কলকাতা, 4 মে: 2024-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ করতে আগামী 12 জুন বিহারের পটনায় বৈঠক ডেকেছেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস, সিপিএম, কংগ্রেস-সহ বিজেপি বিরোধী প্রায় সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। কিন্তু সেই বৈঠকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির এক হওয়া এবং ভবিষ্যৎ পথ চলা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷
সূত্রের খবর, জাতীয় কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব মল্লিকার্জুন খাড়গে কিংবা রাহুল গান্ধি ওই বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব তৃণমূলের সঙ্গে এক আসনে বসতে নারাজ। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী, সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান থেকে শুরু করে প্রদেশ কংগ্রেসের একাধিক পদস্থ নেতা শাসকদল তৃণমূলের সঙ্গে কোনওরকম আপোষ করতে নারাজ। ফলে তাঁদের তরফে কেউ ওই বৈঠকে যোগ দেবেন কি না, সে বিষয়ে এখনও সংশয় রয়েছে। শুধু তাই নয়, ওই বৈঠকে কংগ্রেসের জাতীয় স্তরের কোনও নেতাকে পাঠানো নাও হতে পারে বলে দাবি এরাজ্যের এআইসিসি সদস্যদের কয়েকজনের ৷
কারণ, প্রদেশ নেতৃত্বের বক্তব্য, তাঁরা কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি তো বটেই রাজ্য তৃণমূলের বিরুদ্ধেও সর্বতোভাবে লড়াই করবে। কোনওভাবেই রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে হাত মেলাবে না। শাসকদলের বিরুদ্ধে চুরি, দুর্নীতি থেকে শুরু করে বিধায়ক ভাঙানোর তথা কংগ্রেস ভাঙার অভিযোগ রয়েছে ভুরি ভুরি। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তৃণমূলকে বিশ্বাস করা কোনওভাবে সম্ভব নয় বলে বিধান ভবন সূত্রের দাবি। প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, "এখনও একমাস যায়নি সাগরদিঘির বিধায়ক বাইরন বিশ্বাসকে প্রলোভন দেখিয়ে দলে নিয়েছে তৃণমূল।"
দিন কয়েক আগে বিধান ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনের অধীররঞ্জন চৌধুরীও কংগ্রেস ভাঙার অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অধীর সেদিন স্পষ্ট বলেছিলেন, "বাংলা বাদ দিয়ে যে সমস্ত জায়গায় তৃণমূল রাজনীতি করতে গিয়েছে সেখানে কংগ্রেসকে ভাঙিয়েছে। বিজেপির হয়ে কংগ্রেসকে ভাঙার দায়িত্ব নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের মানুষ জানে তৃণমূল কতটা চুরি, দুর্নীতি করছে। তৃণমূলের এই চুরি, দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং বিজেপির সম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই। সেটাই আমরা বজায় রাখব।"
আরও পড়ুন: রেলকে বেচে দেওয়ার ছক কষছে কেন্দ্র, বালাসোর বিপর্যয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত মমতা
শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকে শুরু করে জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে যে সমস্ত আন্দোলন সংঘটিত হচ্ছে সেখানে তৃণমূলের কোনও ভূমিকা নেই বলেই দাবি করছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। এমনকি তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে কংগ্রেস ভাঙানোর এবং বিজেপির হাত শক্ত করার তত্ত্ব দিল্লির কাছে জমা দিয়ে এসেছেন আব্দুল মান্নানরা। পটনার বৈঠকে তৃণমূল উপস্থিত থাকলে সেখানে কংগ্রেস জাতীয় উপস্থিত না হয় সেই অনুরোধও করে এসেছেন তিনি।