ETV Bharat / state

Ghosh bari Puja: নেই ব্রাহ্মণ্যবাদ, 200 বছর ধরে ঘোষবাড়ির মহিলাদের হাতেই পূজিতা হন দেবী চণ্ডী

200 বছরের বেশি সময় ধরে একই রীতি মেনে জহুরা চণ্ডীপুজো হয়ে আসছে মালদা শহরের ঘোষবাড়িতে ৷ মন্দিরে দেবীর 11টি মুখা থাকলেও একসঙ্গে দেবীর 52 বোনের পুজো হয় এই মন্দিরে। বৈশাখের শেষ শনিবার এই পুজো হয় আরও ধুমধাম করে ৷

Ghoshbari Puja
ঘোষ বাড়ির মহিলাদের হাতেই পূজিতা হন দেবী চণ্ডি
author img

By

Published : May 13, 2023, 9:18 PM IST

ঘোষ বাড়ির মহিলাদের হাতেই পূজিতা হন দেবী চণ্ডী

মালদা, 13 মে: 200 বছরের বেশি সময় ধরে একই রীতি মেনে জহুরা চণ্ডীপুজো হয়ে আসছে মালদা শহরের ঘোষবাড়িতে ৷ এই পুজোয় ব্রাহ্মণ্যবাদের কোনও বালাই নেই ৷ বংশপরম্পরায় পুজো করে আসেন বাড়ির বউয়েরা ৷ ঘোষবাড়ির এই পুজো ভক্তদের কাছে জাগ্রত পুজো হিসেবেই পরিচিত ৷ শুধু শহর কিংবা জেলার মানুষ নয়, পুরো বৈশাখ মাস জুড়ে ভিন জেলা, এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড় ৷ বৈশাখের শেষ শনিবার এই পুজো হয় আরও ধুমধাম করে ৷ পাত পেড়ে খাওয়ানো হয় ভক্তদের ৷

বৈশাখ মাস পড়তেই জেলা জুড়ে চণ্ডীপুজো শুরু হয়ে যায় ৷ প্রতি মঙ্গল ও শনিবার করে চণ্ডীপুজো হয়ে থাকে ৷ জেলার উল্লেখযোগ্য জহুরাতলার পুজোর পাশাপাশি নাম রয়েছে ঘোষবাড়ির পুজোরও ৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় 200 বছর আগে প্রয়াত দীনবন্ধু ঘোষের স্ত্রী নীলো ঘোষের হাতে এই পুজোর পত্তন। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েই এই পুজো শুরু করেছিলেন তিনি ৷ পুরোনো বাঁশবাড়ির গোঁসাইটুলি এলাকায় 24 বছর বয়স থেকে পুজো শুরু করেছিলেন শতায়ু নীলোদেবী। পুজো করেছিলেন 119 বছর পর্যন্ত। প্রথমদিকে শুধুমাত্র তুলসিগাছে জল ঢেলে পুজো করা হত। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে জহুরা চণ্ডীর মুখাপুজো শুরু হয়।

নীলোদেবীর প্রয়াণের পর এই পুজোর দায়িত্ব বর্তায় তাঁর বউমা ঝাঁপানি ঘোষের উপর। তাঁর মৃত্যুর পর পুজো সামলাচ্ছেন প্রয়াত নগেন ঘোষের স্ত্রী রানিবালা ঘোষ। তাঁর বয়সও 90 ছুঁইছুঁই। বাড়িতেই এখন রয়েছে দেবীর মন্দির । মন্দিরে দেবীর 11টি মুখা থাকলেও একসঙ্গে দেবীর 52 বোনের পুজো হয় এই মন্দিরে। পুজো হয় মনসা প্রতিমারও ৷ বৈশাখের প্রতি মঙ্গল ও শনিবার পুজো দিতে ঘোষবাড়িতে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে ৷ বৈশাখের শেষ পুজোর দিন খিচুড়ি, সবজি, বিভিন্ন ধরণের ভাজা, লুচি আর পায়েসের ভোগ দেওয়া হয়। সেদিন ভোগ খেতে ভিড় জমান কয়েক হাজার মানুষ। সবাইকেই পাত পেড়ে ভোগ খাওয়ানো হয়।

আরও পড়ুন: পরিবেশবান্ধব ট্রাম বাঁচাও, নাগরিক মঞ্চে সামিল বুদ্ধিজীবীরা

রানীদেবী বলেন, "গত 35 বছর ধরে পুজো করছি। এর আগে আমার শাশুড়ি 80-90 বছর বয়স পর্যন্ত পুজো করেছেন। তার আগে ওঁনার মা নীলো ঘোষ 20-22 বছর বয়স থেকে 119 বছর বয়স পর্যন্ত পুজো করেছেন। এই মন্দিরে জহুরাচণ্ডীর 52 বোনের পুজো হয়। 11টি জহুরা চণ্ডীর মুখো ও একটি মনসা প্রতিমা আছে মন্দিরে। আগে এই পুজো ফুলবাড়িতে ছিল। প্রায় 50 বছর আগে এই পুজো নতুন বাঁশবাড়িতে এসেছে। বংশ পরম্পরায় ঢাকি ও মৃৎ শিল্পী ঢাক বাজান ও প্রতিমা তৈরি করেন। মন্দিরে পুজো প্রতিদিনই হয়। তবে বৈশাখ মাসের মঙ্গল ও শনিবার বড়ো করে পুজো হয়। প্রচুর মানুষ এখানে পুজো দিতে আসেন। বৈশাখ মাসের শেষ পুজোর দিন খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়।"

পুজোর পাশাপাশি বংশ পরম্পরায় পুজোয় ঢাক বাজান রবিদাস পরিবারের সদস্যরা৷ পুজোর বর্তমান ঢাকি আনন্দ রবিদাস বলেন, "গত 3 বছর ধরে আমি ঢাক বাজাচ্ছি। এর আগে আমার বাবা-ঠাকুরদা ঢাক বাজাতেন। প্রায় 200 বছর ধরে এই পুজো চলে আসছে। বৈশাখ মাসের প্রতি মঙ্গল ও শনিবার এই পুজো হয়। পুজোর দিন মন্দিরে এমনকি বাড়িতে পা ফেলার জায়গা থাকে না।"

ঘোষ বাড়ির মহিলাদের হাতেই পূজিতা হন দেবী চণ্ডী

মালদা, 13 মে: 200 বছরের বেশি সময় ধরে একই রীতি মেনে জহুরা চণ্ডীপুজো হয়ে আসছে মালদা শহরের ঘোষবাড়িতে ৷ এই পুজোয় ব্রাহ্মণ্যবাদের কোনও বালাই নেই ৷ বংশপরম্পরায় পুজো করে আসেন বাড়ির বউয়েরা ৷ ঘোষবাড়ির এই পুজো ভক্তদের কাছে জাগ্রত পুজো হিসেবেই পরিচিত ৷ শুধু শহর কিংবা জেলার মানুষ নয়, পুরো বৈশাখ মাস জুড়ে ভিন জেলা, এমনকি ভিন রাজ্য থেকেও উপচে পড়ে ভক্তদের ভিড় ৷ বৈশাখের শেষ শনিবার এই পুজো হয় আরও ধুমধাম করে ৷ পাত পেড়ে খাওয়ানো হয় ভক্তদের ৷

বৈশাখ মাস পড়তেই জেলা জুড়ে চণ্ডীপুজো শুরু হয়ে যায় ৷ প্রতি মঙ্গল ও শনিবার করে চণ্ডীপুজো হয়ে থাকে ৷ জেলার উল্লেখযোগ্য জহুরাতলার পুজোর পাশাপাশি নাম রয়েছে ঘোষবাড়ির পুজোরও ৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় 200 বছর আগে প্রয়াত দীনবন্ধু ঘোষের স্ত্রী নীলো ঘোষের হাতে এই পুজোর পত্তন। দেবীর স্বপ্নাদেশ পেয়েই এই পুজো শুরু করেছিলেন তিনি ৷ পুরোনো বাঁশবাড়ির গোঁসাইটুলি এলাকায় 24 বছর বয়স থেকে পুজো শুরু করেছিলেন শতায়ু নীলোদেবী। পুজো করেছিলেন 119 বছর পর্যন্ত। প্রথমদিকে শুধুমাত্র তুলসিগাছে জল ঢেলে পুজো করা হত। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে জহুরা চণ্ডীর মুখাপুজো শুরু হয়।

নীলোদেবীর প্রয়াণের পর এই পুজোর দায়িত্ব বর্তায় তাঁর বউমা ঝাঁপানি ঘোষের উপর। তাঁর মৃত্যুর পর পুজো সামলাচ্ছেন প্রয়াত নগেন ঘোষের স্ত্রী রানিবালা ঘোষ। তাঁর বয়সও 90 ছুঁইছুঁই। বাড়িতেই এখন রয়েছে দেবীর মন্দির । মন্দিরে দেবীর 11টি মুখা থাকলেও একসঙ্গে দেবীর 52 বোনের পুজো হয় এই মন্দিরে। পুজো হয় মনসা প্রতিমারও ৷ বৈশাখের প্রতি মঙ্গল ও শনিবার পুজো দিতে ঘোষবাড়িতে মানুষের ভিড় উপচে পড়ে ৷ বৈশাখের শেষ পুজোর দিন খিচুড়ি, সবজি, বিভিন্ন ধরণের ভাজা, লুচি আর পায়েসের ভোগ দেওয়া হয়। সেদিন ভোগ খেতে ভিড় জমান কয়েক হাজার মানুষ। সবাইকেই পাত পেড়ে ভোগ খাওয়ানো হয়।

আরও পড়ুন: পরিবেশবান্ধব ট্রাম বাঁচাও, নাগরিক মঞ্চে সামিল বুদ্ধিজীবীরা

রানীদেবী বলেন, "গত 35 বছর ধরে পুজো করছি। এর আগে আমার শাশুড়ি 80-90 বছর বয়স পর্যন্ত পুজো করেছেন। তার আগে ওঁনার মা নীলো ঘোষ 20-22 বছর বয়স থেকে 119 বছর বয়স পর্যন্ত পুজো করেছেন। এই মন্দিরে জহুরাচণ্ডীর 52 বোনের পুজো হয়। 11টি জহুরা চণ্ডীর মুখো ও একটি মনসা প্রতিমা আছে মন্দিরে। আগে এই পুজো ফুলবাড়িতে ছিল। প্রায় 50 বছর আগে এই পুজো নতুন বাঁশবাড়িতে এসেছে। বংশ পরম্পরায় ঢাকি ও মৃৎ শিল্পী ঢাক বাজান ও প্রতিমা তৈরি করেন। মন্দিরে পুজো প্রতিদিনই হয়। তবে বৈশাখ মাসের মঙ্গল ও শনিবার বড়ো করে পুজো হয়। প্রচুর মানুষ এখানে পুজো দিতে আসেন। বৈশাখ মাসের শেষ পুজোর দিন খিচুড়ি ভোগ খাওয়ানো হয়।"

পুজোর পাশাপাশি বংশ পরম্পরায় পুজোয় ঢাক বাজান রবিদাস পরিবারের সদস্যরা৷ পুজোর বর্তমান ঢাকি আনন্দ রবিদাস বলেন, "গত 3 বছর ধরে আমি ঢাক বাজাচ্ছি। এর আগে আমার বাবা-ঠাকুরদা ঢাক বাজাতেন। প্রায় 200 বছর ধরে এই পুজো চলে আসছে। বৈশাখ মাসের প্রতি মঙ্গল ও শনিবার এই পুজো হয়। পুজোর দিন মন্দিরে এমনকি বাড়িতে পা ফেলার জায়গা থাকে না।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.