কলকাতা, 2 জানুয়ারি: ঠিক যেন বিরিঞ্চিবাবার গল্প । সুকিয়া স্ট্রিট মোড়ের কাছে মা শ্যামাসুন্দরীর মন্দির । স্থানীয় বাসিন্দা-সহ বহু মানুষের বিক্ষোভে বছরের শুরুতেই দিনভর হইচই ।
শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে মন্দিরের ভেতরের পুজো চালু থাকলেও বহিরাগত দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ আপাতত বন্ধ । সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বৈঠক হবে । তারপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত ।
কী হয়েছে ?
সুকিয়া স্ট্রিট মোড়ের কাছে হরিনাথ দে রোডে শ্যামাসুন্দরী মন্দির । কর্তৃপক্ষ শিয়ালদা থেকে এসে কয়েকবছর এখানে মন্দির বসিয়েছেন । কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে এক ‘বিশেষ’ প্রচার তীব্রতর হয়েছে । স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মন্দিরের পক্ষ থেকে রটানো হয়েছে যে মা রাতে হাঁটেন, নাচেন, কথা বলেন । এমনকী মহিলা ভক্তদের পরনের কোনও গয়না পছন্দ হলেও মা চেয়ে নেন ।
বিভিন্ন সোশাল মিডিয়ায় করা নানা পোস্টে এই 'জীবন্ত' কালীর ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে বহু মানুষ আসতে শুরু করেন । মাঝে মাঝে বিভিন্ন তারকাকে এনে ভিডিয়ো করে মানুষকে আরও বিভ্রান্ত করা হয় । স্থানীয়দের অভিযোগ, পুজোর নামে বিপুল টাকা নেওয়া হয় । এখানে জমা পড়া ভোগের চাল রাতে গাড়িতে পাচার করে বিক্রি করা হয় । এছাড়াও লোকের জমায়েতে সরু রাস্তায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নাভিশ্বাস ওঠে । ছোটরা বাইরে বেরতে পারে না । রাস্তাঘাট নোংরা হয় । মন্দিরের লোকেরা এসব সমাধান না-করে আয় বাড়ানোর প্রচারে মরিয়া ।
আরও অভিযোগ, এদের কোনও আইনি ট্রাস্ট নেই । মা কালীর ‘জীবন্ত’ হয়ে ওঠার প্রচার করে মানুষের বিশ্বাস ভাঙিয়ে আয়ের পথ খোলাই এদের কাজ । পুলিশ, পুরসভা সতর্ক করলেও লাভ হয়নি । বুধবার স্থানীয় বাসিন্দারা ফের ক্ষোভ জানালে পাড়ায় যান প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ ও পুরপিতা অয়ন চক্রবর্তী । আসেন নারকেলডাঙা থানার ওসি । স্থানীয় বাসিন্দারা কার্যত ক্ষোভে ফেটে পড়েন । মন্দির কমিটির দু’একজন পাল্টা তর্ক করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয় । দফায় দফায় স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন কুণাল ঘোষরা ৷
তাঁদের পক্ষ থেকে মন্দির কমিটিকে বলা হয়, ‘‘পুজো চলুক । কিন্তু আপত্তিকর ও অসুবিধার কাজ বন্ধ করতে হবে ।’’ ওসি এনিয়ে থানায় বৈঠক ডাকেন । বাসিন্দাদের বক্তব্য, আমরা সবাই কালীভক্ত । কিন্তু মা’কে নিয়ে এই ব্যবসা চলতে পারে না।