মালদা, 1 সেপ্টেম্বর : বৈষ্ণবনগরের চিনাবাজারে গঙ্গার ভাঙনে গৃহহীন প্রায় দেড়শো পরিবারের পাশে দাঁড়াল CPI(M)-এর ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠন ৷ দুই সংগঠনের সদস্যরা গতকাল থেকেই দুর্গত মানুষদের রান্না করা খাবার খাওয়াচ্ছেন ৷ আজ ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনের সঙ্গে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জেলা CPI(M) নেতৃত্ব ৷ দুর্গতদের জন্য এখনও প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ তাদের ৷ গৃহহীন মানুষজনের পুনর্বাসনের দাবিতে আগামী 4 সেপ্টেম্বর কালিয়াচক 3 ব্লক ঘেরাও আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়েছে বামেদের বড় শরিক ৷ আজ সেকথা জানিয়েছেন CPI(M) জেলা কমিটির সদস্য দেবজ্যোতি সিন্হা ৷
রবিবার সকালে চিনাবাজার এলাকায় হঠাৎ গঙ্গার ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয় ৷ দুপুর দুটোর মধ্যেই নদীগর্ভে তলিয়ে যায় 60টি পাকাবাড়ি ৷ ভাঙনের ভয়াবহতা দেখে নিজেদের বাড়ি থেকে সরে যেতে শুরু করে নদী থেকে 100 মিটার দূরে থাকা মানুষজনও ৷ ফলে এই মুহূর্তে গৃহহীন দেড়শোরও বেশি পরিবার ৷ তাদের অনেককে স্থানীয় একটি প্রাথমিক স্কুলে রাখা হয়েছে ৷ অনেকেই মাথায় ত্রিপল টাঙিয়ে বসবাস করছেন ৷ অনেকে আবার নিজেদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ৷ ঘটনার পরেই ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গতদের সাহায্য করা হয়েছিল ৷ তার মধ্যে ছিল চাল, শুকনো খাবার ইত্যাদি ৷ দেওয়া হয় কিছু ত্রিপলও ৷ কিন্তু গৃহহীন মানুষদের এখন রান্না করে খাওয়ার অবস্থা নেই ৷ তাই গতকাল থেকে ওই ব্লকের SFI ও CITU নেতৃত্ব দুর্গতদের রান্না করা খাবার খাওয়ানো শুরু করে ৷ দু'বেলাই দুর্গতদের রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে ৷
আজ ওই এলাকা পরিদর্শনে যান CITU নেতা ও CPI(M)-এর জেলা কমিটির সদস্য দেবজ্যোতি সিন্হা ৷ সঙ্গে ছিলেন দুলাল নন্দন চাকি সহ অন্যান্য দলীয় নেতারা ৷ তাঁরা ভাঙন বিধ্বস্ত এলাকা ঘুরে দেখেন ৷ কথা বলেন দুর্গতদের সঙ্গে ৷ দেবজ্যোতিবাবু বলেন, "বৈষ্ণবনগরের মানুষ এমন ভাঙন আগে কখনও দেখেনি ৷ এর আগে 2016 সালে স্থানীয় সরকারটোলায় গঙ্গার ব্যাপক ভাঙন হয়েছিল ৷ সেবারও অনেক বাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছিল ৷ কিন্তু পরশুর ঘটনা আগের ভাঙনকে ছাপিয়ে গেছে ৷ দুপুরের মধ্যে গৃহহীন হয়েছে দেড়শোর বেশি পরিবার ৷ ব্লক প্রশাসন এখনও এই মানুষগুলোকে সঠিক ত্রাণ দেয়নি ৷ যে চাল দেওয়া হয়েছে তাতে পোকা ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ এত লোকের জন্য মাত্র 50টি ত্রিপল পাঠানো হয়েছে ৷ তাই আমাদের দুটি সংগঠনের সদস্যরা এখানকার মানুষজনকে রান্না করা খাবার খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ গতকাল থেকেই তা শুরু হয়েছে ৷ আগামী 4 তারিখ পর্যন্ত এই খাবার দেওয়া হবে ৷
তাঁর অভিযোগ, "2016 সালে যারা গৃহহীন হয়েছিল, তাদের অনেকে এখনও সরকারটোলার একটি স্কুলে রয়েছে ৷ এখনও তাদের পুনর্বাসন দেওয়া হয়নি ৷ যারা গৃহহীন হল তারা কবে পুনর্বাসন পাবে তা কেউ জানে না ৷ তাই আগামী 4 সেপ্টেম্বর দুর্গতদের পুনর্বাসনের দাবিতে আমরা কালিয়াচক 3 ব্লক ঘেরাও করার কর্মসূচি নিয়েছি ৷ এনিয়ে আমরা জেলাশাসক ও ফরাক্কা ব্যারেজের জেনারেল ম্যানেজারের কাছেও ডেপুটেশন দেব ৷"