কামারহাটি, 3 ফেব্রুয়ারি: মানসিক অবসাদেই আত্মঘাতী আরজি করের দ্বিতীয় বর্ষের ডাক্তারি পড়ুয়া ৷ 'শান্ত' স্বভাবের ওই চিকিৎসক ছাত্রীর রহস্য মৃত্যুর প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই মনে করছে পুলিশ । তবে, এই মৃত্যু ঘিরে রয়েছে বহু প্রশ্ন ! বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও খুঁজছেন তদন্তকারীরা ।
প্রথমত, মানসিক অবসাদে ভোগার পিছনে ঠিক কী কারণ থাকতে পারে ? দ্বিতীয়ত, তাঁর উপর কী কোনওভাবে মানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছিল ? যদি তা হয়েই থাকে, তাহলে এর নেপথ্যে কাদের হাত ? তৃতীয়ত, পড়াশোনার ক্ষেত্রে কি তাঁর কোনও চাপ ছিল, সেই চাপ নিতে না পেরেই এই চরম সিদ্ধান্ত ? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর পেতে এখন মৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্য এবং তাঁর সহপাঠীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ওই ডাক্তারি পড়ুয়া । তবে, তাঁর চালচলনে কোনও বদল দেখতে পাওয়া যায়নি বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের । স্বভাবতই অস্বাভাবিক কিছু মনে না হওয়ায় ওই চিকিৎসক ছাত্রী যে এমন কিছু ঘটনা পারেন, সেটা কখনও বুঝে উঠতে পারেননি তাঁরা । এই নিয়ে অন্ধকারে পরিবার ! নিজের কর্মক্ষেত্র, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক পড়ুয়ার সহপাঠীরাও দাবি করছেন সেখানেও নাকি সবসময় শান্ত হয়ে থাকতেন তিনি । খুব একটা কারওর সঙ্গে কথা বলতেন না । মিশুকে ছিলেন না চিকিৎসক ছাত্রী ।
তাঁর মধ্যে বিষন্নতার ছাপ থাকত সবসময় । তবে, কী কারণে তিনি মনমরা হয়ে থাকতেন, তা কখনও জানতে পারেননি সহপাঠীরা । তার আগেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে নিজেকে শেষ করে দিলেন ওই চিকিৎসক পড়ুয়া । এই রহস্যমৃত্যুর কারণে উদঘাটনে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বড় ভূমিকা নিতে পারে বলে ধারণা তদন্তকারীদের । তার দিকেও এখন তাকিয়ে রয়েছে পুলিশ । তবে, ছাত্রীর মৃতদেহের পাশ থেকে কোনও লিখিত 'নোট' মেলেনি । যার ফলে, তদন্ত করতে গিয়ে তথ্য জোগাড় করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তদন্তকারী অফিসারদের ।
এই বিষয়ে ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি(সেন্ট্রাল) ইন্দ্রবদন ঝাঁ'র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,"তদন্ত চলছে । এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয় ।"
শুক্রবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের চিকিৎসক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় কামারহাটির ইএসআই হাসপাতালের কোয়ার্টার থেকে । এখানেই মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি । ছাত্রীর মা চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ইএসআই হাসপাতালে । সেই সূত্রেই মায়ের সঙ্গে কোয়ার্টারে ছিলেন ওই চিকিৎসক ছাত্রী । তাঁর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে নেমেছে কামারহাটি থানার পুলিশ ।