কলকাতা, 18 ডিসেম্বর: আইআইটি খড়গপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনার তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট কলকাতা হাইকোর্টে জমা দিল বিশেষ তদন্তকারী দল । সিটের রিপোর্ট দেখে বিস্মিত বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ।
তিনি আজ বলেন, "বিস্মিত হয়েছি রিপোর্ট দেখে ৷ যেখানে ছাত্রদের বক্তব্যের সঙ্গে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের কোনও মিল বা সূত্র নেই । তাঁরা যা বলেছেন, তার সঙ্গে মূল ঘটনার সরাসরি যোগও কিছু ক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে না ।"
মৃত ফাইজান আহমেদের আইফোনের কিছু হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পরীক্ষার জন্য সিএফএসএল চণ্ডীগড় পাঠানো হয়েছে বলে এ দিন জানিয়েছে রাজ্য । একইসঙ্গে, তারা জানায় যে, ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে কলকাতা সিএফএসএল-এ ।
রিপোর্ট দেখে অসন্তুষ্ট বিচারপতি বলেন, "কিন্তু আইআইটির যাঁদের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে, সেখানে মূল ঘটনা নিয়ে তো কিছুই নেই ।" কারণ রাজ্য জানায়, একাধিক ছাত্রকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে । সেখান থেকে জানা যাচ্ছে, মৃত ছাত্র অ্যামাজন থেকে দুটো রাসায়নিকের কনটেইনার কিনেছিলেন বলে এক ছাত্র জানিয়েছেন ।
মৃত ছাত্রের পরিবারের আইনজীবী রণজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "যে ছাত্র এই বয়ান দিয়েছেন, তিনি অসুস্থ হয়ে ওই সময় মেরঠের হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন । 20 জনের বয়ান নেওয়া হল । একমাত্র তিনিই এই কথা বলেছেন । আর তাঁর কথাকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ?"
বিচারপতি সেনগুপ্তর নির্দেশ, সিএফএসএল চণ্ডীগড়কে দ্রুত মোবাইলের তথ্য পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে হবে । একইসঙ্গে, কলকাতা সিএফএসএল অধিকর্তাকে ডিএনএ পরীক্ষার রিপোর্ট দ্রুত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । দুটি রিপোর্ট এক মাসের মধ্যে দিতে হবে সিটকে । 6 ফেব্রুয়ারি এই মামলার বিস্তারিত শুনানি করবে হাইকোর্ট । আগামী শুনানিতে সিটকে নতুন করে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্টও দিতে হবে ।
আইআইটি খড়গপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আইপিএস কে জয়রামনের নেতৃত্বে গঠিত সিটের রিপোর্ট দেখে এর আগের শুনানিতেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আদালত । বিচারপতি বলেছিলেন, "এতদিন ধরে একটা খুনের তদন্তে অযথা সময় নষ্ট হচ্ছে । এর মধ্যে তথ্য প্রমাণ লোপাট হতে পারে । এর দায় কে নেবে ! আইআইটি কেন আপত্তি করছে তাও অজানা ।"
উল্লেখ্য, আইআইটি খড়গপুর ইতিমধ্যে সিট গঠনের বিরুদ্ধে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছে । তাদের সুনাম নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ জানান আইআইটি খড়গপুর কর্তৃপক্ষ । তাঁর অভিযোগ, সংবাদমাধ্যমে নিরন্তর অপপ্রচার করা হচ্ছে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৷ যদিও প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সিটকে তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতেই নির্দেশ দিয়েছে ।
আরও পড়ুন: