কলকাতা, 19 মে: কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে নোটিশ দিতেই আরও একবার সিবিআইয়ের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ এই প্রসঙ্গে তাদের তরফে টেনে আনা হয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রসঙ্গও ৷ বাংলার শাসক দলের প্রশ্ন, অভিষেককে তলবের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করলেও শুভেন্দুর ক্ষেত্রে কেন এমন করছে না সিবিআই !
তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘কুন্তলের চিঠির জন্য যদি অভিষেককে ডাকা হয় । তাহলে সুদীপ্ত সেনের অভিযোগের পরেও কেন শুভেন্দু অধিকারীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হবে না ? এই প্রশ্নের ভিত্তিতে বিশ্বাসযোগ্যতা চ্যালেঞ্জ হবে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের ।’’
প্রসঙ্গত, গত 25 এপ্রিল কোচবিহার থেকে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ সেদিন থেকেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জেলায় জেলায় জনসংযোগ যাত্রা করছেন ৷ 60দিন পর দক্ষিণ 24 পরগনার কাকদ্বীপে কর্মসূচি শেষ করে তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা ছিল ৷ কিন্তু সিবিআইয়ের সমন পেয়ে তিনি আজ, শুক্রবারই কলকাতায় ফিরছেন ৷ আগামিকাল, শনিবার সকাল 11টায় তাঁকে হাজিরা দিতে হবে নিজাম প্যালেসে ৷
নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হওয়া কুন্তল ঘোষের চিঠি মামলায় অভিষেককে তলব করেছে সিবিআই ৷ বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলা থেকে অভিষেককে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন খারিজ করে দেয় ৷ তার পর কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে তাঁর তরফে আবেদন করা হলেও জরুরি ভিত্তিতে সেই শুনানি করতে চায়নি আদালত ৷ আর তার পরই দুপুরে সিবিআই তাঁকে নোটিশ দেয় ৷ আগামিকাল সকালে হাজির হতে বলে ৷ ফলে নোটিশ পাওয়ার পর 24 ঘণ্টা সময়ও তিনি পাননি ৷ সিবিআইয়ের এই তাড়াহুড়ো নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কুণাল ঘোষ ৷
কুণাল বলেন, ‘‘অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলায় কোনও অভিযোগ নেই । শুধু কথার জাগলারীতে নাম জড়িয়ে ডাকা হচ্ছে । সিবিআইয়ের এত তাড়া যে আজকে নোটিশ জারি করে কাল তাঁকে ডাকা হচ্ছে । আর সুদীপ্ত সেনের যে কপি কোর্টে জমা পড়েছে, তার কপি তো সিবিআই পেয়ে গিয়েছে ৷ তাহলে শুভেন্দুকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন এখনও !’’
আরও পড়ুন: অভিষেককে সিবিআইয়ের নোটিশ, শনিবার হাজিরার নির্দেশ
কুণাল ঘোষের অভিযোগ, সিবিআইয়ের এই তলব অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ কর্মসূচিতে বিঘ্ন ঘটানোর লক্ষ্যেই করা হয়েছে । অভিষেকের জনজোয়ার কর্মসূচি কীভাবে বিঘ্নিত করা যায়, তা নিয়ে পরিকল্পনা চলছিল । বিজেপি কোনোভাবেই এই কর্মসূচি বন্ধ করতে পারছিল না । তাদের গণসংগঠন সিবিআইকে পাঠিয়ে মাঝপথে এই কর্মসূচিতে বিরতি নিতে বাধ্য করা হচ্ছে । বিভিন্ন মহলের তৃণমূল বিরোধী যারা আছে, তাদের ব্যবহার করে এই ধরনের একটা পরিস্থিতি তৈরি করা হল । এই নোটিশ শুধুমাত্র অভিষেকের জনজোয়ারে বিঘ্ন ঘটানোর উদ্দেশ্যেই নেওয়া হয়েছে ।
তাঁর আরও দাবি, কুন্তল ঘোষের কোনও অভিযোগ নির্দিষ্ট ভাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নেই । কিন্তু সুদীপ্ত সেনের চিঠিতে বিস্ফোরক মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে । দু’টো চিঠি একই পদ্ধতিতে দেওয়া হয়েছে । দু’জনেই জেলবন্দি । দু’জনেই জেলের ওয়েলফেয়ার অফিসারের মাধ্যমে পাঠিয়েছেন ।
তাই কুণালের বক্তব্য, ‘‘একটাতে যদি সিবিআই ধেই ধেই করে নেত্য করতে পারে । তাহলে সুদীপ্ত সেনের ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীকে ছেড়ে রাখা হয়েছে কেন ? বিজেপি করে বলে ! সিবিআই কি বিজেপির শাখা সংগঠন ? সিবিআই কি বিজেপির গণসংগঠন ?
আরও পড়ুন: সিবিআই তলব, কর্মসূচি মাঝপথে বন্ধ রেখে কলকাতায় ফিরছেন অভিষেক