কলকাতা, 24 ডিসেম্বর: মানুষ দু'টি ৷ কিন্তু, তাঁদের ধরন, গড়ন সবই এক ! কারণ, তাঁরা যমজ (Twin Brothers) ৷ ছোটবেলা থেকেই তাঁরা একরকম ৷ তাঁদের দুই ভাইকে আলাদা করে চিনতে গিয়ে খাবি খান সহপাঠী, বন্ধুরা ৷ গুলিয়ে যায় অধ্যাপকদেরও ৷ সবথেকে বড় কথা হল, তাঁরা দু'জনই কৃতী ছাত্র ৷ শনিবার ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) সমাবর্তন অনুষ্ঠান (Convocation Ceremony) ৷ সেই মঞ্চেই কৃতীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শংসাপত্র ৷ সেই তালিকায় ছিলেন শুভেন্দু ও দিব্যেন্দু প্রামাণিকও ৷ প্রথমজন ভূতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র ৷ আর দ্বিতীয়জন স্থাপত্যবিদ্যা বিভাগের ইঞ্জিনিয়র ৷ তাঁদের দু'জনেরই প্রাপ্ত নম্বর 9.54 ! দু'জনই নিজের নিজের বিভাগে হয়েছেন সেরা, পেয়েছেন গোল্ড মেডেল (Gold Medals) !
সমাবর্তন উপলক্ষে এদিন সকাল থেকেই ঘটনাবহুল ছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর ৷ রাজনীতি, বিতর্ক, আন্দোলন, বিক্ষোভ সবকিছু পার করেই সারা হয় সমাবর্তনের পালা ৷ এদিকে, রাত পোহালেই বড়দিন ৷ ক'দিন পর শুরু হচ্ছে ইংরেজি নতুন বছর ৷ সব মিলিয়ে প্রাচীন, ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ধরা পড়ে উৎসবের আমেজ ৷ সেই আবহেই শুভেন্দু আর দিব্যেন্দুর সঙ্গে আলাপ হয় ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির ৷ তিনজনে মিলে বেশ খানিক্ষণ চলে জমাটি আড্ডা ৷
আরও পড়ুন: যাদবপুরের সমাবর্তনে এসে বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা রাজ্যপালের
কথায় কথায় দুই ভাই জানালেন, তাঁদের বয়সের ফারাক মাত্র পাঁচ মিনিট ৷ ছোট থেকেই দু'জনে একসঙ্গে পড়াশোনা, খেলাধুলো করেন ৷ এটাই তাঁদের অভ্য়েস ৷ তবে দু'জনের পড়াশোনার বিষয় আলাদা ৷ কিন্তু, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এক ৷ ফলে এখনও অবধি নানা সময় ঘটেছে নানা মজার ঘটনা ৷ নিজের ছাত্রকে চিনতে ভুল করে বহুবার অপ্রস্তুতে পড়তে হয়েছে অধ্যাপকদের ৷ তবে, সেসবের পালা এবার হয়তো কিছুদিনের জন্য হলেও বন্ধ হবে ৷ কারণ, শুভেন্দু পাড়ি দেবেন জার্মানি ৷ সেখান থেকেই ভূতত্ত্বে উচ্চশিক্ষার পাঠ নেবেন তিনি ৷ গবেষণাই শুভেন্দুর লক্ষ্য ৷
অন্যদিকে, দিব্যেন্দু ইঞ্জিনিয়র ৷ তাঁর বিষয় স্থাপত্যবিদ্যা ৷ তিনি তাঁর পরবর্তী পড়াশোনা করবেন আইআইটি খড়্গপুরে ৷ ফলে, এরপর বেশ কিছু সময়ে জন্য আলাদা হয়ে যাবে দুই ভাইয়ের রাস্তা ৷ কিন্তু, তাঁদের বিশ্বাস, পথ আলাদা হলেও তাঁরা দু'জনই নিজের নিজের লক্ষ্যপূরণে সফল হবেন ৷ একই বিশ্বাস রয়েছে শুভেন্দু, দিব্য়েন্দুর বাবা-মায়েরও ৷ দুই ছেলের কৃতিত্বে আজ তাঁরা বেজায় খুশি, গর্বিত ৷
মজার বিষয় হল, দুই ভাইয়ের চেহারা, আচরণ সবকিছু এক হলেও তাদের চশমার ফ্রেম দু'টি আলাদা রঙের ৷ হঠাৎ কেন এমন 'বিভেদ' ? ইটিভি ভারতের প্রতিনিধির প্রশ্ন শুনেই হাসতে শুরু করে দেন শুভেন্দু ও দিব্যেন্দু ৷ কিন্তু, রহস্য বজায় রেখে উত্তর এড়িয়ে যান তাঁরা ৷ তাহলে কি আশপাশের মানুষকে কিছুটা সুবিধা করে দিতেই এই চশমা-সঙ্কেত ! এর উত্তর অবশ্য পাইনি আমরা ৷