কলকাতা, 3 সেপ্টেম্বর: লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে বিজেপিকে হঠানোর লক্ষ্যে একজোট হয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম ও তৃণমূলের মতো বেশ কয়েকটি বিরোধী দল ৷ সম্প্রতি মুম্বইয়ে 'ইন্ডিয়া' জোটের বৈঠকে, তার আগে জুলাইতে কর্ণাটকে এবং তারও আগে জুন মাসে পটনায় বিরোধী মঞ্চে দেখা গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় ও কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধিকে ৷ তাঁদের সঙ্গে ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় বামনেতারাও ৷
এমন জটিল রাজনৈতিক সমীকরণকে হাতিয়ার করে লাগাতার আক্রমণ করে চলেছে বিজেপি। আর সেই সূত্র ধরে রাজ্যে ফিরেছে বাম আমলে বহু চর্চিত কুস্তি-দোস্তির চেনা স্লোগান। একসময় কংগ্রেস এবং বামেদের সখ্যকে ব্যাখ্যা করতে এই শব্দবন্ধের আশ্রয় নিতেন তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। আজ বদলে যাওয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাঁদের বিরুদ্ধেই সেই স্লোগানকে ব্যবহার করে চলেছেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ অনেকে।
রাজ্যে বাম, কংগ্রেস প্রকাশ্যেই তৃণমূলের বিরোধিতা করে ৷ বাম-কংগ্রেসের অভিযোগ, প্রকাশ্যে বিরোধিতা করলেও তৃণমূল গোপনে বিজেপিকে সমর্থন করে ৷ বিরোধিতার ভেক ধরে ঘুরপথে গেরুয়া শিবিরের হয়েই কাজ করে বাংলার শাসকদল ৷ এমনই তরজার মধ্যে গত 31 অগস্ট ও 1 সেপ্টেম্বর মুম্বইয়ের জোট-বৈঠকে এসেছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি ৷ সেখানে যোগ দিতে যাওয়ার আগে 28 অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে সিপিএমকে তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কংগ্রেসও তাঁর আক্রমণের হাত থেকে রেহাই পায়নি ৷
বাংলায় কংগ্রেস এবং বামেদের রাজনৈতিক সমীকরণ এমনিতেই সম্পূর্ণ ভিন্ন। 5 সেপ্টেম্বর ধূপগুড়ি বিধানসভায় উপ-নির্বাচন ৷ এখানে বামফ্রন্ট প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র চৌধুরীকে সমর্থন জানিয়েছে কংগ্রেস ৷ তাই নির্বাচনী প্রচারে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের সঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে দেখা যায় একই মঞ্চে ৷ দু'জনেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাক্য বাণে বিদ্ধ করেছেন ৷ এর আগে সেই 2016 সাল থেকে একাধিক বড় নির্বাচনে জোট করেছে এই দুটি দল।
1 সেপ্টেম্বর ধূপগুড়িতে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে সেলিম সাফ বলেন, "ধূপগুড়ির খবর ধূপগুড়ি থেকে হবে ৷ মুম্বইয়ের খবর হবে মুম্বই থেকে ৷" তিনি আরও জানান, লড়াইটা বিজেপি বিরুদ্ধে ৷ আরও বেশি করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ৷
আরও পড়ুন: ভোটে জিতলে দলত্যাগ করবেন না, মঞ্চে প্রার্থীকে দিয়ে শপথ পাঠ সেলিমের
এর আগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাস জয়ী হন ৷ সেবার সিপিএম কোনও প্রার্থী না দিয়ে কংগ্রেসকে সমর্থনের পথ বেছে নিয়েছিল ৷ পরে তৃণমূলর নবজোয়ার যাত্রায় সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে দলীয় পতাকা নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন বাইরন।