কলকাতা, 4 জানুয়ারি: 'আপনার নাম কি? আপনার স্ত্রীর নাম কি? আমার সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না'। মূলত এই তিনটি বাক্যই এখন ব্রহ্মাস্ত্র এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের কাছে । বুধবার রাত 12টা 52মিনিট পর্যন্ত একাধিক চিকিৎসক, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও ইএনটি স্পেশালিস্টদের নিয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড এবং ইডির তদন্তকারীদের সামনে এই তিনটি বাক্য একাধিকবার বলতে হয়েছে 'কালীঘাটের কাকু' ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে ।
দীর্ঘ টালবাহানার পর বুধবার রাতে এসএসকেএম থেকে জোকা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় 'কালীঘাটের কাকু'কে ৷ রাতেই হাসপাতালে তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারী আধিকারিকেরা ৷ এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে তদন্ত নেমে রাজ্যের একাধিক জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ইডির হাতে এসেছে একাধিক মোবাইল ফোনের রেকর্ডিং । এই মোবাইল রেকর্ডিংগুলিতে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, 'আমার সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না'-সহ উপরিউক্ত তিনটি বাক্য । তাই বুধবার 'কালীঘাটের কাকু'র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহের সময় তাঁকে 'আপনার নাম কি? আপনার স্ত্রীর নাম কি? আমার সাহেবকে কেউ ছুঁতে পারবে না' এই তিনটি বাক্য বারংবার বলানো হয়েছে ৷
ইডির দাবি, শুধুমাত্র ওই তিনটি বাক্য ছাড়াও আরও একাধিক তথ্য তাদের কাছে আছে । কিন্তু আইন মেনে মোবাইল ফোনের রেকর্ডিংয়ে আদতে 'কালীঘাটের কাকু'র গলা শোনা গিয়েছে কি না তা যাচাই করতে হবে ৷ তার জন্য সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছিল ইডির কাছে ৷ তবে 'কালীঘাটের কাকু'র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে দীর্ঘ টালবাহানা এবং আইনি জটিলতার মুখে পড়তে হয় তদন্তকারী আধিকারিকদের । আদালতের নির্দেশের পরও 'কালীঘাটের কাকু'র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে পারেনি ইডি ৷ শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে বারবার জেল থেকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে ৷
ইডির আধিকারিকদের অভিযোগ, প্রায় সাড়ে চার মাস ধরে কালীঘাটের কাকু শারীরিক অসুস্থতাকে সামনে রেখে এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি ছিলেন । এখানে একাধিকবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী আধিকারিকরা । পাশাপাশি 'কালীঘাটের কাকু'র সাড়ে চার মাস ধরে কী চিকিৎসা হল, তা জানার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসকদের সঙ্গে একাধিকবার কথাও বলেন তদন্তকারীরা । তবে প্রত্যকবারই কার্যত খালি হাতে ফিরে আসতে হয় ইডি আধিকারিকদের ৷
আদৌ কি 'কালীঘাটের কাকু'র কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা যাবে, সেই প্রশ্ন এসএসকেএম হাসপাতালকে এর আগে একাধিকবার জিজ্ঞেস করেছিলেন তদন্তকারীরা বলে খবর ৷ কিন্তু সেক্ষেত্রে বিভিন্ন মেডিক্যাল টার্ম এন্ড কন্ডিশন তুলে ধরে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করতে এক প্রকার বাঁধা দিয়েছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে ইডির অভিযোগ । ফলে এই মুহূর্তে এসএসকেএম হাসপাতালের একাধিক চিকিৎসকও এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটরের নজরে রয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে ।
আরও পড়ুন: