মালদা, 26 মে : প্রকাশ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হল এক যুবকের ৷ গতকাল রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার করিয়ালি বাজার এলাকায় ৷ এই ঘটনায় দুই অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ ৷ প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, মহিলাঘটিত কারণে ওই যুবককে গুলি করা হয়েছে ৷
নিহত যুবকের নাম চাঁদ সিংহ ৷ বয়স 22 বছর ৷ করিয়ালি বাজার এলাকাতেই তাঁর বাড়ি ৷ গতকাল রাত সাড়ে দশটা নাগাদ বাড়ির অদূরে রাস্তার উপর তাঁকে গুলি করা হয় ৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় চাঁদের ৷ খবর পেয়ে ঘণ্টাখানেক পর ঘটনাস্থলে যায় হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ ৷ পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসীরা পুলিশকে জানান, কার্তিক রবিদাস নামে এক যুবক চাঁদকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় ৷ তার সঙ্গে আরও একজন ছিল ৷ গুলি চালিয়েই তারা এলাকা থেকে সরে পড়ে ৷ সেই খবর পেয়েই হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ আশেপাশের সমস্ত থানা ও ফাঁড়িতে খবর দেয় ৷ শেষ পর্যন্ত সামসী এলাকা থেকে কার্তিক ও তার সঙ্গীকে আটক করে পুলিশ ৷ এদিকে উত্তেজিত মানুষজন আজ পাশের পাড়ার বাসিন্দা কার্তিকের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় ৷
পুলিশ ও চাঁদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রেমের আছিলায় কার্তিক পাড়ারই একটি মেয়েকে উত্যক্ত করত ৷ এর প্রতিবাদ করেছিলেন চাঁদ ৷ বাধা পেয়ে কার্তিক, চাঁদকে খুনের হুমকি দেয় ৷ এর আগেও তার বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ রয়েছে ৷ সেকথা জানিয়েছেন খোদ কার্তিকের বউদি চায়না রবিদাস ৷ তিনি বলেন, “বছর দেড়েক আগেও একজনকে দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করেছিল কার্তিক ৷ তারপর বাইরে চলে গিয়েছিল ৷ কয়েকদিন আগে বাড়ি ফিরেছে ৷ তারপরেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে ৷ ওর ভয়ে আমরা এখানে থাকি না ৷ পাবলিক যা পারবে তা করুক ৷”
এদিকে চাঁদের মা শিবাণী সিংহ বলেন, “ছেলেটা আগে চেন্নাইয়ে কাজ করত ৷ তিন বছর আগে বাবার মৃত্যুর পর ঘরে আসে ৷ আর সেখানে যায়নি ৷ কোনও ঝুটঝামেলাতেও থাকত না ৷ পাশের পাড়ার কার্তিকের সঙ্গে আমাদের পাড়ার দুটোর মেয়ের সম্পর্ক ছিল ৷ এনিয়ে ছেলে প্রতিবাদ করেছিল ৷ তারই জেরে গতকাল রাতে ছেলের বুকে ওরা গুলি করে দেয় ৷ সঙ্গে সঙ্গেই ছেলে মারা যায় ৷ যেভাবে আমার ছেলেকে মারল, আমি চাই, ওকেও এভাবে মেরে ফেলা হোক ৷ ও সুস্থ অবস্থায় আমার চোখের সামনে ঘুরবে, সহ্য হবে না আমার ৷”
আরও পড়ুন : পুরনো শত্রুতার জেরে মল্লিকপুরে গুলিবিদ্ধ যুবক
হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয়কুমার দাস জানিয়েছেন, এই ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে ৷ আপাতত তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷ গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ এদিকে এই ঘটনার পর করিয়ালি বাজার এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ির দাবি তুলেছেন স্থানীয় মানুষজন ৷