মালদা, 10 জানুয়ারি: বিয়ের বয়স মাত্র ছ’মাস ৷ তার মধ্যেই এক বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটল মালদার পুরাতন মালদা ব্লকের মঙ্গলবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের মৌলপুর খাসপাড়া গ্রামে ৷ মঙ্গলবার গভীর রাতে মৃত বধূর নাম আনজুরা খাতুন ৷ মৃতার বাপের বাড়ির সদস্যদের অভিযোগ, অতিরিক্ত পণের দাবিতে তাঁদের মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ৷ তারপর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে ৷
এই ঘটনায় মৃতার স্বামী সামিরুল শেখ ও শ্বশুর-শাশুড়ির বিরুদ্ধে মালদা থানায় খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার মা ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে মৃতার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ তবে শ্বশুর-শাশুড়ি পলাতক ৷ তাঁদের খোঁজে পুলিশি তল্লাশি শুরু হয়েছে ৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে ৷
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ঊনিশের আনজুরা খাতুনের বাপের বাড়ি রতুয়া-2 নম্বর ব্লকের পুখুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাহাবাদ গ্রামে ৷ মাস ছয়েক আগে আনজুরার সঙ্গে মৌলপুর খাসপাড়া গ্রামের সামিরুল শেখের বিয়ে হয় ৷ বিয়ের আগে তাঁদের দু’জনের মধ্যে প্রেমঘটিত সম্পর্কও ছিল ৷ যদিও সামাজিক মতে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল ৷
আনজুরার এক আত্মীয় মহম্মদ আজমল হোসেন বলেন, “ছ’মাস আগে এরা প্রেম করে বিয়ে করেছিল ৷ তারপর আমরা সামাজিকভাবে দু’জনের বিয়ে দিই ৷ বিয়েতে আশি হাজার টাকা দেনমোহরও দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু তারপরেও বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য মেয়েকে চাপ দিত জামাই ৷ মেয়ের বাবা কার্যত ভিক্ষে করে খায় ৷ ওর মা জামাইকে জানান, পরে ওকে টাকা দেবেন ৷’’
অভিযোগ, আনজুরা বাপের বাড়ি থেকে অতিরিক্ত টাকা আনতে অস্বীকার করলে সামিরুল তাঁকে মারধরও করত ৷ মঙ্গলবার রাতেও এই কারণে সে আনজুরাকে মারধর করে ৷ রাতে সেকথা ফোনে মাকে বলেন আনজুরা ৷ মহম্মদ আজমল হোসেন বলেন, ‘‘গতকাল (মঙ্গলবার) রাত 12টা নাগাদ মেয়ে তাঁর মাকে ফোন করে জানান, টাকার জন্য ওকে রাতেও মারধর করা হয়েছে ৷ এরপর রাত 1.09 মিনিটে জামাই ফোন করে খবর দেয়, মেয়ে নাকি আত্মহত্যা করেছে ৷ এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয় ৷ ওকে খুন করা হয়েছে ৷’’
রাতেই মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে উপস্থিত হন আনজুরার বাপের বাড়ির লোকজন ৷ খবর পেয়ে মালদা থানার পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷ রাতেই আনজুরার বাপের বাড়ির তরফে সামিরুল-সহ তার বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় ৷ অভিযোগ পেয়ে সামিরুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ তবে শ্বশুর-শাশুড়ি পলাতক ৷ মহম্মদ আজমল হোসেন বলেন, ‘‘আমরা এই ঘটনার সুবিচার চাই ৷”
আরও পড়ুন: