কলকাতা, 16 অক্টোবর: ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধন করছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ৷ রবিবার সেই অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি জানিয়েছিলেন, দ্রুত সুস্থ হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ময়দানে দেখতে চান। তিনি বলেছিলেন, "জনমানসে একটা ধারণা তৈরি হচ্ছে তিনি (মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়) নাকি বসে গিয়েছেন। তাই দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসুন ৷" তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতির এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে পালটা তাঁকেই কটাক্ষের মুখে এবার পড়তে হল। আর এই কটাক্ষ করলেন অন্য কেউ নয় স্বয়ং বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারী নিজের ঘরে বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস আদতে কোনও দল না, এটা একটা কোম্পানি। ওই কোম্পানির কর্মচারী ছিলাম আমিও। সুব্রত বক্সিও তাই ৷ তবে হয়তো একটু উঁচু পদের কর্মচারী। ভাইপো এবং ভাইপো বাহিনীর ঠেলায় তাঁর নিজেরই এখন অস্তিত্বের সংকট।" শুভেন্দু আরও বলেন, "ভাইপোর মডেল তো জানেন, শান্তনু, কুন্তল, জীবনকৃষ্ণ সাহাদের গুঁতোয় সুব্রত বক্সি কার্যত হারিয়ে গিয়েছেন। তিনি নিজে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁজার আগে, তাঁর নিজের অবস্থানটা খুঁজুন। সুব্রত বক্সি দলের রাজ্য সভাপতি। গোটা দিন তাঁর কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট-এর জন্য যত মানুষ না ফোন করেন তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ ভাইপো'র কাছে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চান। অন্তত 12 জন আইপিএস, 50 জন আইসি ভাইপো'র আপ্তসহায়ককে ফোনে রিপোর্ট পাঠান। ফলে সুব্রত বক্সিরা নিজেরাই অস্তিত্বের সংকটে ভুগছেন। আদি তৃণমূলের নেতাদের ভাইপো এন্ড কোম্পানি শেষ করে দিয়েছে।"
বিরোধী দলনেতার এই বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে এখনও এই নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি ৷ তবে দলীয় সূত্রে দাবি করা হয়েছে, কোনও সন্দেহ নেই যে শুভেন্দুর এই অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সিও সমর্থন করেন না ৷ সেই জায়গা থেকে তিনি এই নিয়ে আগামী দিনে কোনও প্রতিক্রিয়া দেন কি না, সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন: বিশেষ অধিবেশন ডেকেও মন্ত্রী-বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির বিল পাস হল না বিধানসভায়
সুব্রত বক্সিকে নিয়ে বিতর্ক এই প্রথম নয় ৷ এর আগে পঞ্চায়েত ভোটের সময় দলীয় বৈঠকে খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সামনেই পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন সুব্রত বক্সি ৷ আচমকা বক্সির মন্তব্যে হতচকিত হয়ে গিয়েছিলেন খোদ তৃণমূল সুপ্রিমো নিজেও ৷ যদিও সুব্রত বক্সির দাবি ছিল, নতুন প্রজন্মের কাঁধে দায়িত্ব তুলে দেওয়া উচিত ৷ এবং সে কারণেই তিনি রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়তে চাইছেন ৷ তবে সে যাত্রায় খোদ মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপ করে বিষয়টি লঘু করেন ৷