ETV Bharat / state

West Bengal Assembly: কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে তৃণমূলের আনা মুলতুবি প্রস্তাব পাস

মঙ্গলবার বিধানসভায় পাস হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আনা রাজ্যের শাসক দলের মুলতুবি প্রস্তাব ৷ কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধেই এই প্রস্তাব এনেছিল তৃণমূল ৷

ETV Bharat
বিধানসভা
author img

By

Published : Aug 1, 2023, 8:00 PM IST

কলকাতা, 1 অগস্ট: রাজ্যকে পদে পদে বঞ্চনা করা হচ্ছে ৷ বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের । মঙ্গলবার এই অভিযোগকে সামনে রেখে মুলতুবি প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল শাসকপক্ষ । মঙ্গলবার ধ্বনি ভোটে পাস হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের আনা এই মুলতুবি প্রস্তাব ৷ তবে এদিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিধানসভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পুত্রসম বলায় এবং বিরোধী বিধায়ক অশোক দিন্দাকে 'তুমি' বলে সম্বোধন করায়, মেজাজ হারিয়ে বিধানসভা কক্ষ ছাড়ে বিজেপি।

এদিন শাসক দলের পক্ষ থেকে নির্মল ঘোষ ও তাপস রায় 185 নম্বর ধারায় মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আসেন রাজ্য বিধানসভায় । এক্ষেত্রে শাসকদলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, রাজ্যেকে আর্থিকভাবে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার, এমনটা করে রাজ্যে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে ৷

পালটা বিধানসভায় উপস্থিত বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী, হিরণ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিজেপি বিধায়কেরা বারবার এটাই বলার চেষ্টা করেন, রাজ্যের অভিযোগ সত্য নয় । কেন্দ্র রাজ্যকে বঞ্চনা করেনি । এক্ষেত্রে টাকা বন্ধের পিছনে রয়েছে দুর্নীতি । চুরি আটকাতে পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার । একশো দিনের কাজ অথবা আবাস যোজনা সব কিছুতেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে এদিন দাবি করেন বিরোধী দলনেতা ৷

শুভেন্দুর দাবি, চুরি বন্ধের পদক্ষেপ নিলে এবং যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে কেন্দ্র অবশ্যই রাজ্যকে টাকা দেবে । শুভেন্দু অধিকারীর স্পষ্ট কথা, "অডিট রিপোর্ট জমা দিলেই বরাদ্দ টাকা সম্পূর্ণ দিয়ে দেওয়া হবে ।" এদিন শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রের স্কিমগুলোর নাম পরিবর্তন করে দিয়েছে রাজ্য । নাম বদলের কারণেই রাজ্যের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্য সরকার । তাঁর আরও অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে বরাদ্দ টাকা খরচ করা হয়নি । এদিন কেন্দ্রকে লেখা চিঠি তুলে ধরে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে । কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল তারা এই রাজ্যে তদন্ত করতে এসে সমস্ত গরমিল ধরেছে । রাজ্যের উচিত এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া । তাহলেই তাদের বরাদ্দ তাদের দেওয়া হবে ।

আরও পড়ুন: তৃণমূল ভবনে গিয়ে শোকজের জবাব দেবেন হুমায়ুন

যদিও বিজেপি বিধায়কদের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । তাঁর অভিযোগ, রাজ্যকে বঞ্চনার পিছনে যত না অন্য কারণ রয়েছে তার থেকে অনেক বেশি রয়েছে প্রতিহিংসা । তিনি বলেন, "100 দিনের কাজে 2020 সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ছিল এক নম্বর । 2021-এর নির্বাচনে হারার পরে সেই 100 দিনের কাজের টাকাই বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র ।"

এদিন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বারবার বিজেপি বিধায়কদের আনা অভিযোগের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন । তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের কাছে কল্যাণকর স্কিমগুলিকে পৌঁছে দেওয়া । এটা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না । কেন্দ্রের প্রতিটি স্কিমের মধ্যেই রাজ্যরও অর্থ রয়েছে । কোথাও সিক্সটি-ফোরটি বা কোথাও ফিফটি-ফিফটি টাকা দেয় কেন্দ্র । তাই সব টাকা কেন্দ্র দেয় না ।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বলা 'হরিদাস' সংসদীয় না অসংসদীয় শব্দ ? এই প্রশ্নে উত্তাল বিধানসভা

এদিন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হইচই হয় বিধানসভায় । তিনি বলেন, "বিরোধী দলনেতা আমার সন্তানসম । তাঁর উচিত আগে রাজ্যের স্বার্থ দেখা । কারণ তিনিও এই রাজ্যের বাসিন্দা ।" একইভাবে বক্তব্য রাখার সময় বিজেপির খেলোয়াড় বিধায়ক অশোক দিন্দাকে তুমি বলে সম্বোধন করেন মন্ত্রী । তাতেই মেজাজ হারায় বিরোধীপক্ষ । তারা এই নিয়ে প্রতিবাদ করে বিধানসভার কক্ষ ত্যাগ করেন । বিরোধীদলের অভিযোগ, বিধানসভায় সবাই সহ-সদস্য । সেখানে কাউকেই তুমি বা তুই বলা যায় না । অতএব মন্ত্রী যা করেছেন তা সঠিক নয় । এরপর বিধানসভার স্পিকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওয়াকআউট করে বিজেপি ৷ যেহেতু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিরোধী দল বিজেপি বিধানসভায় উপস্থিত ছিল না । তাই শাসক পক্ষের সমর্থনে ধ্বনি ভোটে পাস হয় এই মুলতুবি প্রস্তাব ।

