কলকাতা, 23 অক্টোবর: কখনও যানজটের যুক্তি দিয়ে আবার কখনও ব্রিজের স্বাস্থ্য রক্ষার খাতিরে কিংবা রাস্তা মেরামতের জন্য বন্ধ হয়েছে একের পর এক ট্রাম রুট । কিন্ত একটা সময় পর্যন্ত এই বন্ধ হওয়া রুটগুলির মধ্যে কয়েকটি বেশ লাভবান ছিল । বছর দুয়েক আগে আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝ়ড় আমফানের পর যে দু'টি রুট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী 36 নম্বর রুট । সেই রুটকে পুনরায় চালুর দাবি জানিয়ে অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ জানালেন ট্রামপ্রেমীরা।
2020 সালের আমফান ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত দু'টি ট্রাম রুট আবার চালু করা হবে বলে জানিয়েছিল রাজ্য পরিবহণ দফতর । প্রাক্তন পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও কথা দিয়েছিলেন দুর্গাপুজোর আগে চালু করা হবে খিদিরপুর-এসপ্ল্যানেড এবং বিধাননগর-রাজাবাজার ট্রাম রুট । তবে দুর্গাপুজো পেরিয়ে কালীপুজো এসে গিয়েছে ৷ ওই রুটে এখনও দেখা মিলল না ট্রামের । বারে বারে পরিবহণ দফতরের কাছে দরবার করা সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি প্রতিবাদে সামিল হওয়া নাগরিকদের।
বর্তমান পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী আশ্বস্ত করেছিলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে দেখবেন কী করা যায় । তবে বিষয়টি ওখানেই থমকে রয়েছে । স্বাভাবিকভাবে রুটটি পুনরায় চালু করা প্রসঙ্গে সরকারের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ট্রামপ্রেমীরা ।
আরও পড়ুন: কলকাতায় বিপন্ন পরিবেশবান্ধব ট্রাম, গণপরিবহণকে ফেরাতে জনস্বার্থ মামলা হাইকোর্টে
এতদিন ধরে অব্যবহৃত 36 নম্বর রুটের ট্রামলাইন ধরে যত দূর চোখ যায় শুধুই ঘাস । কয়েকটি জায়গা দিয়ে উঁকি মারছে ট্রামলাইন । অনেক আগে খুলে নেওয়া হয়েছে তামার ওভারহেড তার । তাই এবার শহরের ট্রামপ্রেমীরা পরিবহণ বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে নিজেরাই লাইনের জঞ্জাল পরিষ্কার করলেন, ঘাস কাটলেন ।
কলকাতা ট্রাম প্রেমী সংগঠন ক্যালকাটা ট্রম ইউজার্স অ্যাসোসিয়েশন-এর (Calcutta Tram Users Association) সম্পাদক মহাদেব শী বলেন, "পুজোর আগে এই দু'টি ট্রাম রুট চালু হওয়ার কথা ছিল । কিন্তু পুজো কেটে গেলেও এই দু'টি রুট চালু হল না । কবে চালু হবে তারও কোনও উত্তর নেই । পরিবহণ বিভাগ বলছে, ট্রাম চালিয়ে কোনও লাভ নেই । কিন্তু ট্রাম চালু না করলেলাভ হবে কীভাবে ? তাই এগুলো সব আসলে ট্রাম না চালানোর অজুহাত । আসলে ট্রাম রুটগুলিকে পুনরায় মেরামত করে ট্রাম চালাবার সদিচ্ছা রাজ্য পরিবহণ দফতরের নেই । আর এরই প্রতিবাদে সামিল হয়েছি আমরা ।"