মালদা, 7 ডিসেম্বর : গত লোকসভা নির্বাচনে এই জেলার দু’টি আসনের মধ্যে একটিতে বিজেপি, অন্যটিতে কংগ্রেস জয়ী হয়েছিল ৷ সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে জেলার 12টি আসনের মধ্যে তৃণমূল আটটি ও বিজেপি চারটি আসনে জয় পায় ৷ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর এই প্রথম মালদা জেলায় নিজস্ব বিধায়ক পেয়েছে শাসকদল ৷ একটি কিংবা দু’টি নয়, প্রথমবারেই আটটি আসন ৷ নির্বাচনের পর আগামিকাল জেলায় প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক (CM Malda Administrative Meeting) করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই বৈঠকে ডাকা হয়েছে তৃণমূলের সব বিধায়ককে। ডাক পেয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রীও ৷ শুধু ব্রাত্য থেকেছেন দুই সাংসদ ও বিজেপির চার বিধায়ক (BJP MLAs Not Get Invitation of Malda Administrative Meeting) ৷ এনিয়ে আজ ক্ষোভপ্রকাশ করেছে পদ্মশিবির ৷ যদিও গোটা বিষয়টি প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ৷
বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল আজ বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলের জনপ্রতিনিধিরা গর্ব করে বলেন, এই রাজ্যে তাঁরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই করছেন ৷ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার গণতন্ত্র মানে না ৷ আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রী মালদায় প্রশাসনিক বৈঠক করবেন ৷ সেই বৈঠকে তৃণমূলের বিধায়করা থাকবেন ৷ কিন্তু, আমাদের চার বিধায়ক কিংবা সাংসদ বৈঠকে আমন্ত্রণ পাননি ৷ এটাই নাকি এই রাজ্যের গণতন্ত্র !’’
আরও পড়ুন : Anubrata meets Mamata : বোলপুর স্টেশনে ট্রেন থামতেই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে চপ-মুড়ি তুলে দিলেন অনুব্রত
ইংরেজবাজারের বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্রচৌধুরী বলেন, “সংসদীয় ও পরিষদীয় গণতন্ত্রে মুখ্যমন্ত্রী জেলায় জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করলে সেখানে সাংসদ ও বিধায়কদের আমন্ত্রণ জানানো হয় ৷ জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের এলাকার সমস্যা ও দাবি তুলে ধরতে পারেন ৷ কিন্তু, দুর্ভাগ্যবশত আগামিকাল মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে আমাদের কোনও বিধায়ক কিংবা সাংসদকে ডাকা হয়নি ৷ আমরা রাজ্য বিধানসভার অংশ ৷ সরকারের গঠিত স্ট্যান্ডিং কমিটিতে রয়েছি ৷ কমিটির প্রতিটি বৈঠকে যোগ দিই ৷ সরকারের নির্দেশ মতো আমরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে সবকিছু খতিয়ে দেখে সরকারকে রিপোর্ট দিই ৷ বিধানসভায় আমরা সবসময় উপস্থিত থাকি ৷ ইংরেজবাজার মালদা জেলার সদর ৷ গোটা জেলার মানুষ এই শহরে আসেন ৷ প্রশাসনিক সমস্ত দফতর, ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা সব এই শহরে ৷ আমি সেখানকার বিধায়ক ৷ আমার কাছে এই এলাকার অন্তত 121টি সমস্যা রয়েছে ৷ যেটা রাজ্য সরকারই নিষ্পত্তি করতে পারে ৷ কিন্তু, সে সব সমস্যা মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনার সুযোগ পেলাম না ৷ আমি দুঃখিত এবং এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করছি ৷’’
আরও পড়ুন : CM's North Bengal Tour : ট্রেনে চেপে উত্তরবঙ্গে রওনা হলেন মুখ্যমন্ত্রী
গাজোলের বিধায়ক চিন্ময় দেববর্মন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে ডাক না পেয়ে আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ পেয়েছি ৷ এভাবেই আমরা বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে কার্যত নিগৃহীত হচ্ছি ৷ মানুষ দেখুক ৷ আমাদের বৈঠকে না ডেকে এই চারটি কেন্দ্রের মানুষকেই অপমান করা হয়েছে ৷ মানুষকে তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখা হচ্ছে ৷ অথচ আমাদের এলাকার বেশ কিছু জ্বলন্ত সমস্যা আমরা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরতে পারতাম ৷ এমন নিন্দার রাজনীতিকে ধিক্কার জানাচ্ছি ৷”
যদিও গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ৷ এনিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষও করেন তিনি ৷ বলেন, “বৈঠকে প্রশাসনের তরফে সবাইকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে ৷ আমি মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে আমন্ত্রণ পেয়েছি ৷ বাকিদের কী হয়েছে বলতে পারব না ৷ প্রশাসনই বলতে পারবে ৷ বিজেপি কোনও কাজ করে না ৷ ওরা বিরোধিতা করতেই ব্যস্ত থাকে ৷ সবসময় নেতিবাচক চিন্তা করে ৷ তা নিয়ে আমার কোনও মাথাব্যথা নেই ৷ মালদায় মুখ্যমন্ত্রী এসেছেন ৷ তিনি মালদাবাসীর জন্য কী ঘোষণা করেন, সেটা জানার জন্য অপেক্ষা করছি ৷’’