কলকাতা, 4 জুলাই: রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিল শাসকদল তৃণমূল ৷ এই চিঠিতে রাজভবনের বিরুদ্ধে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ করা হয়েছে ৷ একইসঙ্গে তাদের প্রশ্ন, যখন রাজ্যে নির্বাচনী বিধি লাগু রয়েছে, সেখানে কীভাবে সরকারি গেস্ট হাউসে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ?
রাজ্যের শাসকদলের অভিযোগ, আইন-বহির্ভূত কাজ করছেন রাজ্যপাল ৷ অবাঞ্চিত বিবৃতি দিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন তিনি। সোমবার রাতে রাজ্যের শাসকদলের পক্ষ থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীবা সিনহার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, রাজ্যপাল নিজেই নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন ৷
তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি সুব্রত বক্সি নির্বাচন কমিশনকে লেখা চিঠিতে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে চার দফা অভিযোগ এনেছেন ৷ অভিযোগে জানানো হয়েছে, রাজ্যপাল নিজে সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা, সরকারি বাসভবন ব্যবহার করে বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন ৷ এই ঘটনা তৃণমূল কংগ্রেসের মতে নির্বাচনী বিধি ভঙ্গের সামিল ৷
আরও পড়ুন: পৌরসভার ভোটে শাসকদলের হয়ে ছাপ্পার কথা স্বীকার তৃণমূল ক্যাডারের, ভাইরাল পোস্ট শুভেন্দুর
পাশাপাশি রাজ্যপাল কীভাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের ভূমিকা নিয়ে সরব হতে পারেন তা নিয়েও সরব তৃণমূল। শাসকদলের প্রশ্ন, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার নামে আদতে রাজ্যপালের উদ্দেশ্য কী ? এই চিঠিতে আরও দাবি করা হয়েছে, রাজভবনে তথাকথিত একটি পিস রুম তৈরি করেছেন রাজ্যপাল, যা কখনওই নিয়মের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় ৷ কারণ, নির্বাচন ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে প্রশাসন- সবটাই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে চলে যায় ৷ আর কমিশনকে এই ক্ষমতা দিয়েছে ভারতীয় সংবিধান ৷
এখানেই শেষ নয় তৃণমূল এই চিঠিতে অভিযোগ করেছে, নির্বাচন কমিশনকে উপেক্ষা করে রাজ্যপাল নির্বাচন ঘোষণার পর বিডিওদের কাছ থেকে মনোনয়ন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছেন ৷ চিঠিতে রাজ্যের শাসকদলের তরফ থেকে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে, রাজ্যপালের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং মন্ত্রকের বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে ৷ বিজেপি কর্মীদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য রাজ্যপালের বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সির সঙ্গে বৈঠক এই মুহূর্তে নির্বাচনী বিধিলঙ্ঘন বলেই মনে করছে শাসকদল ঘাসফুল ৷
আরও পড়ুন: '48 ঘণ্টা সময়, এক ফোঁটা রক্ত যেন না ঝড়ে' কমিশনকে কড়াবার্তা রাজ্যপালের
এদিন রাজ্যের শাসকদলের তরফ থেকে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর অভিযোগ তোলা হয়েছে ৷ তৃণমূলের অভিযোগ, নির্বাচন চলাকালীন সমান্তরাল প্রশাসন চালিয়ে নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন রাজ্যপাল ৷ বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে আইনবিরুদ্ধ বলে মনে করছে রাজ্যের শাসক দল ৷ প্রসঙ্গত, মনোনয়ন পর্বের পর থেকেই যেভাবে রাজ্যপাল সক্রিয় হয়েছিলেন, তা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এবার নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া এই চিঠির মাধ্যমে কার্যত রাজ্যপালের এক্তিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিল রাজ্যের শাসক দল ৷