মালদা, 22 মার্চ: পরপর দু‘টি কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় এক বধূকে খুন করার অভিযোগ উঠল শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে (Housewife Murder In Malda)। তবে এক্ষেত্রে স্বামীর কোনও দোষ নেই বলে দাবি করেছে মৃত বধূর বাপের বাড়ির লোকজন। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে চাঁচলের চণ্ডীপুর গ্রামে। মৃত বধূর নাম প্রতিমা থোকদার। বয়স 26 বছর। এই ঘটনায় শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে চাঁচল থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার পরিবারের লোকজন। ঘটনার পর এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা। তাদের খোঁজে পুলিশি তল্লাশি শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মৃত প্রতিমা থোকদারের বাবার বাড়ি চাঁচলের দারিয়াপুর গ্রামে। সাত বছর আগে দেখাশোনা করে তাঁর বিয়ে দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় চণ্ডীপুর গ্রামের বাসিন্দা মনোজ থোকদারের সঙ্গে। মনোজবাবু পেশায় ফেরিওয়ালা। অভিযোগ, বিয়ের পর সব কিছু ঠিক থাকলেও পরপর দুটি মেয়ের জন্ম দেওয়ার পরেই প্রতিমার উপর অত্যাচার শুরু করে তাঁর শ্বশুর, শাশুড়ি ও ননদ। এনিয়ে গ্রামে সালিশি সভাও বসে। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি। শেষ পর্যন্ত সোমবার রাতে শোওয়ার ঘর থেকে প্রতিমার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়ে দেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় চাঁচল থানার পুলিশ।
প্রতিমার মা অর্চনা কর্মকারের অভিযোগ, "ঘটনার আগে মেয়ে আমাকে ফোন করে। আমাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের কথা হয়। এরপর আমি ননদকে সঙ্গে নিয়ে পাশের পাড়ায় যাই। ফিরে এসে শুনি, প্রতিমা নাকি গলায় ফাঁস লাগিয়েছে। ওদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোনও অশান্তি ছিল না। কিন্তু ওর শ্বশুর, শাশুড়ি আর ননদ ওকে দেখতে পারত না। আমাকেও তারা হুমকি দিয়েছিল, ওরা প্রতিমাকে মেরে ফেলবে। আমরা মেয়ের সামাজিকভাবে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু দু‘টো মেয়ের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই ওর উপর অত্যাচার চালাত ওরা। তবে আমার জামাইয়ের কোনও দোষ নেই। আমি নিশ্চিত, প্রতিমাকে ওর শ্বশুর, শাশুড়ি আর ননদ গলায় ফাঁস লাগিয়ে খুন করেছে। আমরা এনিয়ে চাঁচল থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। আমি মেয়ের খুনের বিচার চাই।"
চাঁচল থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তবে অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহটি মঙ্গলবার মালদা মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে।