কলকাতা, 8 জানুয়ারি: রাজভবনে শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী ৷ সোমবার বিকেলে প্রায় ঘণ্টাখানেক তাঁরা সেখানে ছিলেন ৷ বাইরে এসে এই সাক্ষাৎকারকে ‘সৌজন্যমূলক’ বলেই উল্লেখ করেছেন তাঁরা ৷ যদিও এই সাক্ষাতের বিষয়টি প্রকাশ্য়ে আসার পর থেকে যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা সোমবার সন্ধ্যার পরও শেষ হয়নি ৷
এ দিন বিকেল 4টে 33 মিনিট নাগাদ রাজভবনে প্রবেশ করেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির সাংসদ কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী ও তাঁর ছেলে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী । ঘণ্টাখানেক তাঁরা ছিলেন সেখানে ৷ বিকেল 5টা 30 মিনিট নাগাদ তাঁরা রাজভবন ছাড়েন ।
যাওয়ার আগে শিশির অধিকারী বলেন, "উনি (সিভি আনন্দ বোস) রাজ্যপাল হওয়ার পর সাক্ষাৎ হয়নি । উনি পূর্ব পরিচিত ছিলেন । অসুস্থতার কারণে এতদিন আসতে পারিনি । আজ এসেছি ৷ এর বাইরে কিছুই নয় ।" একই সঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, তাঁর এলাকায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজ্যপালকে ।
তার পরও প্রশ্ন থেকে গিয়েছে যে এই বৈঠক কি স্রেফ সৌজন্যমূলক ৷ কারণ, সিভি আনন্দ বোসের প্রায় এক বছরের মেয়াদে সেভাবে কোনও তৃণমূল সাংসদকে রাজভবনে সৌজন্য সাক্ষাতে যেতে দেখা যায়নি ৷ পুজোর পর অবশ্য তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ গিয়েছিলেন ৷ আর শাসক দলের প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একাধিকবার গিয়েছেন রাজভবনে ৷ কিন্তু পুরোটাই প্রশাসনিক কারণে ৷
তাই খাতায়-কলমে তৃণমূলের এই দুই সাংসদ হঠাৎ কেন সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে রাজভবনে পৌঁছে গেলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে ৷ ওয়াকিবহাল মহলের মতে, 2020 সালের ডিসেম্বরে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকে শিশির অধিকারী ও দিব্যেন্দু অধিকারী তৃণমূলে কার্যত থেকেও নেই ৷ 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনের সময় প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারীকে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে ।
তবে তিনি বিজেপিতে যোগ দেননি ৷ দিব্য়েন্দু অধিকারীকে যেমন তৃণমূলের কোনও অনুষ্ঠানে দেখা যায় না, তেমনই বিজেপির কোনও অনুষ্ঠানে তিনি কখনও যাননি ৷ কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠানে সাংসদ হিসেবে উপস্থিত থেকেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মঞ্চে উপস্থিত থেকেছেন ৷ কিন্তু তিনিও বিজেপিতে যোগ দেননি ৷
সামনেই লোকসভা নির্বাচন৷ দুই সাংসদের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে ৷ পরিস্থিতি যা, তাতে এই দু’জনের তৃণমূলের টিকিটে ভোটে লড়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই ৷ তাই কি তাঁরা এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন ? রাজ্যপালকে যেহেতু শাসক দল বরাবর ‘বিজেপির এজেন্ট’ হিসেবে কাঠগড়ায় তোলে, সেই কারণে রাজ্যপালের সঙ্গে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎ’ আসলে রাজনৈতিক বার্তা দিলেন শান্তিকুঞ্জের কর্তা ও তাঁর সেজ ছেলে ?
উত্তর মেলেনি৷ নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, হয়তো তত স্পষ্ট হবে এই সব প্রশ্নের উত্তর ৷ তাই শেষ পর্যন্ত কী হয়, তার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে ৷
আরও পড়ুন: