মালদা, 29 জুন: পুলিশের ভুলের কারণে 65 বছরের এক বৃদ্ধ তিন রাত ধরে জেল খাটছেন ৷ যা নিয়ে আইনজীবীদের বক্তব্য, পুলিশ মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে (Human Rights Violations on a Murder Case) ৷ এর জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ৷
2005 সালের 30 এপ্রিল মালদা থানায় এক মহিলাকে খুনের মামলা রুজু হয়। সেই মামলায় নরেশ মাহাতো, গোপাল মাহাতো এবং জয়া মাহাতোর নাম ছিল। প্রায় 17 বছর চুপচাপ থাকার পর সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে এই মামলা নিয়ে নড়েচড়ে বসে মালদা থানার পুলিশ। সোমবার অর্থাৎ 27 জুন গোপাল মাহাতোকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। আদালতের নির্দেশে তিনি বর্তমানে জেল হেফাজতে রয়েছেন। আর তাঁর গ্রেফতারি নিয়েই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
আরও পড়ুন : ঝালদায় জিতলেন নিহত কাউন্সিলর তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন
পরিবারের দাবি, পুলিশ যে গোপাল মাহাতোকে গ্রেফতার করেছে, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই। গোপালবাবুর ছেলে অশোক মাহাতো বলেন, "সোমবার পুলিশ বাড়িতে যায়। জানায়, বাবার নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে। একথা বলেই বাবাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। স্থানীয় এক ভিলেজ পুলিশকর্মী আমাদের জানান, আদালত ছাড়া বাবার জামিন হবে না। তাঁর কথা শুনে আমরা আদালতে যাই। কিন্তু মামলার নথিপত্র দেখেই আমরা অবাক। দেখি, নথিতে যে গোপাল মাহাতোর নাম রয়েছে, সে আমার বাবাই নয়। তিনি অন্য গোপাল মাহাতো। বাবার নাম নরেশচন্দ্র মাহাতো। ঠাকুরদার নাম মহেন্দ্র মাহাতো। বাড়ি দুর্গাপুর গ্রামে। অথচ আমাদের বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জ গ্রামে। পুলিশের ভুলে আমার বাবা বিনা অপরাধে জেল খাটছেন। এনিয়ে থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও পুলিশ আমাদের গুরুত্ব দিচ্ছে না। আমরা বাবার দ্রুত মুক্তি চাই।"
এনিয়ে বুধবার অর্থাৎ আজ মালদা থানায় যান স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক গোপালচন্দ্র সাহা। তিনি বলেন, "পুলিশের ভুলে একজন নিরাপরাধ মানুষ জেল খাটছেন। এই ঘটনাই প্রমাণ করছে, রাজ্যে এখন আর আইনের শাসন নেই। এ নিয়ে তথ্য প্রমাণ দিয়ে আমি মালদা থানার আইসি এবং ওয়ারেন্ট অফিসারের সঙ্গে কথা বললাম। গোপালবাবু দ্রুত মুক্তি না-পেলে আমরা আন্দোলনে নামব।"
আরও পড়ুন : রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের নির্বাচনকে অবৈধ ঘোষণা করল হাইকোর্ট
বিষয়টি নিয়ে মানবাধিকার কর্মী তথা মালদা জেলা আদালতের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় দাস বলেন, "মালদা থানার পুলিশ যা করেছে তা মানবাধিকার লঙ্ঘন। এটা পুরোপুরি বেআইনি কাজ। এর জন্য পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হওয়া উচিত।" যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনও জেলার পুলিশকর্তাদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