কলকাতা, 28 মে: বারবার বিতর্ক দানা বাঁধছে তৃণমূলের দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা ৷ বিভিন্ন ইস্যুতে কখনও একে অপরের বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যাচ্ছে অর্জুন সিং-সৌগত রায়দের ৷ কখনও আবার দলের বিরুদ্ধেই বেলাগাম কথা বেরিয়ে যাচ্ছে মদন মিত্রদের মুখ থেকে ৷ আর তার জেরেই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে দলকে ৷ এবার সেই সমস্যা সমাধানে দলের তিন 'হেভিওয়েট' নেতাদের সঙ্গে কথা বললেন তৃণমূলের ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস রায় ৷
ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলায় অর্দুন সিং, মদন মিত্র এবং সৌগত রায়, তিন নেতাই দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ৷ কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করতে শোনা গিয়েছে তাঁদের ৷ এমনকী কোনও কোনও সময় সেই বক্তব্য দলের বিরুদ্ধেও চলে গিয়েছে ৷ এই অবস্থায় দ্রুত হাল ধরতে চাইছে দল ৷ এবার এই তিন নেতার সঙ্গেই কথা বলেন তাপস রায় ৷ এই মুহূর্তে শাসকদলের মাথা ব্যথার কারণ উত্তর 24 পরগনার দমদম-ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা। কখনও অর্জুন সিং, কখনও সৌগত রায়, আবার কখনও মদন মিত্র। বিভিন্ন সময় তাঁদের বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়ছে দল। আর এই অবস্থায় এই তিন নেতার সঙ্গে কথা বললেন ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস রায়। তাঁদের বিতর্কিত মন্তব্য থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
দলীয় সূত্রে খবর, আপাতত কোনও সতর্কতা নয়, বরং ক্ষোভ-বিক্ষোভ যদি কিছু থাকে তা নিয়ে দলের অন্দরেই আলোচনার পরামর্শ দিয়েছেন তাপস রায়। প্রকাশ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলার সময় সচেতন থাকার কথাও বলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, বিগত কয়েকদিনে ব্যারাকপুরে একাধিকবার সরব হয়েছেন ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিং। বিজেপির টিকিটে জিতলেও তিনি এই মুহূর্তে তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। গত কয়েকদিনে বারবার রাজ্যের পুলিশ তথা আইনশৃঙ্খলা নিয়ে তার করা বক্তব্য দল যে ভালোভাবে নেয়নি সেটা দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথা থেকেই স্পষ্ট। একইভাবে এক অনুষ্ঠানে এসে পুলিশকে পাশে বসিয়ে যেভাবে দমদমের সাংসদ সৌগত রায় পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করেছেন তাও সংবাদে শিরোনাম হয়েছে।
আরও পড়ুন: তৃণমূলে যোগ বাইরন বিশ্বাসের, বিধানসভা ফের বাম-কংগ্রেস শূন্য
আর রবিবার যেভাবে সেই বিতর্কে ঘি ঢেলে মদন মিত্র তাতে যুক্ত হয়েছেন এই অবস্থায় যথেষ্টই অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূল সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে সবচেয়ে সমস্যার বিষয় হল, যারা বারবার এই সব বিষয় নিয়ে মুখ খুলছেন, তাঁরা কেউই ছোট বা মাঝারি মাপের নেতা নন ৷ দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে সকলের। এই অবস্থায় কার্যত মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে এসেছেন ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস রায়। সোমবার তিনি জানিয়েছেন, বিষয়টি তাঁরও নজরে এসেছে। তিনি আলাদা করে তিনজনের সঙ্গেই কথা বলেছেন। তাপস রায়ের কথায়, "আমি সহকর্মী হিসেবে তিন জনের সঙ্গে কথা বলেছি। এক্ষেত্রে যা বলার তাঁদের আমি বলেছি। সহকর্মী হিসেবে তাঁদের কারও আমি ভাই, কারও দাদা, কারও আমি বন্ধু। এই অবস্থা সকলের সঙ্গেই কথা বলেছি আমি।" তাপস রায় বলেন, "আমরা কোনও আয়রন কাটারের মধ্যে থাকি না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় একটা মতামত যে কেউ রাখতে পারে। এক্ষেত্রে আমরা একসঙ্গে আলোচনা করেছি, যা করার এ বিষয়ে পরামর্শও দিয়েছি।"