কলকাতা, 17 এপ্রিল: জীবনের চলার পথে সংঘর্ষটা বড়ই কঠিন। সেই উপলব্ধিটাই পালটে দিয়েছে চা বিক্রেতা দীনেশের জীবন। বাইপাসের ধারে ছোট্ট একটা চায়ের দোকান। সকাল থেকে রাত, সর্বক্ষণই ভিড় দেখা যায় এখানে। নানা স্বাদের চায়ের দাবি-দাওয়া হাসি মুখে মিটিয়ে চলেছেন দোকানের মালিক তথা চা বিক্রেতা দীনেশ । নাহ ! শুধু চায়েতেই নেই বিশেষত্ব। আসল মজা লুকিয়ে রয়েছে দোকানের নাম ও তার বিভিন্ন অফারে । ফলে আর পাঁচটা দোকান থেকে বেশ আলাদা দীনেশের চায়ের দোকান।
ছোট থেকেই দীনেশ দেখে এসেছেন পরিবারের দায়িত্ব সামলে দুঃস্থ-সর্বহারাদের পাশে মাকে দাঁড়াতে। সেই থেকেই সমাজে পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কিছু করার ভাবনা মাথায় আসে দীনেশের। কাজের সূত্রে পাড়ি দেন দিল্লিতে। সেখানেই রকমারি চা বানানো শিখে ফেলেন তিনি। শহরে এসে খুলে ফেলেন নিজের একটা চায়ের দোকান । নাম রাখেন ডিএনএ চায়ওয়ালা। নামেও যেমন অভিনবত্ব তেমনই রয়েছে চায়ের বিভিন্ন অফারে। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষজন, বীরযোদ্ধা, নার্স, জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের বিনামূল্যেই চা খাওয়ার ব্যবস্থা করেন দীনেশ।
দীনেশ বলেন, "যারা বিশেষভাবে সক্ষম, তাঁরা বিভিন্ন সমস্যায় ভোগেন। তাই তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিনামূল্যে চা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া আমার পিসির মেয়ে নার্স ও কাকার ছেলে আর্মিতে কাজ করেন। ওদের অর্থের কোন কষ্ট নেই, ঠিকই তবে অনেক কষ্ট করে ওঁরা কাজ করে। তাই ওঁদেরকে সম্মান জানাতে এই বিনামূল্যে চা-এর ব্যবস্থা।" পাশাপাশি যাঁরা অ্যাসিড আক্রান্ত, তাঁদের জন্যও রয়েছে দীনেশের বিনামূল্যের চা চেখে দেখার সুযোগ।
আরও পড়ুন: বর্জ্য প্লাস্টিকের দুর্গন্ধে ঈদের খুশবু খোঁজে কালিয়াচকের 35 হাজার মানুষ
শুধু এলাকার মানুষজনই নয়, আশেপাশের পথচলতি অনেকেই একবার হলেও চুমুক দিয়ে যান দীনেশের তৈরি চায়ে। পেশায় শিক্ষক অসিত বরণ দাস বলেন, "পড়াতে যাওয়ার সময় চায়ের দোকানে ঢুঁ মারি। তাঁর এই ভাবনাকে সাধুবাদ জানাই । অ্যাসিড আক্রান্ত যোদ্ধাদের জন্য এই ভাবনা সত্যিই খুব ভালো।"