কলকাতা, 6 জুন : অবিলম্বে যৌন হেনস্থার অভিযোগের ঘটনায় হিয়ারিংয়ের তারিখ জানাতে হবে । এই দাবিতে গতকাল বিকেল থেকে অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগকারিণী সহ প্রায় ১৫ পড়ুয়া ।
চলতি বছরের মে'র প্রথমদিকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রের বিরুদ্ধে । সেই ঘটনায় হিয়ারিংয়ের তারিখ ছিল 16 মে । কিন্তু হিয়ারিংয়ের আগের দিন মেইল করে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জানানো হয়, ওই দিনের হিয়ারিং স্থগিত রাখা হয়েছে । তারপর থেকে হিয়ারিংয়ের আর কোনও তারিখ দেয়নি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ । তারই প্রতিবাদে গতকাল থেকে অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়ুয়ারা ।
অভিযোগকারিণী বলেন, "কালকে বিকেল থেকে আমরা অবস্থানে বসেছি। আমাদের ১৬ মে একটা হিয়ারিংয়ের তারিখ দেওয়া হয়েছিল । ১৫ তারিখ রাতে সেই হিয়ারিংটা বাতিলের কথা জানানো হয় । প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি কমিটি এগেনস্ট সেক্সয়াল হ্যারাসমেন্ট (PUCASH)-র তরফে বলা হয়, আমরা মাঝে যে অবস্থান করেছিলাম তার জন্য কমিটির সদস্যরা সেফ ফিল করছেন না। তার জন্য হিয়ারিং বাতিল করে দেয় । ১৬ তারিখ আমরা আসি। সেখানে আবার দাবি রাখি, যত দ্রুত সম্ভব যেন হিয়ারিংয়ের তারিখ জানানো হয় । তখন কর্তৃপক্ষ কিছু জানায়নি । বলেছিল, দেখছি । কমিটির সদস্যরা এখনও সেফ ফিল করছেন না ।"
ওই ছাত্রী আরও বলেন, "তারপরই শুরু হয়ে যায় পরীক্ষা। পরীক্ষার পরে গতকাল আবার ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণ কুমার মাইতির কাছে যাওয়া হয় । তিনিও বলেন,সদস্যরা এখনও নাকি সেফ ফিল করছেন না । এখনও কিছু জানাননি । তখন আমরা ডিন স্যারকে বলি, আমাদের সাথে এরকম করলে তো হবে না । আপনি হিয়ারিংয়ের তারিখ দিন । তিন মাসের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করতে হয় । সেখানে একমাস কেটে গেছে । এখনও পর্যন্ত কিছুই শুরু হয়নি । এই জুনে আমার স্টুডেন্টশিপও শেষ হয়ে যাবে । তখন উনি বলেন, আমাদের সঙ্গে কথা বলতে আসবেন । আমরা ওনার কথামতো বসে ছিলাম। কিন্তু, উনি কথা না বলেই বেরিয়ে যান । ঘরে তালা দিয়ে ওনার স্টাফরাও বেরিয়ে যান। তারপর থেকেই আমরা অবস্থানে বসি ডিন স্যারের ঘরে সামনে । আজকেও সারাদিনে কোনও রেসপন্স পাইনি । আর বাইরে থেকেও যাঁরা সমর্থন জানাতে আসতে চাইছিলেন তাঁদেরও ঢুকতে দিচ্ছে না ।"
যত দ্রুত সম্ভব অন্তত হিয়ারিংয়ের একটা তারিখ দিতে হবে । না দিলে অবস্থান চলবে বলে জানাচ্ছেন ওই ছাত্রী। তাঁর বক্তব্য, "আমরা অবস্থান চালিয়ে যাব যতক্ষণ না আমাদের কোনও ডেট দেন । বা কবে থেকে শুরু হবে প্রক্রিয়া, কতদিন লাগবে এইসব জানানো হয় । আমরা তো বলছি না, যে অভিযুক্ত তাঁকে এক্ষুনি বার করে দিন বা ওই রকম পদক্ষেপ করুন । আমরা তো বলছি একটা হিয়ারিং করুন । এটা তো করতেই হবে । এটা না করে তো কোনও সিদ্ধান্তেই পৌঁছানো যাবে না । আমরা সেটারই একটা তারিখ চাইছি । সেটাও ওনারা করতে প্রস্তুত নয় । সেটা যতক্ষণ না দেবে আমরা অবস্থান চালিয়ে যাব ।"