ETV Bharat / sports

প্রয়াত 'বঙ্গরত্ন' ভারতী ঘোষ, বাংলার টেবল টেনিসে শোকের ছায়া - BHARATI GHOSH PASSES AWAY

বাংলা তথা দেশের টেবল টেনিসে অপূরণীয় ক্ষতি ৷ 83 বছরে প্রয়াত কিংবদন্তি টেবল টেনিস প্রশিক্ষক ভারতী ঘোষ ৷

BHARATI GHOSH PASSES AWAY
প্রয়াত ভারতী ঘোষ (ETV Bharat)
author img

By ETV Bharat Sports Team

Published : Feb 24, 2025, 2:24 PM IST

শিলিগুড়ি, 24 ফেব্রুয়ারি: প্রয়াত বাংলার টেবল টেনিসের 'ক্রীড়াগুরু' ভারতী ঘোষ। বয়স হয়েছিল 83 বছর ৷ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন গত কয়েকমাস ৷ সোমবার সকালে নার্সিংহোমেই শেষ নিঃশ্বাস ত্য়াগ করেন তিনি ৷ ক্রীড়াজগত এবং রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিরা তাঁর চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না ৷ গত 20 ফেব্রুয়ারি তাঁর অসুস্থতার খবর শুনে চিকিৎসার যাবতীয় বন্দোবস্ত করে দেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তাঁর হস্তক্ষেপেই ভারতী ঘোষকে মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল। ভারতী ঘোষের মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলার ক্রীড়ামহলে।

রাজ্য সরকারের তরফে 2019 সালে 'বঙ্গরত্ন' এবং 2021 সালে ক্রীড়া দফতরের তরফে 'ক্রীড়াগুরু' সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন ভারতী ঘোষ। প্রশিক্ষকের ডিগ্রি না-থাকলেও ভারতী ঘোষ কেবল উত্তরের নন, রাজ্যের টেবল টেনিসের সেরা কোচ হিসেবে তাঁর স্বাক্ষর রেখে গেলেন। ভাইয়ের বন্ধুর সহযোগিতায় শিলিগুড়ির বিখ্যাত সেহগল ইনস্টিটিউটে ভরতি হয়েছিলেন ৷ হাতেগোনা কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে টেবল টেনিস খেলা শুরু করেছিলেন ৷ কোনও কোচ ছাড়াই শুরু হয় প্রশিক্ষণ ৷ প্রথমে সিনিয়রদের খেলা দেখে রপ্ত করে পরবর্তীতে মহাবীরস্থানের একটি কোচিং ক্যাম্পে ভরতি হয়েছিলেন তিনি। খুব অল্প সময়েই খেলাটিকে আয়ত্তে এনে ফেলেছিলেন ভারতী ঘোষ।

ভারতী ঘোষের মৃত্যুতে শোক বাংলার ক্রীড়ামহলে (ETV Bharat)

প্রশিক্ষণের ভাবনা শুরু তখন থেকেই ৷ তবে মাথায় ছিল ছোট-ছোট ছেলেমেয়েদের খেলা শেখানোর বিষয়টি। নিজেই শুরু করেন টেবল টেনিসের প্রশিক্ষণ দেওয়া । শিলিগুড়ি তো বটেই ৷ পাশাপাশি দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে শিশুদের টেবল টেনিসের প্রশিক্ষণ দিতেন কিংবদন্তি এই কোচ। বেতন দিতে অসমর্থ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের বিনামূল্যে কোচিং করাতেও পিছপা হননি ৷ প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়রাও তাঁর কাছে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন ৷ এভাবেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন পাঁচ দশক। নিজের খেলা এবং প্রশিক্ষণে যাতে কোনওরকম বাধা না-আসে, সেজন্য বিয়ে পর্যন্ত করেননি। 30 বছর বয়সে রেলে চাকরি পেলেও সমানতালে চালিয়ে গিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ ৷ অবসর পরবর্তীতে পুরো সময়টাই ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণের পিছনে ব্যয় করতেন ৷ অর্থাৎ, টেবল টেনিসকে সঙ্গী করেই কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের অধিকাংশ সময়। তাঁর হাতেই তৈরি 'অর্জুন' মান্তু ঘোষ, অলিম্পিয়ান সৌম্যজিৎ ঘোষের মত তারকারা ৷

দেশবন্ধু পাড়ায় একটি ছোট্ট ঘরে থাকতেন ভারতী ঘোষ ৷ নিজেই রান্না করতেন ৷ একা হাতে সব কাজ সামলে কোচিংয়ের জন্য সময়মতো পৌঁছনোয় কোনও কসুর ছিল না তাঁর। ভারতী ঘোষের হাতে গড়ে উঠেছেন অন্তত তিন হাজার প্য়াডলার। রাজ্য তো বটেই, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিনিধিত্ব করেছে অনেক তাঁর বহু ছাত্রছাত্রী। মান্তু ঘোষ বলেন, "ভারতী দি'র প্রয়াণ ক্রীড়াজগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর প্রশিক্ষণে অনেক তারকা টেবিল টেনিস খেলোয়াড় উঠে এসেছে।" মেয়র গৌতম দেব বলেন, "তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বার্ধক্যজনিত অনেক সমস্যা ছিল। ক্রীড়াগুরু ও বঙ্গরত্ন সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। খুব খারাপ লাগছে।"

আরও পড়ুন:

শিলিগুড়ি, 24 ফেব্রুয়ারি: প্রয়াত বাংলার টেবল টেনিসের 'ক্রীড়াগুরু' ভারতী ঘোষ। বয়স হয়েছিল 83 বছর ৷ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন গত কয়েকমাস ৷ সোমবার সকালে নার্সিংহোমেই শেষ নিঃশ্বাস ত্য়াগ করেন তিনি ৷ ক্রীড়াজগত এবং রাজনৈতিক জনপ্রতিনিধিরা তাঁর চিকিৎসায় এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না ৷ গত 20 ফেব্রুয়ারি তাঁর অসুস্থতার খবর শুনে চিকিৎসার যাবতীয় বন্দোবস্ত করে দেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। তাঁর হস্তক্ষেপেই ভারতী ঘোষকে মাটিগাড়ার নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়েছিল। ভারতী ঘোষের মৃত্যুতে শোকের ছায়া বাংলার ক্রীড়ামহলে।

রাজ্য সরকারের তরফে 2019 সালে 'বঙ্গরত্ন' এবং 2021 সালে ক্রীড়া দফতরের তরফে 'ক্রীড়াগুরু' সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন ভারতী ঘোষ। প্রশিক্ষকের ডিগ্রি না-থাকলেও ভারতী ঘোষ কেবল উত্তরের নন, রাজ্যের টেবল টেনিসের সেরা কোচ হিসেবে তাঁর স্বাক্ষর রেখে গেলেন। ভাইয়ের বন্ধুর সহযোগিতায় শিলিগুড়ির বিখ্যাত সেহগল ইনস্টিটিউটে ভরতি হয়েছিলেন ৷ হাতেগোনা কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে টেবল টেনিস খেলা শুরু করেছিলেন ৷ কোনও কোচ ছাড়াই শুরু হয় প্রশিক্ষণ ৷ প্রথমে সিনিয়রদের খেলা দেখে রপ্ত করে পরবর্তীতে মহাবীরস্থানের একটি কোচিং ক্যাম্পে ভরতি হয়েছিলেন তিনি। খুব অল্প সময়েই খেলাটিকে আয়ত্তে এনে ফেলেছিলেন ভারতী ঘোষ।

ভারতী ঘোষের মৃত্যুতে শোক বাংলার ক্রীড়ামহলে (ETV Bharat)

প্রশিক্ষণের ভাবনা শুরু তখন থেকেই ৷ তবে মাথায় ছিল ছোট-ছোট ছেলেমেয়েদের খেলা শেখানোর বিষয়টি। নিজেই শুরু করেন টেবল টেনিসের প্রশিক্ষণ দেওয়া । শিলিগুড়ি তো বটেই ৷ পাশাপাশি দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে শিশুদের টেবল টেনিসের প্রশিক্ষণ দিতেন কিংবদন্তি এই কোচ। বেতন দিতে অসমর্থ প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের বিনামূল্যে কোচিং করাতেও পিছপা হননি ৷ প্রতিবন্ধী খেলোয়াড়রাও তাঁর কাছে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন ৷ এভাবেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন পাঁচ দশক। নিজের খেলা এবং প্রশিক্ষণে যাতে কোনওরকম বাধা না-আসে, সেজন্য বিয়ে পর্যন্ত করেননি। 30 বছর বয়সে রেলে চাকরি পেলেও সমানতালে চালিয়ে গিয়েছিলেন প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ ৷ অবসর পরবর্তীতে পুরো সময়টাই ছেলেমেয়েদের প্রশিক্ষণের পিছনে ব্যয় করতেন ৷ অর্থাৎ, টেবল টেনিসকে সঙ্গী করেই কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের অধিকাংশ সময়। তাঁর হাতেই তৈরি 'অর্জুন' মান্তু ঘোষ, অলিম্পিয়ান সৌম্যজিৎ ঘোষের মত তারকারা ৷

দেশবন্ধু পাড়ায় একটি ছোট্ট ঘরে থাকতেন ভারতী ঘোষ ৷ নিজেই রান্না করতেন ৷ একা হাতে সব কাজ সামলে কোচিংয়ের জন্য সময়মতো পৌঁছনোয় কোনও কসুর ছিল না তাঁর। ভারতী ঘোষের হাতে গড়ে উঠেছেন অন্তত তিন হাজার প্য়াডলার। রাজ্য তো বটেই, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিনিধিত্ব করেছে অনেক তাঁর বহু ছাত্রছাত্রী। মান্তু ঘোষ বলেন, "ভারতী দি'র প্রয়াণ ক্রীড়াজগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর প্রশিক্ষণে অনেক তারকা টেবিল টেনিস খেলোয়াড় উঠে এসেছে।" মেয়র গৌতম দেব বলেন, "তাঁকে সুস্থ করার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বার্ধক্যজনিত অনেক সমস্যা ছিল। ক্রীড়াগুরু ও বঙ্গরত্ন সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। খুব খারাপ লাগছে।"

আরও পড়ুন:

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.