কলকাতা, 31 মে : মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশ করার জন্য লকডাউনের মধ্যেই প্রধান পরীক্ষকদের থেকে নম্বর সংগ্রহের কাজ শুরু করে দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । কিন্তু তারপরে অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে । এখনও নম্বর সংগ্রহের কাজ সম্পূর্ণ হয়নি । বিভিন্ন জটিলতায় সেই কাজ থমকে যায় । তাই বাকি থাকা কাজ সম্পূর্ণ করতে কড়া অবস্থান গ্রহণ করল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । আজ পর্ষদের তরফে নির্দেশিকা জারি করে জানানো হয়, 48 ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত উত্তরপত্র ও নম্বর প্রধান পরীক্ষকদের কাছে জমা দিতে হবে । পাশাপাশি পরীক্ষকদের কাছ থেকে উত্তরপত্র ও নম্বরের তালিকা পাওয়ার 48 ঘন্টার মধ্যে স্ক্রুটিনি করে নম্বরের তালিকা পর্ষদের কাছে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রধান পরীক্ষকদেরও ।
চলতি বছরের 18 ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছিল মাধ্যমিক পরীক্ষা । শেষ হয় 27 ফেব্রুয়ারি । পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল 10 লাখ 15 হাজার 888 জন । দ্রুত ফল প্রকাশের জন্য প্রথমদিকে জোরকদমে কাজ শুরু করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ । পরে কোরোনা ও তা থেকে বাঁচতে সরকার লকডাউন ঘোষণা করে । তারপরেও উত্তরপত্রগুলি মূল্যায়নের কাজ জারি রেখেছিলেন পরীক্ষকরা । কিন্তু মূল্যায়নের পর উত্তরপত্র সংগ্রহের কাজ থমকে যায় । অবশেষে 10 মে থেকে রাজ্যের যে সব জেলা কোরোনা মুক্ত বা যেখানে তুলনামূলক কোরোনা প্রভাব কম সেখানকার প্রধান পরীক্ষকদের থেকে নম্বর সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু করে পর্ষদ । তারপর ধীরে ধীরে কলকাতার মতো রেড জ়োন জেলা ও তার মধ্যে থাকা কনটেনমেন্ট এলাকাগুলি থেকেও উত্তরপত্র ও নম্বর সংগ্রহের কাজ শুরু করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ।
লকডাউনের মধ্যেই উদ্যোগ নিয়ে নম্বর সংগ্রহ ও ফল প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ চললেও পর্ষদ সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিকের ফল প্রকাশে এখনও অনেক দেরি আছে । কারণ এখনও বহু জায়গা থেকে উত্তরপত্র ও নম্বর সংগ্রহ করা বাকি আছে । এমনকী, বেশ কিছু জায়গায় উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজও বাকি আছে । বহু পরীক্ষক নিজের বাড়ি থেকে অনেক দূরে স্কুলে শিক্ষকতা করেন । লকডাউনে তাঁরা বাড়ি ফিরে গেছেন । উত্তরপত্র স্কুল যেখানে সেইখানেই রয়ে গেছে । এই ধরনের বিভিন্ন জটিলতায় এখনও পর্যন্ত প্রায় 60-70 শতাংশ নম্বর সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে বলে জানা যায় । বাকি থাকা নম্বর দ্রুত সংগ্রহের জন্য আজ পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকদের উদ্দ্যেশ্যে নির্দেশিকা জারি করল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় স্বাক্ষরিত ওই নির্দেশিকায় উত্তরপত্র ও নম্বর জমা করার সময়সীমা নির্ধারিত করে দেওয়া হয়েছে । পরীক্ষকদের এই নির্দেশিকা জারি 48 ঘণ্টার মধ্যে উত্তরপত্র ও নম্বর প্রধান পরীক্ষকদের কাছে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে । পাশাপাশি পরীক্ষকদের কাছ থেকে উত্তরপত্র ও নম্বর পাওয়ার 48 ঘণ্টার মধ্যে স্ক্রুটিনি করা নম্বরের তালিকা সল্টলেকের মধ্যশিক্ষা পর্ষদের দপ্তরে জমা দেওয়ার জন্য প্রধান পরীক্ষকদেরও নির্দেশ দেওয়া হয় । একইসঙ্গে উত্তরপত্র ও নম্বর জমা করতে যাওয়ার সময় নিয়োগপত্র বা জারি করা বিজ্ঞপ্তিটি সঙ্গেও রাখতে বলা হয়েছে পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষকদের ।