কলকাতা, 28 এপ্রিল: নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় দেশের শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বদলের রায়কে শুক্রবার স্বাগত জানাল তৃণমূল কংগ্রেস । একই সঙ্গে তারা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিল, অন্যায় করলে তদন্ত হবে বা শাস্তি হবে ৷ এই নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের কিছু বলার নেই । এক্ষেত্রে বিচার ব্যবস্থার উপর পূর্ণ আস্থা রাখছে জোড়াফুল নেতৃত্ব ।
প্রসঙ্গত, এদিনই একটি টিভি চ্যানেলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন ইন্টারভিউ দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাইকোর্টের মাননীয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় দেশের শীর্ষ আদালত । এরপরই এই রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । উত্তরবঙ্গের মাটিতে দাঁড়িয়ে আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি । একইভাবে কলকাতায় বসেও দেশের শীর্ষ আদালতের এই রায়কে স্বাগত জানালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ এবং দলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন ।
এই বিষয়ে দলের মুখপাত্র তথা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি । সেই সঙ্গে বলছি বিচার ব্যবস্থা এবং বিচারপতিদের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে । যদি কেউ যদি কোথাও কোনও অন্যায় করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত হবে, শাস্তি হবে-সবই চলবে । কিন্তু বিচারপতির সিংহাসনকে মিস ইউজ করে যদি তার ব্যক্তিগত উইশ লিস্ট সামনে রেখে একটি দল বা আমাদের নেতা-নেত্রীদের ইঙ্গিত করে প্রত্যক্ষ রাজনৈতিক ধারণা তৈরি করে দিতে চান জনমানসে, সেক্ষেত্রে তো আমাদের প্রতিবাদ তো থাকবেই । এর সঙ্গে মূল মামলা বা তদন্তের কোনও সম্পর্ক নেই । আমরা সবিনয়ে সেই প্রতিবাদটা বারবার করেছি । এই প্রতিবাদের মান্যতা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ।"
তিনি আরও বলেন, "দেশের শীর্ষ আদালত মনে করেছে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিচারপতির হাতে মামলা থাকলে পক্ষপাত দুষ্ট আচরণ হতে পারে । তাই তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন । এর বেশি এখানে কিছু আমাদের বলার নেই ৷"
অন্যদিকে, এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনও । তাঁর কথায়, গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ হল বিচার ব্যবস্থা । সেই বিচার ব্যবস্থার যারা ধারক এবং বাহক তাদের আচার-আচরণ যদি এমন হয় যাতে মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জাগে বিচার ব্যবস্থা নিরপেক্ষ আছে কি না, সেটা দেশের জন্য ভয়ংকর ।
তিনি জানান, মাননীয় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে বিষয়ে বিচার করছেন, সে বিষয়েই তিনি প্রকাশ্যে টিভি চ্যানেলে গিয়ে বক্তব্য রাখছেন । তিনি একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলকে ঢাকি-সহ বিসর্জন দেওয়ার কথা বলছেন । তার মুখপাত্রদের দালাল বলছেন । দলের লাইসেন্স কেড়ে নেওয়া উচিত বলে বলছেন । সেই দলের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে জেরা করা উচিত । তাঁকে পুলিশ কাস্টডিতে নেওয়া উচিত ৷ এই ধরনের মন্তব্য করছেন । আবার তিনি নিজে বলছেন লড়াই চলবে । একজন বিচারপতি সাধারণত বিচারালয় বসে লড়াই থামানোর বিষয় নির্দেশ দেন বলে । সে ক্ষেত্রে তিনি বলছেন লড়াই জারি থাকবে । এক্ষেত্রে তিনি কোন লড়াইয়ের কথা বলছেন ? এরকম একটা পরিস্থিতিতে মানুষের মনে যখন একটা অনিশ্চয়তা একটা নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন মানুষের মনে দানা বাঁধছিল সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ, এই রায়কে নিশ্চিতভাবে তৃণমূল স্বাগত জানাবে ।
আরও পড়ুন : বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়োগ মামলা থেকে সরিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট