কলকাতা, 20 জুন : কোরোনা সংক্রমণ রুখতে দিনরাত পরিশ্রম করেছিল পুলিশ । কিন্তু সেই পুলিশের এখন নীলকন্ঠের দশা । প্রতি পদে বিপদ বাসা বেঁধে আছে । কর্তারা নানাবিধি সুরক্ষা পরিকল্পনা করছেন । কিন্তু কর্তব্যে অবিচল কলকাতা পুলিশবাহিনী । তাই কলকাতা পুলিশে বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা । তৈরি হচ্ছে আতঙ্ক । বিক্ষোভ শুরু হয়েছে কলকাতা পুলিশে অন্দরেই । লালবাজারের কর্তারা বুঝেছেন কর্মীদের মনোবল বাড়ানো অত্যন্ত প্রয়োজন । সেই হারানো মনোবল ফেরাতে এবার উদ্যোগী নগরপাল অনুজ শর্মা ৷ আগামী সপ্তাহ থেকে কলকাতা পুলিশের প্রতিটা ডিভিশন ঘুরে দেখবেন তিনি ৷ দেখা করবেন কোরোনা জয়ী পুলিশকর্মীদের সঙ্গে ৷
মাস দেড়েক আগে কোরোনায় সংক্রমণ হয়েছিলেন গার্ডেনরিচ থানার OC-র । সেটাই ছিল কলকাতা পুলিশের প্রথম সংক্রমণের ঘটনা । তার জেরে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছিল। বদলি করা হয়েছিল OC-কে । সেই ঘটনার পর পুলিশ কর্মীদের মনোবল বাড়াতে ছুটে গিয়েছিলেন খোদ পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা । তারপর হুগলি নদী দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল। কলকাতা পুলিশে এই মুহূর্তে আক্রান্তের সংখ্যা 300-র কাছাকাছি । তবে এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন শতাধিক পুলিশকর্মী । গার্ডেনরিচ, প্রগতি ময়দান, বউবাজার, বেলেঘাটা থানার OC-রা সুস্থ হয়েছেন । বড়তলা, গড়ফা থানার অতিরিক্ত OC-রাও এখন কোরোনা মুক্ত । আক্রান্ত 16জন পুলিশকর্মী সুস্থ হয়ে গেছেন গড়ফা থানায় । কিন্তু ঘটনা হল প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন সংক্রমনের ঘটনা ঘটছে ।
সেই সূত্র ধরে আক্রান্ত পুলিশকর্মীদের চিকিৎসা দেখভালের জন্য লালবাজারের তরফে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ ওয়েলফেয়ার সেল । এমনিতে ওয়েলফেয়ার সেল আগে থেকেই ছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশেষ এই সেলে পুলিশের বিভিন্ন ডিভিশন এবং ব্যাটেলিয়ান সহ প্রতিটি ইউনিটের প্রতিনিধিদের যুক্ত করা হয়েছে । তাতে সদস্যসংখ্যা দাঁড়িয়েছে 43 জন । যুগ্ম-কমিশনার সদর শুভঙ্কর সিনহা সরকারের নেতৃত্বে ওই সেল কাজ করছে । লালবাজারের 17 জন পুলিশকর্তাও ওই সেলের সদস্য । পুলিশকর্মীরা যাতে ঠিকঠাক চিকিৎসা পায় সেদিকটা দেখাশোনা করছে ওই সেল ৷
ঠিক হয়েছে, পুলিশকর্মীদের মনোবল বাড়াতে নগরপাল নিজে প্রত্যেক ডিভিশনে যাবেন । কথা বলবেন কোরোনা জয়ীদের সঙ্গে। লালবাজার মনে করছে এতে অনেকটাই মনোবল ফিরে পাবেন পুলিশকর্মীরা।
কলকাতার নগরপাল সম্প্রতি যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, “পুলিশকর্মীদের বাড়ির লোকজনও আমাদের বর্ধিত পরিবারের সদস্য । আমাদের দায়িত্ব তাঁদের রক্ষা করা । পাশে দাঁড়ানো ।" সেই মতো ওয়েলফেয়ার অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসা সংক্রান্ত যেকোনও সহযোগিতা অত্যন্ত দ্রুত করতে হবে । এই কাজে নজরদারি চালাবেন DC-রা । প্রতি 15 দিন অন্তর ওয়েলফেয়ার অফিসাররা রিপোর্ট পাঠাবেন স্পেশাল পুলিশ কমিশনার জাভেদ শামিমকে । জানাতে হবে সমস্ত যুগ্ম কমিশনার এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনারদেরও ।