মালদা, 16 ফেব্রুয়ারি: চিকিৎসার গাফিলতিতে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠল সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ৷ মৃত শিশুর মা আবার পঞ্চায়েত সদস্য (Panchayat Member) বলে জানা গিয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে (Harishchandrapur Govt Hospital) ৷ এই ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা ৷ তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও পুলিশ কিংবা স্বাস্থ্য দফতরে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷
মৃত শিশুর নাম বিষ্ণু দাস ৷ বয়স মাত্র আড়াই বছর ৷ বাবা সুজন দাস ছোটখাটো ব্যবসায়ী ৷ মা মালা দাস হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ৷ বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুরের রাম রায় গ্রামে ৷ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন ধরেই পেটের সমস্যায় ভুগছিল বিষ্ণু ৷ মাঝেমধ্যে পেট ফেঁপে যাচ্ছিল তার ৷ পায়খানা-প্রস্রাব নিয়েও সমস্যা বাড়ছিল ৷ বাড়ির লোকজন গ্রামীণ চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ খাওয়াচ্ছিলেন ৷ কিন্তু তেমন কাজ হচ্ছিল না ৷ গতকাল রাতে বিষ্ণুর শারীরিক সমস্যার বাড়াবাড়ি হলে তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷
অভিযোগ, চিকিৎসক তাকে ভরতি না-নিয়ে ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেন ৷ খানিক বাদে শিশুটির শারীরিক পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ায় অভিভাবকরা তাকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যান ৷ চিকিৎসকের কাছে আবেদন করেন, শিশুকে যেন ভরতি করে চিকিৎসা করা হয় ৷ কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক সেই আবেদনে সাড়া না-দিয়ে একটি ইনজেকশন দিয়ে ফের বিষ্ণুকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের ৷ ভোর নাগাদ বিষ্ণুর নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যায় ৷ তখনই তাকে ফের হাসপাতালে নিয়ে যান বাড়ির লোকজন ৷ তখন কর্তব্যরত আরেক চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন ৷
আরও পড়ুন: চোর সন্দেহে দুই যুবককে গণধোলাই! উদ্ধারে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশও
এরপরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বিষ্ণুর পরিবারের সদস্যরা ৷ তাঁদের বক্তব্য, একজন জনপ্রতিনিধির সন্তানের সঙ্গে যদি এমন ঘটনা ঘটে, তাহলে সাধারণ মানুষ হাসপাতালে কেমন পরিষেবা পাচ্ছেন, তা সহজেই অনুমেয় ৷ বিষ্ণুর কাকিমা কুন্তী দাস বলেন, "বাচ্চাকে যখন প্রথমবার হাসপাতালে নিয়ে আসি তখন ভক্ত ডাক্তার ডিউটিতে ছিলেন ৷ বাচ্চাকে দেখে তিনি ওষুধ লিখে আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেন ৷ ভরতির কথা বলেননি ৷ খানিক বাদে বাচ্চাকে ফের হাসপাতালে নিয়ে আসি ৷ তখনও ভক্ত ডাক্তার ডিউটিতে ছিলেন ৷"
তিনি আরও বলেন, "প্রথমে বাচ্চাকে দেখতে চাননি তিনি ৷ খানিক বাদে একটা ইনজেকশন দিয়ে ফের বাচ্চাকে ছেড়ে দেন ৷ শেষ পর্যন্ত ভোরে বাচ্চা মারা যায় ৷ ভক্ত ডাক্তার আগে বললে আমরা বাচ্চাকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারতাম ৷ এদিন ভোরে হাসপাতালের ডিউটিতে ছিলেন চিকিৎসক সুব্রত চৌধুরী ৷ তিনি বলেন, "বাচ্চাটিকে যখন আমার কাছে নিয়ে আসা হয়, তখন সে বেঁচে ছিল না ৷ তবু আমি বাচ্চাটিকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করি ৷ তার ইসিজিও করা হয় ৷ কিন্তু কিছু করা যায়নি ৷ তবে বাচ্চাটির চিকিৎসা নিয়ে আগে কী হয়েছিল, তা আমি বলতে পারব না ৷"