কলকাতা, 13 জানুয়ারি: জারি রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত ৷ রাজ্যপাল তথা আচার্য সিভি আনন্দ বোসকে কড়া চিঠি দিল উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ গত 5 জানুয়ারি রাজভবনের পক্ষ থেকে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে চিঠি দেওয়া হয় ৷ এই চিঠি তারই জবাব বলে জানা গিয়েছে ৷ রাজভবনের চিঠিতে দফতরের মর্যাদা নষ্ট হচ্ছে বলেই মত বিকাশ ভবনের ৷ চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজভবনের চিঠিতে উল্লিখিত মন্তব্য সংবিধানের সংশ্লিষ্ট ধারার পরিপন্থী এবং আইন মোতাবেক রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে যোগাযোগ করার অধিকার উচ্চশিক্ষা দফতরের রয়েছে।
শুক্রবার রাজ্যপালের সিনিয়র স্পেশ্যাল সেক্রেটারিকে পালটা চিঠি দেন উচ্চশিক্ষা দফতরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার স্পেশ্যাল কমিশনার ৷ চিঠিতে জানানো হয়েছে, রাজভবনের চিঠিতে উল্লিখিত অযৌক্তিক মন্তব্যগুলি সংবিধানের 166(3) ধারার পরিপন্থী ৷ আবার যে আইনে আচার্য নিয়োগের বিধান রয়েছে, সেই আইনের বলেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ এরই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের কথা উল্লেখ করে জানানো হয়েছে, এই নির্দেশ উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার কথা বলছে ৷
এর পাশাপাশি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গও উঠেছে ৷ যাদবপুরে গত 24 ডিসেম্বর সমাবর্তন অনুষ্ঠান হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে ৷ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির তহবিল কীভাবে খরচ করা হচ্ছে, তা জানার এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে নির্দেশ দেওয়ার অধিকারও আইনবলে উচ্চশিক্ষা দফতরের রয়েছে ৷ তারই সঙ্গে কোনও আইন বা বিধিতে রাজ্যপালের সচিবালয়ের কোনও উল্লেখ নেই ৷ রাজ্যপালের পদটি সাংবিধানিক হলেও, আচার্য একটি বিধিবদ্ধ পদ ৷ তাই কোন বিধিবলে রাজ্যপালের সিনিয়র স্পেশাল সেক্রেটারি রাজ্যের সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে চিঠি পাঠিয়েছেন ? এই বিষয়ে জবাব তলব করেছে উচ্চশিক্ষা দফতর ৷ উত্তর পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে দফতর ৷
প্রসঙ্গত, গত 5 জানুয়ারি রাজ্যপালের সিনিয়র স্পেশ্যাল সেক্রেটারির তরফে রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল ৷ তাতে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে উচ্চশিক্ষা দফতর নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিভিন্ন নির্দেশ দিচ্ছে ৷ যা পালনের আগে অন্তর্বর্তী উপাচার্যদের আচার্যের দফতরের সঙ্গে কথা বলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৷ এর সঙ্গে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের বেশ কয়েকটি নির্দেশের উল্লেখও করা হয় ৷ এর সারমর্ম, রাজ্য সরকারের উপাচার্য নিয়োগ বা পুনর্নিয়োগের কোনও ক্ষমতা নেই ৷ উপাচার্য নিয়োগ, পুনর্নিয়োগ বা অস্থায়ীভাবে নিয়োগ বা অপসারণের ক্ষমতা শুধুমাত্র আচার্যের রয়েছে ৷
আরও পড়ুন: