আসানসোল, 28 ডিসেম্বর: রেলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে আন্তঃরাজ্য প্রতারণার জাল আরও ছড়িয়েছে। নভেম্বরেই আসানসোলের
সৃষ্টিনগরে এই প্রতারণা ও জালিয়াতি চক্রের হদিশ পেয়েছিল আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। সেই মামলায় উত্তরপ্রদেশের লখনউ থেকে এই চক্রের আরও দুজনকে গ্রেফতার করল আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম দিনেশ কুমার ও প্রীতি অরোরা ওরফে সীমা।
আসানসোল দক্ষিণ থানার ডুরান্ড কলোনির বাসিন্দা দিনেশ কুমার ও আসানসোলের সুকান্ত পল্লীর বাসিন্দা প্রীতি অরোরা ওরফে সীমা সম্পর্কে স্বামী ও স্ত্রী বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ । তাদের ট্রানজিট রিমান্ড নিয়ে উত্তরপ্রদেশ থেকে আসানসোল নিয়ে আসা হয়েছে। এই চক্রের জাল আরও কতদূর ছড়িয়ে রয়েছে, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।
আসানসোলে রেলে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা চক্র গড়ে উঠেছে। ভিন রাজ্যের এক যুবককের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা প্রতারণা করা হয়। সেই অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। 30 নভেম্বর আসানসোলের সৃষ্টিনগরে হানা দিয়ে একটি আবাসন থেকে হরিন্দর সিং নামে এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জানা যায়, ওই ব্যক্তি বিহারের আড়া জেলার বাসিন্দা। সৃষ্টিনগরে ভাড়া নিয়ে থাকছিল। পাশের আবাসনে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ প্রচুর রেলে চাকরির ভুয়ো নথি পায়। রেলের পরীক্ষার সিট, মেডিক্যালের কাগজ পত্র, ভুয়ো আইডেনটিটি কার্ড-সহ প্রচুর স্ট্যাম্প উদ্ধার করে পুলিশ।
অন্যদিকে এই কান্ডে জড়িত এক অটো চালককেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তার নাম অবোধেশ কুমার। আসানসোলের দুর্গামন্দির এলাকার বাসিন্দা। এরপর এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ক'রে এই চক্রের জালে জড়িত আরও কয়েকজনের খবর পায় পুলিশ। এই জিজ্ঞাসাবাদে দিনেশ কুমার ও প্রীতি আরোরা ওরফে সীমার নাম পায় পুলিশ।
দিনেশ ও প্রীতির খোঁজ করতে শুরু করে পুলিশ। চলতি সপ্তাহে পুলিশ গোপন সূত্রে জানতে পারে, এই দুজন লখনউতে একটি ভাড়া বাড়ি নিয়ে গা ঢাকা দিয়ে আছে। ওই খবরের সূত্র ধরে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের একটি দল লখনউ যায়। দিনেশ কুমার ও প্রীতি আরোরাকে লখনউর আসিয়ানাতে একটি ভাড়া বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। তাদের ট্রানজিট রিমান্ড নিয়ে আসানসোলে আনা হয়।
বর্তমানে এই দু'জন আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশি হেফাজতে রয়েছে । ধৃতদের বিরুদ্ধে আসানিসোল দক্ষিণ থানায় কেস নম্বর 432/24, ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 319(2)/318(4) /316(2)/338/336(3)/ 340(2)/61(2) BNS (Railway Job Fraud Case) ধারায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে রেলে চাকরি দেওয়ার নামে এরা লক্ষ লক্ষ টাকার প্রতারণা করেছে। এই চক্রে আরও কারা জড়িত রয়েছে, তা জানার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।