কলকাতা, 21 সেপ্টেম্বর: ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী কলকাতার নাখোদা মসজিদের প্রধান ইমাম নিয়োগের পরও তাঁর পদ খারিজ হয়েছে। কারণ, এই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গ ওয়াকফ বোর্ড হস্তক্ষেপ করেছে বলেই খবর ৷ যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। ওয়াকফ বোর্ডের নির্দেশে নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে নাখোদা মসজিদ ট্রাস্ট বা মুতাওয়াল্লি কাচ্চি মেমন সম্প্রদায়।
সম্প্রতি নাখোদা মসজিদ ট্রাস্ট বা মুতাওয়াল্লি কাচ্চি মেমন সম্প্রদায় বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়েছে, নাখোদা মসজিদের ট্রাস্টিরা মওলানা আফরোজ আহমেদকে নাখোদা মসজিদের পেশ (প্রধান) ইমাম হিসাবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মওলানা সাবির সাহেবের মৃত্যুর পর থেকে পেশ ইমামের পদটি শূন্যই ছিল। ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠিত নিয়ম, বিধিবিধান ও ঐতিহ্য অনুযায়ী সকল নামাজ বা সকল ধর্মীয় দায়িত্ব পালনের জন্য আল্লামা আফরোজ আহমেদকে পেশ (প্রধান) ইমাম হিসাবে নিযুক্ত করা হয়। মওলানা আফরোজ আহমেদ আগামী 21 সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার মাগরিবের (সন্ধ্যা) নামাজ থেকে তাঁর দায়িত্ব শুরু করবেন বলেও জানা গিয়েছে।
এই বিজ্ঞপ্তির পরই 22 সেপ্টেম্বর ওয়াকফ বোর্ড ওই নির্দেশ স্থগিত রাখার পালটা নির্দেশ দিয়েছে। বোর্ডের চিফ একজিকিউটিভ অফিসার আহসান আলী তাঁর নির্দেশে জানিয়েছেন, নাখোদা মসজিদের ট্রাস্ট মুতাওয়াল্লি কাচ্চি মেমন সম্প্রদায়ের সদস্য সংখ্যা কম রয়েছে। আইন অনুযায়ী সাত সদস্যের কমিটির মধ্যে অনন্ত পাঁচ জন সদস্য না থাকলে এই নিয়োগ মসজিদ ট্রাস্ট করতে পারে না। ফলে, এই নিয়োগ স্থগিত রাখতে হবে।
বিষয়টি মেনে নিলেও নাখোদা মসজিদ ট্রাস্টের তিন সদস্যের মধ্যে নাসের ইব্রাহিম বলেন, "ট্রাস্টের শূন্য পদ পূরণে গত 7 জুলাই 2022 সালে ওয়াকফ বোর্ডে আবেদন করা হয়েছিল। বছর পেরলেও সেই আবেদন নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করেনি ওয়াকফ বোর্ড। এদিকে পেশ ইমাম নেই বহুদিন। তাহলে আমাদের আবেদন ফেলে রাখার মানে কী ? নিজেরাই টালবাহানা করে ইমাম নিয়োগেও স্থগিতাদেশ।"
আরও পড়ুন: শব্দবাজি নয়, সবুজ বাজি বিক্রির অনুমতি দিতে জেলাশাসকদের চিঠি নবান্নর
নেতাজি ইন্ডোরে ইমাম-মুয়াজ্জেম সভার পরে নাখোদা মসজিদ নিয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে দলবাজি শুরু হয়েছে। রাজনীতির রঙও লেগেছে। জাতীয় কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের কয়েকজন নেতা বিষয়টি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আবার বিষয়টি নিয়ে টুইট করেছেন। তবে সূত্রের খবর, নাখোদা মসজিদের প্রধান ইমাম নিয়োগ হলে গোষ্ঠী সংঘর্ষ বাধত। পুলিশও সতর্ক ছিল। কিন্তু, ওয়াকফ বোর্ডের স্থগিতাদেশে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গিয়েছে।