কলকাতা, 14 এপ্রিল : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশিকা মেনে চলছে না রাজ্য । কোরোনা ভাইরাস মোকাবিলায় শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট উদাসীন । এমনই অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা লোকসভায় কংগ্রেস দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরি ।
কোরোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ত্রুটি তুলে ধরেন অধীর । বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিযোগ জানান । বলেন, "জনসংখ্যার নিরিখে কোরোনা ভাইরাস টেস্টের ক্ষেত্রে কয়েক লাখ যোজন দূরে রয়েছে রাজ্য । সারাদেশে শুধু নয়, পৃথিবীজুড়ে কোরোনার বিরুদ্ধে লড়তে গেলে শারীরিক পরীক্ষা অত্যন্ত জরুরি । আর তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফেও একাধিকবার জানানো হয়েছে । তার পরেও পশ্চিমবঙ্গের হুঁশ ফেরেনি । এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের মধ্যে শুরু হয়নি কোরোনা টেস্টের প্রক্রিয়া । কারও শরীরে কোরোনা বাসা বেঁধেছে কি না তা কেবলমাত্র শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত হয় । যত বেশি শারীরিক পরীক্ষা হবে ততই মানুষ জানতে পারবেন কোরোনার দাপট আদৌ কমল না বৃদ্ধি পেল । শুধু হটস্পট নয়, কোল্ড স্পটগুলিতেও পরীক্ষা করে দেখতে হবে সেখানে কোরোনার সংক্রমণ হয়েছে কি না ।"
উদ্বেগের সঙ্গে অধীর চৌধুরি বলেন, "সারা দেশে যখন কোরোনা চিহ্নিত করতে শারীরিক পরীক্ষা হচ্ছে তখন উল্লেখযোগ্যভাবে পিছিয়ে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ ।" পশ্চিমবঙ্গের প্রায় 9 কোটি মানুষের মধ্যে গড়ে মাত্র 2 হাজার মানুষের শারীরিক পরীক্ষা হয়েছে । কেরালায় সাড়ে তিন কোটি জনসংখ্যা । সেখানে 16 হাজার মানুষের কোরোনা ভাইরাসের পরীক্ষা হয়েছে ।"
অধীরের প্রশ্ন, "পশ্চিমবঙ্গ এত ঢিলেঢালা কেন? পশ্চিমবঙ্গের বিপদ নেই এমনটা মনে করেই কি কোরোনা ভাইরাস পরীক্ষার ক্ষেত্রে উদাসীন এই রাজ্য? ভয়ঙ্কর এই ভাইরাস কোথায় কখন প্রকাশ পাবে তা কেউ টের পাবেন না । বেশি বেশি করে শারীরিক পরীক্ষা করেই মানুষকে সুরক্ষিত হতে হবে । সে জায়গায় দাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের শারীরিক পরীক্ষার সংখ্যা অল্প ।"
পশ্চিমবঙ্গে অতি সক্রিয়তার সঙ্গে কোরোনা পরীক্ষার শুরু করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন জানান অধীর চৌধুরি । একইসঙ্গে কোরোনা সম্পর্কিত তথ্য স্পষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তরের কাছেও আবেদন জানান তিনি । অধীরের মতে, আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হবে । তাই এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের আসল চিত্র কী তা নিয়ে সঠিক তথ্য মানুষের কাছে প্রকাশ করার পরামর্শ দেন তিনি ।