কলকাতা, 1 অগস্ট: রাজ্যকে পদে পদে বঞ্চনা করা হচ্ছে ৷ বাংলার শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের এই অভিযোগ দীর্ঘদিনের । মঙ্গলবার এই অভিযোগকে সামনে রেখে মুলতুবি প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল শাসকপক্ষ । মঙ্গলবার ধ্বনি ভোটে পাস হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের আনা এই মুলতুবি প্রস্তাব ৷ তবে এদিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বিধানসভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে পুত্রসম বলায় এবং বিরোধী বিধায়ক অশোক দিন্দাকে 'তুমি' বলে সম্বোধন করায়, মেজাজ হারিয়ে বিধানসভা কক্ষ ছাড়ে বিজেপি।

এদিন শাসক দলের পক্ষ থেকে নির্মল ঘোষ ও তাপস রায় 185 নম্বর ধারায় মুলতবি প্রস্তাব নিয়ে আসেন রাজ্য বিধানসভায় । এক্ষেত্রে শাসকদলের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, রাজ্যেকে আর্থিকভাবে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার, এমনটা করে রাজ্যে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে ৷

পালটা বিধানসভায় উপস্থিত বিরোধী দলনেতার শুভেন্দু অধিকারী, হিরণ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিজেপি বিধায়কেরা বারবার এটাই বলার চেষ্টা করেন, রাজ্যের অভিযোগ সত্য নয় । কেন্দ্র রাজ্যকে বঞ্চনা করেনি । এক্ষেত্রে টাকা বন্ধের পিছনে রয়েছে দুর্নীতি । চুরি আটকাতে পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার । একশো দিনের কাজ অথবা আবাস যোজনা সব কিছুতেই দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে বলে এদিন দাবি করেন বিরোধী দলনেতা ৷

শুভেন্দুর দাবি, চুরি বন্ধের পদক্ষেপ নিলে এবং যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে কেন্দ্র অবশ্যই রাজ্যকে টাকা দেবে । শুভেন্দু অধিকারীর স্পষ্ট কথা, "অডিট রিপোর্ট জমা দিলেই বরাদ্দ টাকা সম্পূর্ণ দিয়ে দেওয়া হবে ।" এদিন শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রের স্কিমগুলোর নাম পরিবর্তন করে দিয়েছে রাজ্য । নাম বদলের কারণেই রাজ্যের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে রাজ্য সরকার । তাঁর আরও অভিযোগ, বহু ক্ষেত্রে বরাদ্দ টাকা খরচ করা হয়নি । এদিন কেন্দ্রকে লেখা চিঠি তুলে ধরে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, আবাস যোজনা ও ১০০ দিনের কাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে । কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল তারা এই রাজ্যে তদন্ত করতে এসে সমস্ত গরমিল ধরেছে । রাজ্যের উচিত এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া । তাহলেই তাদের বরাদ্দ তাদের দেওয়া হবে ।

আরও পড়ুন: তৃণমূল ভবনে গিয়ে শোকজের জবাব দেবেন হুমায়ুন

যদিও বিজেপি বিধায়কদের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । তাঁর অভিযোগ, রাজ্যকে বঞ্চনার পিছনে যত না অন্য কারণ রয়েছে তার থেকে অনেক বেশি রয়েছে প্রতিহিংসা । তিনি বলেন, "100 দিনের কাজে 2020 সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ ছিল এক নম্বর । 2021-এর নির্বাচনে হারার পরে সেই 100 দিনের কাজের টাকাই বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র ।"

এদিন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বারবার বিজেপি বিধায়কদের আনা অভিযোগের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন । তিনি জানিয়েছেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব সাধারণ মানুষের কাছে কল্যাণকর স্কিমগুলিকে পৌঁছে দেওয়া । এটা থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যায় না । কেন্দ্রের প্রতিটি স্কিমের মধ্যেই রাজ্যরও অর্থ রয়েছে । কোথাও সিক্সটি-ফোরটি বা কোথাও ফিফটি-ফিফটি টাকা দেয় কেন্দ্র । তাই সব টাকা কেন্দ্র দেয় না ।

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বলা 'হরিদাস' সংসদীয় না অসংসদীয় শব্দ ? এই প্রশ্নে উত্তাল বিধানসভা

এদিন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের বক্তব্যকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হইচই হয় বিধানসভায় । তিনি বলেন, "বিরোধী দলনেতা আমার সন্তানসম । তাঁর উচিত আগে রাজ্যের স্বার্থ দেখা । কারণ তিনিও এই রাজ্যের বাসিন্দা ।" একইভাবে বক্তব্য রাখার সময় বিজেপির খেলোয়াড় বিধায়ক অশোক দিন্দাকে তুমি বলে সম্বোধন করেন মন্ত্রী । তাতেই মেজাজ হারায় বিরোধীপক্ষ । তারা এই নিয়ে প্রতিবাদ করে বিধানসভার কক্ষ ত্যাগ করেন । বিরোধীদলের অভিযোগ, বিধানসভায় সবাই সহ-সদস্য । সেখানে কাউকেই তুমি বা তুই বলা যায় না । অতএব মন্ত্রী যা করেছেন তা সঠিক নয় । এরপর বিধানসভার স্পিকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ওয়াকআউট করে বিজেপি ৷ যেহেতু শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত বিরোধী দল বিজেপি বিধানসভায় উপস্থিত ছিল না । তাই শাসক পক্ষের সমর্থনে ধ্বনি ভোটে পাস হয় এই মুলতুবি প্রস্তাব ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.