মালদা, 6 জুলাই : যশের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে ডুবেছিল মালদা শহর । বেশ কয়েকদিন জলবন্দি থাকতে হয়েছিল এই শহরের বাসিন্দাদের । রেহাই পাননি খোদ জেলাশাসকও । সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছিলেন ইংরেজবাজার পৌরসভার 20 নম্বর ওয়ার্ডের হাজার ছয়েক বাসিন্দারা । কারণ, এই ওয়ার্ডটি কার্যত গামলার মতো । চারদিকে উঁচু রাস্তা থাকায় জমা জল বেরোতে পারে না । সামান্য বৃষ্টিতেই জল জমে । দু’দিন বৃষ্টি হয়নি শহরে । তবুও এই ওয়ার্ডের একাংশে দাঁড়িয়ে রয়েছে জল ।
দীর্ঘদিন ধরে মানুষ এই সমস্যায় ভুগলেও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের যেন কোনও মাথাব্যথাই ছিল না । জনরোষ সামাল দিতে না পারলে দু-চারটি পাম্প বসিয়েই নিজেদের দায় সারতেন তাঁরা । অনেকেই আড়ালে বলে জল না জমলে কাউন্সিলরদের পকেট ফুলবে না । তাই ইচ্ছাকৃতভাবেই সমস্যার সমাধান করা হয়নি । এই মুহূর্তে ইংরেজবাজার পৌরসভায় রয়েছে প্রশাসক বোর্ড । জনপ্রতিনিধিদের সরিয়ে বোর্ডের মাথায় বসানো হয়েছে মহকুমাশাসককে । তার পরেই এই সমস্যা চিরতরে দূর করার উদ্যোগ নিয়েছে পৌর প্রশাসন । এই কাজে সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসনও । এবার মালদা শহরে প্রথম বসতে চলেছে পাম্পিং স্টেশন । গোটা শহরে 10টি পাম্পিং স্টেশন তৈরি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে 20 নম্বর ওয়ার্ডকে । এই ওয়ার্ডের রথবাড়ি মোড় এলাকায় স্টেশন নির্মাণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে । এবিষয়ে পৌর প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক সুরেশচন্দ্র রানো বলেন, “গোটা পৌর এলাকায় আমরা 10টি জায়গা পাম্পিং স্টেশন নির্মাণের জন্য চিহ্নিত করেছি । মালদা শহরে এমন কিছু জায়গা আছে, যেখান দিয়ে জল স্বাভাবিকভাবে বেরোতে পারে না । এই এলাকাগুলিতে জমা জল লিফটিং করতে হবে । তার মধ্যে রথবাড়িও রয়েছে । সেখানে একটি স্থায়ী পাম্পিং স্টেশন তৈরি হচ্ছে ।
প্রতিটি পাম্পিং স্টেশন নির্মাণে প্রায় দু’লাখ টাকা খরচ হচ্ছে । বর্ষার মধ্যেই পাম্পিং স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পৌর প্রশাসন । পৌর প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত খুশির হাওয়া বইছে 20 নম্বর ওয়ার্ডে । এলাকার বাসিন্দা গৌতম রায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই সামান্য বৃষ্টিতে আমাদের এলাকায় জল জমে যায় । আমরা বারবার বলছিলাম, এই এলাকাটি যেহেতু কড়াইয়ের মতো, তাই পাম্প ব্যবহার করেই জমা জল বের করতে হবে । পৌর প্রশাসক যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে আমরা খুবই উপকৃত হব । এজন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।”
আরও পড়ুন: জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের গাছ কাটা রুখল বন দফতর
রথবাড়ি এলাকায় চায়ের দোকান রয়েছে পুষ্প মণ্ডলের । যশের বৃষ্টিতে তাঁর দোকান দিয়ে জল বয়ে গিয়েছিল । তিনদিন দোকান বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন । পৌর প্রশাসনের পাম্পিং স্টেশন নির্মাণের সিদ্ধান্তে তিনিও খুশি । তিনি বলেন, “18 বছর ধরে চায়ের দোকান করছি । পাঁচ বছর ধরে দেখছি, খরাতেও পাশের গলিটায় জল দাঁড়িয়ে থাকে । ”