কলকাতা, ১৯ মার্চ : "ভোটের ডিউটি স্লিপ হাতে ধরিয়ে কাজ সারলে হবে না। চাই উপযুক্ত নিরাপত্তা। না হলে ভোটের ডিউটি করব না। আমরা বয়কটের পথে হাঁটব।" এই হুঁশিয়ারি দিল শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চ। ভোটের ডিউটিতে নিরাপত্তার বিষয় সুনিশ্চিত করতে আজ কয়েকজন শিক্ষক মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরে আসেন। মুখ্য নির্বাচন আধিকারিককে তাঁদের দাবিপত্র জমা দেন।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রিজ়াইডিং অফিসারের ডিউটি করতে গিয়ে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের রতনপুর হাই মাদ্রাসার শিক্ষক রাজকুমার রায় নিখোঁজ হয়ে যান। পরে রেললাইনের ধার থেকে উদ্ধার হয় তাঁর ছিন্নভিন্ন দেহ। দেগঙ্গার মনিরুল হাসান রাজারহাটে ডিউটি করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন। এইসব ঘটনার পর নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন নির্বাচনে কর্তব্যরত শিক্ষকরা। ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম-সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারীর দাবি, রাজ্যে অসংখ্য বুথে শিক্ষকদের উপর শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন চলে। অনেক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার অভাবে রাজনৈতিক দলগুলির অন্যায় এবং অনৈতিক আচরণের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হন তাঁরা। তাই নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তাঁরা মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দ্বারস্থ হয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনের কাছে মোট আট দফা দাবি রেখেছে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চ। কিঙ্কর অধিকারী বলেন, "আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণের জন্য কিছু প্রিজ়াইডিং অফিসারের সঙ্গে কমপক্ষে ৬ জন কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনী সহ রাজ্য পুলিশ থাকতে হবে। সুনিশ্চিত করতে হবে ভোট কর্মীদের নিরাপত্তা। স্পর্শকাতর বুথগুলিতে দ্বিগুণ হারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে হবে। ভোটগ্রহণের শেষে EVM জমা দেওয়ার পর রিলিজ় অর্ডার দিয়ে দিলেই নির্বাচন কমিশনের সমস্ত দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। বাড়ি থেকে বের হওয়া থেকে বাড়ি না ফেরা পর্যন্ত সমস্ত নিরাপত্তার ভার নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।"
ঐক্য মঞ্চের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় প্রিজ়াইডিং অফিসারের অভিযোগের ভিত্তিতে সেক্টর অফিসার, রিটার্নিং অফিসার যথাযথ ভূমিকা পালন করেন না। অনেক সময় তাঁরা প্রিজ়াইডিং অফিসারদের অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করেন। ঐক্য মঞ্চ চাইছে, এই ক্ষেত্রে কমিশনকে সরাসরি অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা রাখা হোক। কমিশন তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিক। পাশাপাশি ভোটকর্মীদের হতাহতের ঘটনায় উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা রাখা হোক। কোনওভাবেই প্রতিবন্ধী কোনও শিক্ষককে ভোটের কাজে ব্যবহার করা চলবে না।কিঙ্কর বাবু জানিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর।