কলকাতা, 16 অক্টোবর: নিউ আলিপুরের সুরুচি সংঘ কলকাতার পুজো মণ্ডপগুলির মধ্যে অন্যতম । এবার এই পুজো 70তম বর্ষে পদার্পণ করল ৷ পশ্চিমবঙ্গের কোণে কোণে লুকিয়ে থাকা শিল্পকে তুলে এনেই তাদের বছরের থিম 'মা তোর এই অঙ্গে এত রূপ ।'
সুরুচি সংঘের এই বছরের মণ্ডপে মিলবে বাংলার বিভিন্ন শিল্পের পরিচয় । বিভিন্ন এলাকার হস্তশিল্প যেমন বাঁকুড়ার পাঁচমুড়ার টেরাকোটা, বিকনা'র ডোকরা মূর্তি, পূর্ব বর্ধমানের নতুন গ্রামের কাঠের পুতুল, বীরভূমের চদর বদর, মেদিনীপুরের পটচিত্র এই সবই দেখা যাবে সুরুচি সংঘের পুজো মণ্ডপে । তাছাড়াও মণ্ডপসজ্জায় ব্যবহৃত হয়েছে উত্তর 24 পরগনার মাছ ধরার পলো, গুলঞ্চ লতার বুননশিল্প, পুরুলিয়ার আউশ ধানের শিস ও সবংয়ের খাগড়াকঠির বিভিন্ন হাতের কাজ । মণ্ডপের ছাদটি সুসজ্জিত হয়েছে পুরুলিয়ার জুন ঘাসের বোনা ঝাড়বাতিতে ও ঝাড়গ্রামের পাঁচি গামছায় । থাকবে কাপড়ে বোনা বাংলার বিভিন্ন মনীষী ও সংস্কৃতির 'সিলুয়েট' শিল্পসৃষ্টি যার সৃষ্টিনন্দনতা মুগ্ধ করবে সমস্ত দর্শনার্থীদের ।
রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইলার ভাবনায় গড়ে উঠেছে এই মণ্ডপ । তিনি বলেন, "পশ্চিমবঙ্গকে নিয়ে কাজ করেছি । বঙ্গ জননীর কথা বলা হয়েছে । বাংলা শিল্প সংস্কৃতির সাধ বা মেজাজ নিয়ে এই পুরো কাজটা করেছি । পুরো বিষয়টাই প্রাকৃতিকভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি ।"
মহালয়ার দিন শনিবার বিকেলে এই মণ্ডপ ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনিই এই বছর সুরুচি সংঘের থিম সং লিখেছেন। এই বিষয়ে অরূপ বিশ্বাস বলেন, "দিদি তখন কাজের জন্য বার্সেলোনায় ছিলেন । আমি মেসেজ করে এই গানের কথা বলি । একঘণ্টার মধ্যে আমায় গান লিখে ও সুর দিয়ে পাঠান দিদি ।"
এই বছর সুরুচি সংঘ পরিবেশবান্ধব মণ্ডপ হিসেবেও অন্যতম দাবিদার । সম্পূর্ণ মণ্ডপে রয়েছে সুতোর কাজ ৷ এছাড়াও যে ব্যানার দেওয়া হয়েছে শহর কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে, তাও তৈরি হয়েছে কাপড় এবং পাটের সাহায্যে ।
আরও পড়ুন : অন্ধকার গলিতে হারিয়ে যাওয়া নারীদের যন্ত্রণা-অভিমান তুলে ধরছে কাশী বোস লেন সর্বজনীন