কলকাতা, 25 মার্চ: কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে আন্দোলন করছেন এ রাজ্য়ের সরকারি কর্মীরা (WB Government Employees)৷ আন্দোলনের পাশাপাশি অনশনও করছিলেন যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের বেশ কয়েকজন সদস্য় ৷ এবার অনশনকারীদের শরীরের কথা বিবেচনা করে শনিবার থেকে অনশন প্রত্য়াহার করার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা। তবে অনশন (Hunger Strike) উঠে গেলেও তাঁদের আন্দোলন জারি থাকছে বলেই জানিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। প্রসঙ্গত, আন্দোলনকারীদের অনশন প্রত্য়াহারের জন্য় এর আগে আবেদন করেছিলেন খোদ রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শেষ পর্যন্ত টানা 44 দিন পর অবশেষে অনশন তুলে নিল সরকারি কর্মচারীরা ৷
কেন্দ্রের সমান মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলন করছিলেন এ রাজ্য়ের সরকারি কর্মীরা। প্রায় 58 দিন ধরে শহিদ মিনারের সামনে তিন দফা দাবি নিয়ে ধরনায় বসে আছেন রাজ্য় সরকারি কর্মচারীরা (WB Government Employees)। সেখানেই বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মী অনশনেও বসেছিলেন। তবে অনশনের জেরে দিনের পর দিন অসুস্থ হয়ে পড়ছিলেন একের পর এক আন্দোলনকারী। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করার পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের রাজ্য কনভেনর ভাস্কর ঘোষ। তবে সেইদিন প্রাথমিক চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে গেলেও, পরদিন ফের তাঁর জ্ঞান হারিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখান থেকে শনিবার ছুটি পান ভাস্কর।
অন্যদিকে, অন্যান্য অনশনকারীদের শরীরও ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। ইতিমধ্য়ে অনেকেই অসুস্থ হয়ে হাসপেতেও ভর্তি হয়েছেন ৷ যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের সদস্য়দের দাবি, এই পরিস্থিতিতে তাদের এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া বেশ চ্যালেঞ্জের হয়ে দাঁড়াচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে এই অনশন আন্দোলন প্রত্য়াহার করে নেওয়া হয়।
এদিন, যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের সদস্য়রা ডাবের জল খেয়ে এই অনশন তুলে নেন। পাশাপাশি তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অনশন উঠে গেলেও এই ধরনাবস্থান তাঁরা জারি রাখছেন। ডিএ-সহ অন্য়ান্য় দাবিতে আন্দোলন চলবেই ৷ চলবে অবস্থান বিক্ষোভও ৷ ভাস্কর ঘোষ বলেন,"চিকিৎসকরা জানিয়েছেন এই অনশনের ফলে আমাদের লিভার এবং কিডনিতে সমস্যা হচ্ছে। তবে এসবকে আমরা পাত্তা দিচ্ছি না। বর্তমানে আমার যে ওজন তা আমাকে 23 বছর আগের জায়গায় ফিরিয়ে দিয়েছে। তাই সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। তবে এই আন্দোলন থেকে আমাদের কাছে একটা জিনিস স্পষ্ট, এই সরকারের এখন পিঠ ঠেকে গিয়েছে। সরকার একসময় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ভয় দেখাত। এখন তার উলটো হচ্ছে।" যৌথ সংগ্রামী মঞ্চের দাবি, রাজ্য় সরকারি কর্মীরা যেভাবে অটুট আছেন তাতেই সরকার ভয় পেয়েছে ৷ তবে সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও এই আন্দোলনের পাশে থাকার জন্য়ও আবেদন করেছেন তারা ৷
আরও পড়ুন: 'সিপিএম সবথেকে বড় দালাল !' তোপ মদনের
অন্যদিকে আগামিকাল থেকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের পক্ষ থেকে একাধিক কর্মসূচির কথা ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি 29 মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শহিদ মিনারে একটি মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীরা তাঁদের মঞ্চ ছাড়বেন কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল। এদিন ভাস্কর ঘোষ বলেন,"মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন তিনি দিল্লিতে গিয়ে ধর্নায় বসবেন, আমরা বলেছিলাম তার উলটো দিকে আমরা বসব। তাই উনি আর সাহস করে উঠতে পারছেন না। তৃণমূল এখন শহিদ মিনারে সভা করবে। তবে তার জন্য আমাদের এখান থেকে উঠে যাওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। আদালতের নির্দেশে আমরা এখানে বসে আছি ৷ আদালত উঠতে বললেই আমরা উঠে যাব।"