কলকাতা, 20 অক্টোবর: কেন্দ্রের 2013 সালের সংশোধিত জমি অধিগ্রহণ আইন মেনে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি ৷ সেই কারণে জাতীয় সড়কের জন্য অধিগৃহীত জমির দখলে স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ বিচারপতি বিবেক চৌধুরীর সিঙ্গল বেঞ্চ শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছে ৷ এই নির্দেশের ফলে মালদায় দু’টি জাতীয় সড়ক যুক্ত করার যে কাজ হচ্ছে, সে ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হল বলে মনে করছেন আইনজ্ঞরা ৷ বিচারপতি সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর জানিয়েছেন, কেন্দ্রের নতুন জমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী, জমিদাতাকে সব নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণ না দেওয়া পর্যন্ত জমির দখল নেওয়া যাবে না ৷
মালদার চাঁচলে 81 নম্বর জাতীয় সড়কে একটি বাইপাস তৈরির জন্য জমির অধিগ্রহণ শুরু করে কেন্দ্র ৷ সেই জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়ায় একটি ইটভাটাও তার আওতায় চলে আসে ৷ কিন্তু, অভিযোগ জাতীয় সড়ক বিভাগ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ক্ষেত্রে 1956 সালের পুরনো আইনকে হাতিয়ার করে ৷ তাতে আপত্তি জানিয়ে জাতীয় সড়ক বিভাগের বিরুদ্ধে শালিশী বা আরবিট্রেশনে যান ওই জমির মালিক আদর্শ কুমার ৷ কিন্তু, সেখানে কোন ফয়সালা হয়নি ৷ এর পর তিনি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন ৷
শুনানিতে তাঁর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী এবং অরিন্দম দাস অভিযোগ করেন, 2016 সালে ওই জমি অধিগ্রহণের জন্য নোটিশ দেওয়া হয় ৷ 2015 সালের জানুয়ারি মাসের পর থেকে অধিকৃত জমির জন্য 2013 সালের আইন মেনে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ৷ এক্ষেত্রে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সেই নির্দেশ মানেনি ৷ এমনকি ওই জমি যে বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করা হত, তার কোন উল্লেখ করা হয়নি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ৷
আরও পড়ুন: কাউন্সিলরের কান্না এজলাসে! বাড়ি ভাঙায় আপাতত স্থগিতাদেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের
নতুন আইনে জমি অধিগ্রহণ করতে হলে গ্রামীণ এলাকায় বাজার দরের তুলনায় চার গুণ এবং শহরের ক্ষেত্রে দ্বিগুণ দাম দেওয়ার কথা জমিদাতাকে ৷ একই সঙ্গে অধিগৃহীত জমির জন্য জমিদাতাকে বিকল্প জায়গায় বাসস্থান তৈরি করে দেওয়া উল্লেখ করা হয়েছে 2013 সালের সংশোধিত আইন অনুযায়ী ৷ বাস্তবে এর কোনটাই জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ মানেনি বলে অভিযোগ করা হয় আদালতে ৷
রাজ্যের কাজে জমি গ্রহণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের এই নতুন আইন না মানায়, কয়েক হাজার মামলা ঝুলে রয়েছে বিভিন্ন আদালতে ৷ এবার কেন্দ্রের জাতীয় সড়ক বিভাগও এখন সেই একই অভিযোগে অভিযুক্ত হল ৷