদা-মালদা গৌড় এক্সপ্রেস এবং মালদা-জামালপুর-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস চালু করার জন্য তাঁদের কাছে প্রচুর মানুষের আবেদনও এসেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ । কিন্তু, রাজ্যের অনুমোদন ছাড়া ট্রেন চালু করা সম্ভব নয় । এই বিষয়ে রাজ্য সরকার কোনও সিদ্ধান্ত নেয় কি না এখন সেটাই দেখার ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.