কলকাতা, 15 নভেম্বর : সম্প্রতি গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত এক পরিবেশ সম্মেলনে অংশ নিয়ে রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, আগামী 9 বছরের মধ্যে অর্থাৎ 2030 সালের মধ্যে কলকাতার সমস্ত গাড়িকে সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত করার লক্ষমাত্রা স্থির করেছে রাজ্য সরকার। তবে এই শুধুমাত্র সিএনজি বা ব্যাটারি চালিত যানের উপর নির্ভরতা কতটা বাস্তবসম্মত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।
পরিবেশবান্ধব যান চলাচল প্রসঙ্গে ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, "শহর কলকাতাকে দূষণমুক্ত করতে এবং ডিজেল ও পেট্রোলের উপর নির্ভরশীলতা কমাতে শহরের বেশিরভাগ গাড়িকেই সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত করার ভাবনা রয়েছে অনেকদিন ধরেই। তাই পরিবহণ দফতরের পরিকল্পনা রয়েছে, আগামী 1 থেকে 2 বছরের মধ্যে শহরের পাবলিক ভেহিকেল ব্যবস্থা বা বাণিজ্যিক গাড়ির ক্ষেত্রে পরিবর্তন নিয়ে আসা। বেশিরভাগ গাড়িকেই সিএনজি বা ব্যাটারি চালিত গাড়িতে রূপান্তরিত করা হবে। এই নিয়ে বিভিন্ন সিএনজি যান প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে রাজ্যের আলেচনা চলছে ৷’’
আরও পড়ুন : School Reopen : মঙ্গলে স্কুল খোলার আগে চলছে স্যানিটাইজেশন
ফিরহাদ হাকিমের কথায়, "সিএনজি বা বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি যত বেশি পথে চলবে তাতে সুবিধা হবে সরকারের। কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের একটা বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ হয়ে পেট্রোল ও ডিজেল কিনতে। তাই যদি পেট্রোল ও ডিজেলের উপর নির্ভরতা কম করা যায় তাহলে অনেক অর্থ বেঁচে যাবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সৌরশক্তিকে ব্যাপক ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে। আমাদের রাজ্যে যে কয়লা মজুত রয়েছে, তাতে রাজ্যে বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না। তাই সাধারণ মানুষের উপর বাড়তি বোঝা না চাপিয়ে যান চালাতে বিকল্প উপায়ের কথা ভাবা হচ্ছে।"
তবে বিশেষজ্ঞরা অন্য মত পোষণ করছেন এই ব্যাপারে। অটোমোবাইল বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশবিদ অধ্যাপক প্রদীপকুমার বসু বলেছেন, "আগামী 9 বছরের মধ্যে শহরের রাস্তায় সিএনজি ও বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি নামাতে হলে প্রয়োজন উন্নত পরিকাঠামো। থাকতে হবে প্রচুর সংখক ব্যাটারি চার্জিং স্টেশন ও সিএনজি পেট্রোল পাম্প। বর্তমানে যে উপায়ে সিএনজি বাসগুলিতে জ্বালানি ভরা হয় সেই ব্যবস্থা অবলম্বন করলে সিএনজিতে বাস চালানোর স্বপ্ন কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। তাই পরিকাঠামো উপযুক্ত হলে আগামী 9 বছরের মধ্যে অন্তত সরকারি বাসগুলিকে সিএনজিতে রূপান্তরিত করা সম্ভব।" এই বিষয়ে তিনি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরে বলেছেন, "সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত যান তুলনামূলক কম দূষণ ছড়ায়। তবে দূষণ একদম ছড়ায় না সেটা এখনই বলা যাবে না। কিন্তু নিঃসন্দেহে দূষণের মাত্রা এতে কম হবে বাতাসে। যদিও ব্যাটারির মেয়াদ শেষ হলে সেগুলিকে বর্জন করার ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তবে এই ব্যাটারি চার্জিংয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও দূষণ ছড়ায়। তবে তা সরাসরিভাবে আমাদের চারদিকের বাতাসে ছড়াবে না।"