কলকাতা, 9 জানুয়ারি: খ্রিস্টান বৃদ্ধের দেহ চলে গেল হিন্দু পরিবারের হাতে। তপসিয়া পিস ওয়ার্ল্ডে (Topsia Peace World) হুলুস্থূল। নিমতলা মহাশ্মশানে দাহ করার আগে কোনওমতে বিপত্তি ঠেকানো গেলেও খ্রিস্টান পরিবারের তরফে তপসিয়া থানায় দায়ের করা হয় লিখিত অভিযোগ (Dead bodies exchanged between families) ৷ এরপর পুলিশি হস্তক্ষেপে দেহদু'টি সংশ্লিষ্ট পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, জবাব চেয়ে পিস ওয়ার্ল্ডে কর্তব্যরত কলকাতা কর্পোরেশনের সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা রিপোর্ট চেটে পাঠিয়েছেন ইতিমধ্যেই। পাশাপাশি দুই পৌরকর্মীকে শোকজ করা হয়েছে এই ঘটনায়।
এদের মধ্যে একজন ডোম এবং অন্যজন সহায়ক ৷ ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত না-হওয়া পর্যন্ত দু'জনকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে . জানা গিয়েছে, মৃত খ্রিস্টান বৃদ্ধের নাম পি ক্রুপা রাও (90) ৷ হিন্দু রীতিনীতি মেনেই এদিন নিমতলা মহাশ্মশানে চালির ওপর শোয়ানো হয় তাঁর দেহ ৷ অন্যদিকে পি ক্রুপা রাওয়ের দেহ তন্ন তন্ন করে খুঁজে বেড়ায় তার ছেলে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। তোলপাড় হয়ে যায় পিস ওয়ার্ল্ড। শত খোঁজাখুঁজির পরও দেহ না-পেয়ে তপসিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় খ্রিস্টান পরিবারের তরফে ৷ আসরে নেমে তপসিয়া থানা কর্পোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে ৷ শেষমেশ দাহ হওয়ার ঠিক আগে ভাগ্যক্রমে প্রিয়জনের মৃতদেহ নিমতলা মহাশ্মশানে খুঁজে পায় ওই খ্রিস্টান পরিবার ৷ যদিও মর্গ থেকে দেহ উধাও কীভাবে হল, তার সদুত্তর দিতে পারেনি কেউ।
ঘটনায় তপসিয়ার কলকাতা কর্পোরেশনের মর্গ 'পিস ওয়ার্ল্ড'-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। লালবাজার সূত্রে খবর, গত শুক্রবার দুপুরে বাড়িতেই মারা যান পি ক্রুপা রাও । পরিবারের অনেকেই কলকাতার বাইরে থাকেন। তাদের ফেরার জন্য অপেক্ষা করতেই বৃদ্ধের দেহ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখেন। এদিন কবর দেওয়ার আগে দেহ নিতে এসে আর বৃদ্ধের দেহের খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার ৷ স্বভাবতই তুমুল হইচই বেঁধে যায় সেখানে।
আরও পড়ুন: ময়নাতদন্তের আগেই মৃতদেহ পড়ুয়াদের প্রশিক্ষণ টেবিলে, আরজি করে চাঞ্চল্য
কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, খ্রিস্টান বৃদ্ধের দেহ তুলে দেওয়া সাত্যকি ভট্টাচার্যের পরিবারের হাতে ৷ ওই পরিবারের লোকজনও দেহ নেওয়ার সময় কেন চিনতে পারলেন না, তা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ঘটনার কারণ জানতে চেয়ে পিস ওয়ার্ল্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাব রেজিস্ট্রারের কাছে লিখিতভাবে কারণ জানতে চেয়েছেন কলকাতা কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা।