চেন্নাই, 1 নভেম্বর : দীর্ঘদিনের বিতর্কের পর ওড়িশাকে হারিয়ে দু'বছর আগেই GI (জিওগ্র্যাফিকাল ইন্ডিকেটর) তকমা পেয়েছিল পশ্চিমবঙ্গের রসগোল্লা । দেরিতে হলেও এবছর 30 জুলাই সেই তকমা (ট্যাগ) পায় ওড়িশার রসগোল্লাও । কিন্তু পিছু ছাড়েনি বিতর্ক ৷ ফের GI দপ্তরের দ্বারস্থ হয় উভয় রাজ্য ৷ শেষমেশ জিতল বাংলা ৷ ওড়িশার রসগোল্লার পক্ষে সওয়ালকারীরা দিতে পারল না উপযুক্ত যুক্তি ৷ তাই রসগোল্লা আর ওড়িশার নয় ৷ পশ্চিমবঙ্গের ৷
2017 সালের 14 নভেম্বর GI ট্যাগ পায় বাংলার রসগোল্লা । 2015 সালে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রসগোল্লার পেটেন্ট দাবি করে ওড়িশা সরকার । GI তকমা পেতে গতবছর ওড়িশার হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা । শেষ পর্যন্ত এবছর 30 জুলাই GI ট্যাগ পেল ওড়িশার রসগোলা । GI ডিপার্টমেন্টের তরফে জানানো হয়েছিল, ওড়িশার রসগোলা খুব নরম, রসালো । মুখে দেওয়া মাত্র মিলিয়ে যায় । অন্য যেসব জায়গায় রসগোল্লা তৈরি হয় সেগুলি আকারে গোল, সাদা ও স্পঞ্জ । তাই "ওড়িশার রসগোলা"-কে আলাদা করে GI তকমা দেওয়া হল ।
ওড়িশার তরফে যে রসগোল্লার পেটেন্ট চাওয়া হয়েছিল, তার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের বিস্তর অমিল রয়েছে । ওড়িশা যাকে রসগোল্লা বলে দাবি করে, তার স্থানীয় নাম ক্ষীরমোহন । এটি মূলত সুজি, ক্ষীর ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় । অন্যদিকে, বাংলার রসগোল্লার মূল উপাদান ছানা ও চিনির রস ।
প্রচলিত, তুলসীদাস রচিত রামায়ণের আগে 15 শতকে ওড়িশার কবি বলরাম দাসের রচনায় রসগোল্লার উল্লেখ পাওয়া যায় । ওড়িশা সরকার আগেই দাবি করেছিল, জগন্নাথ দেবের মাসির বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে আসার সময় রসগোল্লা বিতরণের প্রথা প্রচলিত আছে । অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের বক্তব্য ছিল, নবীনচন্দ্র দাসের হাতে জন্ম নেয় সাদা তুলতুলে মিষ্টি রসগোল্লা ।
তবে এতে তৃপ্তি পায়নি কেউ ৷ দীর্ঘ দড়ি টানাটানিতে উভয় রাজ্য নিজেদের দাবি নিয়ে ফের দ্বারস্থ হয় GI ডিপার্টমেন্টের ৷ কিন্তু উপযুক্ত নথি ও যুক্তি খাড়া করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হল ওড়িশা ৷ স্বাভাবিকভাবেই খারিজ হল আপত্তি ৷ গতকাল চেন্নাইয়ের GI দপ্তরের তরফে চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দেওয়া হল, রসগোল্লা একেবারে পশ্চিমবঙ্গের ।