চন্দননগর, 5 নভেম্বর: আলোকসজ্জার পাশাপাশি প্রতিমার ডাকের সাজ মন কাড়বে দর্শনার্থীদের । মণ্ডপে থিমের বাহার থাকলেও চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী প্রতিমায় ট্র্যাডিশন আজও বজায় রেখেছেন পুজো উদ্যোক্তারা । চিরাচরিত শোলার কাজে আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে প্রতিমায় ।
মহিষাসুরমর্দিনী থেকে শুরু করে মা দুর্গার পরিবার ও শিবের বিভিন্ন রকম রূপ তৈরি করা হয়েছে শোলার সাজে । চন্দননগর জগদ্ধাত্রী সাজ আসে বর্ধমান-কাটোয়ার বনকাপাসী গ্রাম থেকে ৷ 10টি মূল শিল্পী ছাড়াও 200 উপর কারিগর এই কাজ করেন । শোলা কেটে কলকা তৈরি করে সেই সাজের মধ্যেই পৌরাণিক কাহিনি তুলে ধরা হয় । বর্তমানে শোলার কাজের থিমে আকর্ষণ বাড়ায় একাধিক পুজো কমিটি উৎসাহ পেয়েছে ।
চন্দননগর ভদ্রেশ্বর মিলিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়াও 200 উপর জগদ্ধাত্রী পুজো হয় । প্রতিমার উচ্চতা 10 থেকে 26 ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে । মা জগদ্ধাত্রীকে কাপড়ের উপর সাদা ও রঙিন সোলার সাজ পড়ানো হয় । এক একটি পুজো কমিটি লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে এই সাজের জন্য খরচ করে । যা দেখতে ভিড় জমায় দেশ বিদেশের মানুষ ।
এই বিষয়ে শোলা শিল্পী হেমন্ত প্রধান বলেন, "দীর্ঘদিন ধরে এই চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর সোলার সাজ করি । শুধু চন্দননগরই না, কৃষ্ণনগরেও এই শোলার সাজ করে থাকি । সারাবছর এটাই আমাদের পেশা । আর জগদ্ধাত্রী পুজোর কিছুদিন আগে এখানে এসে প্রতিমার সাজ সম্পূর্ণ করি ।আমরা 20টা প্রতিমার ডাকের সাজ করছি এ বছর । শোলার কলকা ও জোড়ি ছাড়াও থিমের কাজ রয়েছে । একাধিক প্রতিমায় সোলার কাজে যে হারে পরিশ্রম লাগে সে হারে পয়সা পাওয়া যায় না । তা সত্ত্বেও বংশ পরম্পরায় প্রায় একশো বছর ধরে আমরা কাজ করে চলেছি । সরকারি তরফে আমরা সেভাবে সাহায্য পাই না ।"
প্রধান শিল্পী দিলীপ ঘোষের কথায়, "দু'তিন বছর ধরে প্রতিমায় শোলার সাজের থিমের প্রচলন বেড়েছে । পুজো কমিটির চাহিদা অনুযায়ী আমরা থিমের কাজ করে থাকি । আগের বছরে সোলার সারদা দেবী রামকৃষ্ণের থিম ছিল । এ বছরে মা দুর্গার সঙ্গে সরস্বতী লক্ষ্মী কার্তিক গণেশের থিম করা হয়েছে লালবাগানে । চন্দননগরে আমি একাই 12 থেকে 14 লাখ টাকার সোলার কাজ করছি । তবে যে হারে শোলার দাম ও শিল্পীদের মজুরি বেড়েছে সে তুলনায় লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না ।"