মালদা, 16 ডিসেম্বর: এক কৃষকের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রথম দফায় গায়েব হয়ে যাওয়া টাকা উদ্ধারের পর ফের ওই কৃষকের অ্যাকাউন্টে হামলা চালাল সাইবার অপরাধীরা ৷ ঘটনাটি ঘটেছ মালাদায় ৷ এমন কাণ্ড আগে কখনও ঘটেনি বলে জানাচ্ছেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দারা ৷ তাঁরা মানুষকে আরও সচেতন হওয়ার বার্তা দিচ্ছেন ৷
রতুয়া 2 নম্বর ব্লকের পিরগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা সুফুরুদ্দিন মিঞা ৷ গত মরশুমে চাষের আয়ের 2 লক্ষ টাকা জমা রেখেছিলেন তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৷ বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাংকের কুতুবগঞ্জ শাখায় রয়েছে তাঁর এই অ্যাকাউন্টটি ৷ গত অক্টোবর মাসে তিনি জমিতে শীতকালীন ফসলের চাষ করবেন বলে অ্যাকাউন্ট থেকে হাজার ত্রিশ টাকা তোলেন ৷ তাঁর হিসেবে তখনও তাঁর অ্যাকাউন্টে অন্তত 1 লক্ষ 70 হাজার টাকা থাকার কথা ৷ কিন্তু অ্যাকাউন্টের হিসাব দেখে তাঁর মাথায় হাত ৷ কারণ অ্যাকাউন্টে ছিল মাত্র 30 হাজার টাকা ৷ জুলাই মাস থেকে দফায় দফায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে ৷ ব্যাংক ম্যানেজারের পরামর্শে তিনি এই নিয়ে মালদা সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ৷ তদন্তে নেমে সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চ সুকুরুদ্দিনের খোওয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারও করে দেয় ৷
তিনি ফের তাঁর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সেই টাকা জমা করেন ৷ কিন্তু ক'দিন আগে পাসবই আপডেট করাতে ফের একই বিপত্তি ৷ দেখা যায় তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে আবার 10 হাজার টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে ৷ সুকুরুদ্দিন বলেন, "আমরা গরিব মানুষ ৷ চাষবাস করে সংসার চালাই ৷ অসময়ের জন্য ব্যাংকে টাকা জমা রাখি ৷ অক্টোবর মাসে দেখি, অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকা উধাও ৷ ব্যাংক ম্যানেজারের পরামর্শে সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানালে তারা টাকা উদ্ধারও করে দেয় ৷ ওই টাকা ফের ব্যাংকে জমা রাখি ৷ কিন্তু গত সোমবার ব্যাংকে গিয়ে দেখি, অ্যাকাউন্ট থেকে ফের 10 হাজার টাকা উধাও ৷ ভয়ে আমি সব টাকা তুলে নিয়েছি৷ আর ব্যাংকে টাকা রাখার সাহস পাচ্ছি না ৷ গোটা ঘটনা জানিয়ে আমি আবার সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ করেছি ৷"
বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাংকের কুতুবগঞ্জ শাখার ম্যানেজার রক্তিম রাজও এই ঘটনায় হতবাক ৷ তিনি আগের ঘটনার কথাও স্বীকার করেছেন ৷ আর জানিয়েছেন, এই বিষয়ে সাইবার ক্রাইম বিভাগের গোয়েন্দাদের কাছেও পরামর্শ চেয়েছেন তিনি ৷ জেলা সাইবার ক্রাইম ব্রাঞ্চের এক গোয়েন্দা জানান, এর আগে তাঁরা এমন ঘটনা দেখেননি ৷ ওই কৃষকের খোওয়া যাওয়া টাকা অনেক চেষ্টায় উদ্ধার করা হয়েছিল ৷ সাধারণত একবার টাকা উদ্ধারের পর সাইবার অপরাধীকে একই ব্যক্তিকে দ্বিতীয়বার টার্গেট বানায় না ৷ কিন্তু এক্ষেত্রে সেটাই ঘটেছে ৷ এবারও ওই টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছেন তাঁরা ৷
আরও পড়ুন: